২০২৫ সালে বছরজুড়ে স্মার্টফোনের পাশাপাশি ল্যাপটপ, স্মার্টওয়াচ, গেমিং কনসোল, হেডফোন, ইয়ারবাড, ড্রোন, ক্যামেরা থেকে শুরু করে নানা ধরনের প্রযুক্তিপণ্য বাজারে এনেছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। এ বছর বাজারে আসা শতাধিক প্রযুক্তিপণ্যের কাজের ধরন ও সক্ষমতা পর্যালোচনা করে সেরা গ্যাজেটের তালিকা প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রযুক্তি ওয়েবসাইট এনগ্যাজেট। সেই তালিকা থেকে স্মার্টফোন, কম্পিউটার ও ল্যাপটপ ছাড়া উল্লেখযোগ্য ১০ গ্যাজেটের তথ্য দেখে নেওয়া যাক।
নকশায় বড় ধরনের পরিবর্তন না হলেও কার্যকারিতার দিক থেকে অন্য প্রতিষ্ঠানের তৈরি স্মার্টওয়াচের তুলনায় বেশ এগিয়ে রয়েছে অ্যাপল ওয়াচ সিরিজ ১১। দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি ব্যাকআপসহ স্মার্টওয়াচগুলোতে স্বাস্থ্যবিষয়ক একাধিক সুবিধা যুক্ত করা হয়েছে, যার মধ্যে উচ্চ রক্তচাপ শনাক্তকরণ নোটিফিকেশন অন্যতম। সফটওয়্যার অভিজ্ঞতা, স্বাস্থ্যবিষয়ক বিভিন্ন তথ্য জানার পাশাপাশি আইফোনের সঙ্গে সমন্বয়ের ক্ষেত্রে অ্যাপল ওয়াচ সিরিজ ১১ বেশ এগিয়ে রয়েছে।
মূল ধারণা ও নকশা অপরিবর্তিত থাকলেও গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা যুক্ত হয়েছে নিনটেনডো সুইচ ২ গেমিং হ্যান্ডহেল্ডে। ৭ দশমিক ৯ ইঞ্চি পর্দার উচ্চ রিফ্রেশ রেটযুক্ত দ্রুতগতির নিনটেনডো সুইচ ২–তে বাড়তি স্টোরেজ সুবিধাও রয়েছে। সবচেয়ে দৃশ্যমান পরিবর্তন এসেছে নতুন ম্যাগনেটিক অ্যাটাচমেন্ট সিস্টেমে। এটি কন্ট্রোলার চালু ও বন্ধ করাকে আরও সহজ ও নির্ভরযোগ্য করেছে।
ওয়্যারলেস হেডফোনের বাজারে সনির আধিপত্য নতুন নয়। তবে ডব্লিউএইচ ১০০০এক্সএম৬ সনির অন্য হেডফোনের মান ছাড়িয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে। নতুন এই মডেলে শব্দের মান উন্নত করার পাশাপাশি অ্যাকটিভ নয়েজ ক্যানসেলেশন সুবিধা আগের তুলনায় আরও শক্তিশালী করা হয়েছে। স্বয়ংক্রিয় শব্দ নিয়ন্ত্রণ, ডিএসইই আপস্কেলিংসহ একাধিক স্মার্ট ফিচার থাকায় ব্যবহারকারীরা নিজেদের প্রয়োজন অনুযায়ী শব্দের মান নির্ধারণ করতে পারেন। আর তাই সব দিক বিবেচনায় সবচেয়ে ভারসাম্যপূর্ণ ওয়্যারলেস হেডফোন হিসেবে সেরার স্বীকৃতি পেয়েছে সনির তৈরি হেডফোনটি।
এয়ারপডস প্রো ৩ মডেলে অ্যাকটিভ নয়েজ ক্যানসেলেশন প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার করেছে অ্যাপল। ফলে গান শোনার সময় বাইরের শব্দ কমানোর পাশাপাশি লাইভ ট্রান্সলেশন ও হেয়ারিং হেলথ সুবিধা সহজে ব্যবহার করা যায়। নতুন ফোমযুক্ত ইয়ারটিপ, নিখুঁত শব্দ ও একবার চার্জে দীর্ঘ সময় ব্যবহারের সুবিধা আগের সংস্করণের তুলনায় এই ইয়ারবাডকে আরও পরিণত করেছে।
