সে জানায়, তার স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও দুই বছর পর আমাকে বিয়ে করবে। সে অবশ্যই তার স্ত্রীকে রাজি করাবে

সারা যাকের
সারা যাকের

 আমি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করি। বিয়ে হয়েছে চার বছর। দেড় বছরের একটি মেয়ে আছে। কাজ শেষে বাসায় ফিরতে দেরি হয়। তাই বাচ্চার দেখাশোনার কথা বিবেচনা করে আমি স্বামীসহ মায়ের কাছেই থাকি। আমার স্বামীও ভালো চাকরি করে। কিন্তু বিয়ের পর থেকে আমার কোনো খরচ দেয় না। এমনকি নিজের খরচটুকুও সে দিতে চায় না। সে বলেছিল, আমি মায়ের কাছে থাকলে আমার কোনো খরচ দেবে না। তাই বেশ কিছুদিন আগে আলাদা বাসা নিয়েছিলাম। কিন্তু বাড়িভাড়া থেকে শুরু করে বাচ্চার খরচ, সবই আমাকে বহন করতে হতো। খরচ কুলাতে না পেরে আবার মায়ের কাছে চলে আসি। এ নিয়ে অনেক ঝগড়াঝাঁটি হয়েছে। কোনো কাজ হয়নি। ও আমাকে ছাড়তেও চায় না। খুবই অশান্তিতে আছি। ওর বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিতে পারি, জানালে উপকার হতো।
তুলি
বংশাল, ঢাকা।
এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে তোমার। কারণ, তোমার স্বামী বিয়ে যখন করেছেন, সন্তান যখন হয়েছে, তার দায়িত্ব তিনি উপেক্ষা করতে পারেন না। তুমি আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সাহায্য নিতে পারো। ফোন: ৮১২৬১৩৪, ৮১২৬১৩৭।
আমার বয়স ৫০। আমার একটি মেয়ে আছে। সে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। আমি একটি এনজিওতে চাকরি করি। আফিসের কাজ দক্ষতার সঙ্গে পালন করি। সাংসারিক কাজকর্মও সব ঠিকমতো করি। কিন্তু ব্যক্তিগত ভালো-মন্দ কোনো কথা কারও সঙ্গে ভাগ করে নিতে পারি না। যেকোনো কাজের বেলায় সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগি। কাজটি করব কি করব না, কাউকে বলব কি বলব না—নানা চিন্তা মাথায় চেপে বসে। কারও কাছ থেকে নিজের প্রাপ্য জিনিসটাও আদায় করতে পারি না। সুবিধা নিতে পারি না। আমার স্বামীও শক্তভাবে কিছু বলে না, আমার ওপর ছেড়ে দেয়। আমার বয়স বাড়ছে, স্মৃতিশক্তিও দিন দিন লোপ পাচ্ছে। মেয়ে বড় হয়েছে। আমার এ ধরনের সিদ্ধান্তহীনতার কারণে জীবনে অনেক ক্ষতি হয়েছে। এ ব্যাপারে আপনার পরামর্শ কাম্য। একমাত্র মেয়ের জন্য কী করণীয় আমার।

ইচ্ছা

নরসিংদী।

 নানা বিবেচনায় আপনি ভালো আছেন। আপনি একটা চাকরি করছেন। আপনাদের ছোট সংসার। স্বামী আপনার ওপর অনেক আস্থা রাখেন। তবে আপনার হয়তো দায়িত্বের পরিধিটা ছোট। হয়তো চাকরির ক্ষেত্রে বড় বড় সিদ্ধান্ত নিতে হয় না। সে জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে আপনার সে রকম অভিজ্ঞতা হয়নি। অনেক মানুষের এ রকম হয়। সিদ্ধান্ত নিতে সাতপাঁচ ভাবেন তাঁরা। যদি আপনি মনে করেন যে আপনার চলার পথে আপনার এই সিদ্ধান্তহীনতা বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। আপনি অবশ্যই একজন মনোবিজ্ঞানীর পরামর্শ নেবেন।

