এইচএসসি পরীক্ষার বিশেষ প্রস্তুতি-৪৮

বা ং লা ২ য় প ত্র

.

প্রশ্নোত্তর 
প্রিয় শিক্ষার্থীরা, আজ বাংলা ২য় পত্র থেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর দেওয়া হলো।
অনুসর্গ
প্রশ্ন: অনুসর্গ কাকে বলে? বাংলা ভাষায় অনুসর্গের প্রয়োজনীয়তা আছে কি?
উত্তর: বাংলা ভাষায় যে অব্যয় শব্দগুলো কখনো স্বাধীন পদরূপে আবার কখনো শব্দ বিভক্তির ন্যায় বাক্যে ব্যবহূত হয়ে বাক্যের অর্থ প্রকাশে সাহায্য করে সেগুলোকে অনুসর্গ বলে। যেমন—হতে, থেকে, চেয়ে, বিনা ইত্যাদি।
অনুসর্গের প্রয়োজনীয়তা: বাংলা ভাষায় অনুসর্গের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। ১। অনুসর্গ বিভক্তি রূপে ব্যবহূত হয়। যেমন—গাড়ি ঢাকা থেকে ছাড়ল। ২। অনুসর্গ বাক্য গঠনে সহায়তা করে। যেমন—দুঃখ বিনা সুখ লাভ হয় কি মহীতে।
উপরিউক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, বাংলা ভাষায় অনুসর্গ একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। কারণ এটা বাক্যের গঠন, বিন্যাস ও সুস্পষ্ট মধুরতায় সহায়তা করে।
প্রকৃতি ও প্রত্যয়
প্রশ্ন: প্রকৃতি কাকে বলে? প্রকৃতি কত প্রকার ও কী কী?

উত্তর: ক্রিয়া ও শব্দের মূলকে প্রকৃতি বলে। যেমন—খা, পড়, ঢাকা ইত্যাদি। প্রকৃতি দুই প্রকার। যথা:
ক) ক্রিয়া প্রকৃতি ও খ) নাম প্রকৃতি।
প্রশ্ন: প্রত্যয় কাকে বলে? প্রত্যয় কত প্রকার ও কী কী?
উত্তর: প্রকৃতির শেষে যেসব বর্ণ বা বর্ণসমষ্টি যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ গঠন করে, তাদের প্রত্যয় বলে। যেমন—চল+অন্ত = চলন্ত, ঢাকা+আই = ঢাকাই।
প্রত্যয় দুই প্রকার যথা: ১। কৃৎ প্রত্যয় ও ২। তদ্ধিত প্রত্যয়।
কৃৎ প্রত্যয়: ক্রিয়া প্রকৃতি বা ধাতুর শেষে যে প্রত্যয় যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ গঠন করে, তাকে কৃৎপ্রত্যয় বলে। যেমন—নাচ্+অন = নাচন।
তদ্ধিত প্রত্যয়: শব্দ বা নাম প্রকৃতির শেষে প্রত্যয় যুক্ত হয়ে যে নতুন শব্দ গঠন করে, তাকে তদ্ধিত প্রত্যয় বলে। যেমন—ঢাকা+আই = ঢাকাই।
প্রশ্ন: বাংলা ভাষায় প্রত্যয়ের প্রয়োজনীয়তা আছে কি?
উত্তর: বাংলা ভাষায় প্রত্যয়ের প্রয়োজনীয়তা: মানুষের ভাব প্রকাশের প্রধান ও সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হচ্ছে ভাষা। একমাত্র ভাষাই তার মনের কথাকে সুন্দর ও সম্পূর্ণ করে প্রকাশ করতে সক্ষম। আর এ কাজে ভাষাকে সাহায্য করে তার শব্দসম্ভার। সে জন্য যে ভাষার শব্দভান্ডার যত সমৃদ্ধ, সে ভাষার প্রকাশ ক্ষমতাও তত বেশি। বাংলা ভাষার শব্দ গঠনের যেসব পদ্ধতি বা নিয়ম আছে, প্রত্যয় তার মধ্যে অন্যতম। প্রকৃতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে প্রত্যয় প্রতিনিয়ত নতুন নতুন শব্দ সৃষ্টি করে বাংলা ভাষাকে সমৃদ্ধ করে চলেছে। যেমন—মিশ্-এর সঙ্গে ‘উক’ প্রত্যয় যুক্ত করলে গঠিত হবে ‘মিশুক’। এই নতুন শব্দটি, মেঘ শব্দের সঙ্গে ‘লা’ প্রত্যয় যোগ করলে পাওয়া যাবে ‘মেঘলা’ শব্দটি। এমনিভাবে কৃৎ ও তদ্ধিত প্রত্যয় দ্বারা নতুন নতুন শব্দ সৃষ্টি হয়ে বাংলা শব্দভান্ডারকে সমৃদ্ধ করে চলেছে। সুতরাং বাংলা ভাষায় প্রত্যয়ের প্রয়োজনীয়তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

সন্ধি
প্রশ্ন: সন্ধি বলতে কী বুঝ? সন্ধি কয় প্রকার ও কী কী? উদাহরণসহ আলোচনা করো।
উত্তর: পাশাপাশি দুটি ধ্বনি দ্রুত উচ্চারণকালে সম্পূর্ণ বা আংশিক মিলিত হয় অথবা একটি লোপ পায় কিংবা একটি অপরটির প্রভাবে পরিবর্তিত হয়, এরূপ পরিবর্তন, লোপ বা মিলনকে সন্ধি বলে। যেমন—
বিদ্যা+আলয় = বিদ্যালয়; গৈ+অক = গায়ক; নে+অন = নয়ন; ষট+আনন = ষড়ানন।
সন্ধির প্রভারভেদ: বাংলা ভাষায় সন্ধি তিন প্রকার। যেমন—
স্বরসন্ধি: স্বরধ্বনির সঙ্গে স্বরধ্বনির মিলনে স্বরসন্ধি হয়। যেমন—নর+অধম = নরাধম; শুভ+ইচ্ছা = শুভেচ্ছা।
ব্যঞ্জন সন্ধি: ব্যঞ্জন ধ্বনির সঙ্গে স্বরধ্বনি অথবা ব্যঞ্জন ধ্বনির সঙ্গে ব্যঞ্জন ধ্বনির মিলনে যে সন্ধি হয়, তাকে ব্যঞ্জন সন্ধি বলে। যেমন—তৎ+অন্ত = তদন্ত; সৎ+জন = সজ্জন।
বিসর্গ সন্ধি: বিসর্গের সঙ্গে স্বরবর্ণ বা ব্যঞ্জন বর্ণের মিলনে যে সন্ধি হয়, তাকে বিসর্গ সন্ধি বলে। যেমন—মনঃ+যোগ = মনোযোগ; পুনঃ+আয় = পুনরায়।
এ ছাড়া খাঁটি বাংলা সন্ধি আছে। যেমন— দিন+এক = দিনেক, আধা+উলি = আধুলি।
# পরবর্তী অংশ ছাপা হবে আগামীকাল