প্রাকৃতিক তুষারমানবের দৃশ্য
প্রাকৃতিক তুষারমানবের দৃশ্য

মহাকাশ থেকে দেখা গেল প্রাকৃতিক তুষারমানবের অসাধারণ দৃশ্য

মহাকাশ থেকে পৃথিবীকে দেখলে মাঝেমধ্যেই এমন কিছু দৃশ্য চোখে পড়ে, যা দেখে মনে হয়—কোনো শিল্পী নিজ হাতে এঁকেছেন। সম্প্রতি নাসার আর্থ অবজারভেটরি তেমনি এক বিস্ময়কর ছবি প্রকাশ করেছে। রাশিয়ার সাইবেরিয়ার চুকচি পেনিনসুলার এক প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রাকৃতিকভাবে তৈরি হয়েছে এক বিশাল অবয়ব, যা দেখতে হুবহু শীতের আইকন স্নোম্যান বা তুষারমানবের মতো।

নাসার তথ্যমতে, গত ১৬ জুন ল্যান্ডস্যাট ৮ কৃত্রিম উপগ্রহের (স্যাটেলাইট) মাধ্যমে ছবিটি তোলা হয়েছে। সাইবেরিয়ার বিলিংস নামের একটি ছোট্ট জনপদের পাশে উপকূলীয় উপহ্রদ বা লেগুনগুলো বরফে জমে এমনভাবে বিন্যস্ত হয়েছে যে ওপর থেকে দেখলে একে পাঁচটি খণ্ডবিশিষ্ট একটি বিশাল তুষারমানব মনে হয়।

ছবিটির বিষয়ে নাসা জানিয়েছে, এটি কোনো মানুষের কারসাজি নয়। সাইবেরিয়ার এ অঞ্চলের মাটি বছরের অধিকাংশ সময় বরফে জমা থাকে। মাটির নিচে জমাট বাঁধা বরফের খাঁজ বা আইস ওয়েজ গ্রীষ্মের তাপে কিছুটা গলে গিয়ে নিচু এলাকা তৈরি করে, যাকে বলা হয় থার্মোকার্স্ট লেক। দীর্ঘ সময় ধরে বাতাস ও ঢেউয়ের প্রভাবে এই লেকগুলো এমনভাবে সজ্জিত হয়েছে, যা এই অনন্য আকৃতি ধারণ করেছে। অঞ্চলটি বছরের বেশির ভাগ সময় বরফের নিচে ঢাকা থাকলেও জুন মাসের মৃদু তাপে যখন বরফ গলতে শুরু করে, তখনই প্রকৃতির এই বিমূর্ত রূপ ফুটে ওঠে।

এই প্রাকৃতিক তুষারমানব লম্বায় প্রায় ২২ কিলোমিটার বা ১৪ মাইল। মজার ব্যাপার হলো, ২০২৫ সালে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকডসে নাম লেখানো বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানুষের তৈরি স্নোম্যানের চেয়ে এটি প্রায় ৬০০ গুণ বড়। এই অঞ্চলের নাম রাখা হয়েছে ব্রিটিশ নৌ কর্মকর্তা কমোডর জোসেফ বিলিংসের নামানুসারে, যিনি ১৭৯০ থেকে ১৭৯৪ সালের মধ্যে এই অঞ্চলে জরিপ চালিয়েছিলেন। সেই সময় চুকচি পেনিনসুলার দুর্গম পথে চলাচলের একমাত্র উপায় ছিল বলগা হরিণ বা রেইনডিয়ার টানা স্লেজ গাড়ি। স্থানীয় আদিবাসী চুকচি সম্প্রদায়ের মানুষেরা এই হরিণ পালনে ও স্লেজ চালনায় অত্যন্ত দক্ষ।

সূত্র: নাসা