 আমি এ বছর মাধ্যমিকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছি। ২০১১ সাল থেকে আমি একটি ছেলেকে ভালোবাসি। সেও আমাকে ভালোবাসে। ২০১২ সালে  সে আমার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে আগ্রহী হয়। প্রথমে অনিচ্ছাকৃতভাবে হলেও আমি সম্মতি দিই। ওই বছরই সে অন্য একটি মেয়েকে পারিবারিকভাবে বিয়ে করে আমাকে না জানিয়ে। আমি জানতে পারি আমার মাধ্যমিক পরীক্ষার ঠিক ১৩ দিন আগে। সে জানায়, তার স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও দুই বছর পর আমাকে বিয়ে করবে। সে অবশ্যই তার স্ত্রীকে রাজি করাবে। তখন তার প্রথম স্ত্রীর একটি বাচ্চাও থাকবে বলে জানিয়েছে। আমার কি তাকে বিয়ে করা ঠিক হবে, যদি সে করতে চায়? আমি অনেক কষ্টে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছি। আমি নতুন করে পড়াশোনায় মন দিতে পারছি না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

খুলনা।

 স্মৃতি মুছে যায় না। তবে সুন্দর স্মৃতি হয়ে মানুষের মনে থেকে যায়। যদিও বা মনে হচ্ছে ছেলেটা অসত্ ও ধাপ্পাবাজ। তোমার কাছে তার সম্পর্ক ছিল মধুর। তাই সুন্দর স্মৃতিগুলো তোমারই থাকবে।

এসব ছেলেটার মেয়ে ভোলানো কথা বা আষাঢ়ে গল্প, বিশ্বাস করার মতো নয়। তুমি একটি বাচ্চা মেয়ে, তোমার বয়সের সুযোগ নিয়ে সে এই অবাস্তব গল্প বানাচ্ছে। তুমি এই সম্পর্ককে ধরে নাও তোমার জীবনের একটা স্মৃতি। তোমার সামনে অনেক পথ পড়ে আছে। তুমি ভালো ছাত্রী। তুমি এগিয়ে যাও। যদি একা না পারো, কোনো কাউন্সেলরের সাহায্য নিতে পারো। ঢাকার বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগাযোগ করলে তুমি সাহায্য পাবে।

আমার বয়স ২৬। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পরীক্ষা দিয়েছি। চার বছর যাবত্ একটি মেয়ের সঙ্গে আমার সম্পর্ক চলছে। হঠাত্ এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে আমার এক বন্ধুকে রক্ত দিতে যাই এবং সেখানে আমার রক্তে হেপাটাইটিস বি ভাইরাস পাওয়া যায়। তারপর আমি একজন চিকিত্সকের পরামর্শ নিই। তিনি বলেন, ‘আপনার কিছু ওষুধ খেতে হবে। আর বিয়ে করার আগে স্ত্রীকে টিকা দিয়ে দেবেন। আপনি স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারবেন। কিন্তু দেশের বাইরে যেতে পারবেন না।’

আমি এ বিষয়টি আমার ভালোবাসার মানুষের কাছে সম্পূর্ণ গোপন রাখি। সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, আমি যাকে ভালোবাসি, তার পরিবার আমাদের সম্পর্কটা এমনিতেই মেনে নিচ্ছে না, আবার যদি জানতে পারে আমার রক্তে হেপাটাইটিস বি ভাইরাস আছে, তারা তো আরও কঠিন হয়ে যাবে। এখন আমার ভয় নিজেকে নিয়ে নয়, আমার ভালোবাসার মানুষটিকে নিয়ে। তাকে বিয়ে করার পর যদি আমার সমস্যা থেকে তার কোনো রোগ বা সমস্যা হয়, তাহলে এটার জন্য আমি দায়ী থাকব। এ অবস্থায় আমি কি আমার ভালোবাসা বিসর্জন দেব?

নাম ও ঠিকানা প্রকাশে অনিচ্ছুক

 এ বিষয়টি নিয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকের সঙ্গে বিস্তারিত পরামর্শ করুন।

এমন অনেক সমস্যা আছে, যা কাউকে বলা যায় না। এ রকম প্রশ্নগুলোর উত্তর দেবেন সারা যাকের। সুবন্ধু সমীপেষু কলামে তারই সমাধান পাওয়া যাবে। এ বিভাগে চিঠি লিখুন সাদা কাগজের এক পিঠে সংক্ষেপে, ঠিকানাসহ। চিঠি পাঠানোর ঠিকানা:

সুবন্ধু সমীপেষুনকশাপ্রথম আলো

সিএ ভবন, ১০০ কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউ,

কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।

এ ছাড়া naksha@prothom-alo.info এই ঠিকানায়

ই-মেইল করেও সমস্যার কথা জানাতে পারেন।