নিজে থেকেই সড়ক দুর্ঘটনা বুঝতে পারবে আইফোন, কল করবে উদ্ধারকারীদের
সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়লে পকেটে থাকা আইফোন তা বুঝতে পারবে এবং উদ্ধারের জন্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে জরুরি সেবাদাতার নম্বরে (যুক্তরাষ্ট্রে যেমন ৯১১) কল করবে। আগামী বছরের শুরুতে সুবিধাটি আইফোনে যুক্ত হতে পারে বলে জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল।
সে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী বছর ‘ক্র্যাশ ডিটেকশন’ নামের একটি সুবিধা আইফোন ও অ্যাপল ওয়াচে যুক্ত করার পরিকল্পনা করছে অ্যাপল ইনকরপোরেটেড। অভ্যন্তরীণ নথি পর্যালোচনার পাশাপাশি সে সুবিধা তৈরির সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে এমনটা জেনেছে দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল।
অ্যাপলের ডিভাইসগুলোতে যুক্ত সেন্সর থেকে তথ্য সংগ্রহ করে দুর্ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে তা শনাক্ত করা হবে। যেমন হঠাৎ মাধ্যাকর্ষণ বেড়ে যাওয়ার পেছনের কারণগুলোর একটি হতে পারে সড়ক দুর্ঘটনা।
মোশন-সেন্সর প্রযুক্তির সাহায্যে ব্যবহারকারীর জন্য সুরক্ষামূলক সুবিধা তৈরিতে বেশ কয়েক বছর ধরে মনোযোগী হয়েছে অ্যাপল ও এর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠানগুলো। বছর কয়েক আগে স্মার্টঘড়িতে ফল-ডিটেকশন বা পতন শনাক্তের সুবিধা যুক্ত করেছিল অ্যাপল। হাতে অ্যাপল ওয়াচ থাকা অবস্থায় কেউ যদি হঠাৎ পড়ে যায়, তবে স্মার্টঘড়িটি প্রথমে নোটিফিকেশন পাঠিয়ে জানতে চাইবে সবকিছু ঠিকঠাক আছে কি না। ব্যবহারকারী যদি সাড়া না দেন তবে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সেটি জরুরি সেবাদাতার নম্বরে কল করবে। সর্বশেষ আইফোনে কেউ ঠিকঠাক হাঁটতে পারছে কি না, তা শনাক্ত করার সুবিধাও যুক্ত করা হয়।
আইফোনের সম্ভাব্য নতুন সুবিধাটি যে আলোর মুখ দেখবেই, তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। আবার হতে পারে নির্ধারিত সময়ের পর কখনো তা আইফোনে যুক্ত হতে পারে। কারণ, পরীক্ষামূলক সব সুবিধাই শেষ পর্যন্ত ফোনে যুক্ত হয় না।
অ্যাপলের অভ্যন্তরীণ নথি থেকে জানা যায়, আইফোন ও অ্যাপল ওয়াচ ব্যবহারকারীদের তথ্য সংগ্রহ করে গত কয়েক বছর ধরেই ক্র্যাশ-ডিটেকশন সুবিধা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। এক কোটির বেশিবার দুর্ঘটনা হতে পারে বলে শনাক্ত করেছে অ্যাপলের পণ্য। এর মধ্যে ৫০ হাজারের বেশি ক্ষেত্রে ৯১১-এ কল করা হয়।
ক্র্যাশ-ডিটেকশন অ্যালগরিদমের উন্নয়নের জন্য ৯১১ কলের তথ্য ব্যবহার করছে অ্যাপল। কারণ, সম্ভাব্য দুর্ঘটনার সঙ্গে জরুরি নম্বরে কলের তথ্য মেলালে অ্যাপল বুঝতে পারবে কোনটি আসলেই দুর্ঘটনা আর কোনটি নয়। তবে অ্যাপলের পণ্য ব্যবহারকারীরা সে তথ্য কীভাবে শেয়ার করছে, তা পরিষ্কার করা হয়নি নথিতে।
অবশ্য ফোনে দুর্ঘটনা শনাক্তের সুবিধা যোগ করা প্রথম প্রতিষ্ঠান নয় অ্যাপল। পিক্সেল সিরিজের স্মার্টফোনে ২০১৯ সালে এমন সুবিধা যোগ করেছিল গুগল। অ্যাপলের অ্যাপ স্টোরের বেশ কিছু অ্যাপেও সে সুবিধা দেওয়ার দাবি করা হয়েছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং অবস্থান শনাক্তের মাধ্যমে অ্যাপগুলো সুবিধাটি দেয় বলে জানানো হয়।
জেনারেল মোটরসের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান অনস্টার ‘অটোমেটিক ক্র্যাশ রেসপন্স’ নামের সুবিধা দিয়ে আসছে ১৯৯৬ সাল থেকে। জেনারেল মোটরসের মুখপাত্রের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী মাসে ৬ হাজার দুর্ঘটনার তথ্য দিয়ে থাকে অনস্টারের প্রযুক্তি। প্রতিষ্ঠানটি সম্প্রতি নির্দিষ্ট ফির বিনিময়ে একটি অ্যাপ ছেড়েছে, যা ‘মোবাইল ক্র্যাশ রেসপন্স’ নামে পরিচিত।