অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা টিম কুক
অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা টিম কুক

অ্যাপল থেকে টিম কুকের বিদায়ের গুঞ্জন, কে হবেন নতুন সিইও

অ্যাপল কম্পিউটারের সহপ্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবসের পর ২০১১ সাল থেকে অ্যাপলকে বেশ ভালোভাবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন টিম কুক। তাঁর নেতৃত্বেই অ্যাপল প্রায় চার লাখ কোটি মার্কিন ডলারের প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। নিত্যনতুন প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনেও পিছিয়ে নেই প্রতিষ্ঠানটি। এ বছর টিম কুক ৬৫ বছরে পা দেবেন। ৬৫তম জন্মদিন ঘনিয়ে আসতেই টিম কুক অ্যাপলের দায়িত্ব ছাড়তে যাচ্ছেন বলে গুঞ্জন উঠেছে প্রযুক্তিবিশ্বে। শুধু তা–ই নয়, পরবর্তী প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কে হবেন, তা নিয়েও চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। অ্যাপলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে টিক কুকের কোনো উত্তরসূরির নাম এখনো প্রকাশ করা হয়নি। তবে টিক কুকের কোনো উত্তরসূরি হিসেবে অ্যাপলের বেশ কয়েকজন শীর্ষ নির্বাহীর নাম নিয়ে আলোচনায় হচ্ছে প্রযুক্তিবিশ্বে।

দীর্ঘদিন ধরেই টিম কুকের উত্তরসূরি হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে অ্যাপলের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) জেফ উইলিয়ামসকে। প্রায় এক দশক ধরে কুকের অন্যতম সহযোগী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। তার নেতৃত্বেই অ্যাপল ওয়াচ বাজারে বিপুল সাফল্য পেয়েছে। তবে ৬২ বছর বয়সী উইলিয়ামস গত জুলাইয়ে ঘোষণা দেন, আগামী বছর তিনি অবসর নেবেন। ফলে অ্যাপলের  ভেতরে হঠাৎ করেই এক শূন্যতা তৈরি হয়েছে।

ব্লুমবার্গের প্রযুক্তিবিষয়ক সাংবাদিক মার্ক গুরম্যানের ধারণা, অ্যাপলের পরবর্তী প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হওয়ার দৌড়ে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে এগিয়ে আছেন প্রতিষ্ঠানটির হার্ডওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের জ্যেষ্ঠ ভাইস প্রেসিডেন্ট জন টারনাস। ২০০১ সালে অ্যাপলে যোগ দেওয়া টারনাস দুই দশকের বেশি সময় ধরে প্রতিষ্ঠানটির বাজারে আনা প্রায় প্রতিটি বড় পণ্যের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত রয়েছেন। ৫০ বছর বয়সী টারনাস বর্তমানে অ্যাপলের চিপ তৈরির প্রকল্পে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বিশ্লেষকদের মতে, বয়স ও অভিজ্ঞতার এই মিশ্রণ টারনাসকে নেতৃত্বের ধারাবাহিকতার জন্য আদর্শ প্রার্থী করে তুলেছে। সম্প্রতি অ্যাপলের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) উদ্যোগ ‘অ্যাপল ইন্টেলিজেন্স’ প্রত্যাশিত সাড়া না পাওয়ায় প্রতিষ্ঠানটি এখন নতুন করে হার্ডওয়্যার কেন্দ্রিক উদ্ভাবনে মনোযোগ দিচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন পরিস্থিতিতে প্রযুক্তিগত অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তি অ্যাপলের পরবর্তী নেতৃত্বে দিতে পারেন। এই দৃষ্টিকোণ থেকে টারনাসই সবচেয়ে যোগ্য ব্যক্তি।

প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হওয়ার দৌড়ে টারনাস সবচেয়ে এগিয়ে থাকলেও আরও কয়েকজন কর্মকর্তার নাম আলোচনায় রয়েছে। তাদের মধ্যে একজন হচ্ছেন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের জ্যেষ্ঠ ভাইস প্রেসিডেন্ট ক্রেইগ ফেডেরিগি। ২০০৯ সাল থেকে অ্যাপলের সঙ্গে যুক্ত ফেডেরিগি নিয়মিতভাবে পণ্য উন্মোচন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকেন এবং প্রযুক্তিবিষয়ক উপস্থাপনায় তিনি পরিচিত মুখ।

এ ছাড়া অ্যাপলের বিপণন বিভাগের জ্যেষ্ঠ ভাইস প্রেসিডেন্ট গ্রেগ জসউইয়াকও সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। ১৯৮৭ সাল থেকে অ্যাপলের সঙ্গে যুক্ত জসউইয়াক আইফোন ও আইপ্যাড উন্মোচনের সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। যদিও তার প্রযুক্তিগত দক্ষতা তুলনামূলকভাবে কম, তবে প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক কৌশলগত দিক সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান থাকায় তাকে অনেকেই টিম কুকের বিকল্প হিসেবে দেখছেন।

সূত্র: ডেইলি মেইল