ব্যক্তিগত ব্যবহারের ড্রোনের ক্ষেত্রে বছরজুড়ে সবচেয়ে বেশি প্রশংসা পেয়েছে ডিজেআই নিও ২ ড্রোন। আগের মডেলের তুলনায় এটি আরও টেকসই ও নিরাপদ। নতুন লাইডার এবং চারপাশে থাকা শক্তিশালী সেন্সরের কারণে বাধা শনাক্তকরণে ড্রোনটির সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। ফলে ভ্লগিং, হাইকিং, সাইক্লিং কিংবা স্কিইংয়ের মতো কার্যকলাপে অনুসরণকারী ড্রোন হিসেবে নিও ২ খুবই কার্যকর।
প্রযুক্তিগত সক্ষমতার বিচারে সনি এ১ টু বিশ্বের সেরা হাইব্রিড মিররলেস ক্যামেরা। ক্যামেরাটিতে রয়েছে ৫০ মেগাপিক্সেলের স্ট্যাকড সেন্সর, অত্যন্ত দ্রুতগতির অটোফোকাস এবং প্রতি সেকেন্ডে ৩০ ফ্রেমে ছবি ধারণের সক্ষমতা। ৮কে রেজল্যুশনে ভিডিও ধারণ এবং উন্নত ইনবডি স্ট্যাবিলাইজেশন–সুবিধা থাকায় ক্যামেরাটি পেশাদার ফটোগ্রাফার ও ভিডিওগ্রাফারদের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী।
স্মার্ট গ্লাস প্রযুক্তিকে আরও উন্নত করেছে দ্বিতীয় প্রজন্মের রে ব্যান মেটা। স্মার্ট গ্লাসটিতে রয়েছে উন্নত ক্যামেরা, ওপেন স্পিকার এবং মেটার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক সহকারী। ব্যাটারির সক্ষমতা ও ভিডিওর মান আগের তুলনায় উন্নত হওয়ায় দৈনন্দিন কাজে সহজেই ব্যবহার করা যায় স্মার্ট গ্লাসটি।
বড় কোনো পরিবর্তনের বদলে সূক্ষ্ম উন্নতির মাধ্যমে লজিটেক এমএক্স মাস্টার ৪ আগের চেয়ে আরও ব্যবহারবান্ধব হয়েছে। মাউসটিতে থাকা উন্নত স্ক্রল হুইল ও হ্যাপটিক ফিডব্যাক দীর্ঘ সময় কাজ করার অভিজ্ঞতাকে আরও স্বাচ্ছন্দ্যময় করে তোলে।
অ্যানকার ল্যাপটপ ব্যাটারি (২৫ হাজার এমএএইচ) বহনযোগ্য চার্জারের ধারণাকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করেছে। বিল্ট ইন ইউএসবি-সি কেবল ও দ্রুত চার্জিং সুবিধা থাকায় ভ্রমণকারীদের কাছে জনপ্রিয়তা পেয়েছে পাওয়ার ব্যাংকটি।
ঘরোয়া বিনোদনের ক্ষেত্রে অ্যানকার নেবুলা এক্স ১ আদর্শ প্রজেক্টর। ৪কে রেজল্যুশন, ডলবি ভিশন সমর্থন এবং উচ্চ উজ্জ্বলতার কারণে ঘরের ভেতরে কিংবা বাইরে দুই পরিবেশেই এটি মানসম্মত হোম থিয়েটারের অভিজ্ঞতা দেয়। সহজে বহনযোগ্য প্রজেক্টরটির ছবির উজ্জ্বলতা ও শব্দের মান খুবই উন্নত হওয়ায় ঘরে বসেই স্বচ্ছন্দে উন্নত রেজল্যুশনের সিনেমা বা ভিডিও দেখা যায়।
সূত্র: এনগ্যাজেট