ক্রিল
ক্রিল

যে প্রাণীর কারণে সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্র পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে

বিভিন্ন মহাসাগরজুড়ে ভেসে বেড়ানো ক্রিলের গড়ন অনেকটা ছোট চিংড়ির মতো। আকারে ছোট হলেও এই প্রাণী সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য রক্ষায় বেশ গুরুত্বপূর্ণ। রয়্যাল সোসাইটির বায়োলজি লেটার্সে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে, ক্রিলের খাদ্য গ্রহণের আচরণ বদলে যাচ্ছে। এতে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রও পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে।

তাসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী আনিতা বাটারলি ও তাঁর সহকর্মীদের চালানো গবেষণা ফলাফলে বলা হয়েছে, ক্রিলের খাদ্য গ্রহণের প্রক্রিয়া বেশ আলাদা। চলাচল সীমিত হয়ে গেলে এসব প্রাণী তাদের থোরাকোপড নামক অঙ্গ ব্যবহার করে খাবার সংগ্রহ করে। মুক্তভাবে সাঁতার কাটা ও স্থির পরিবেশে থাকা ক্রিলের আচরণ পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, মুক্ত ক্রিলের তুলনায় স্থির ক্রিলের থোরাকোপড অঙ্গ বেশি নাড়াচাড়া করে। প্রতি সেকেন্ডে ছয়বার পর্যন্ত অঙ্গ নাড়াতে পাড়ে, যা মুক্ত ক্রিলের গতির দ্বিগুণেরও বেশি। ফলে শারীরিক সীমাবদ্ধতার সময় ক্রিলের খাদ্য গ্রহণের দক্ষতা ও কৌশল বদলে যায়।

ক্রিলের খাদ্য গ্রহণের দক্ষতা ও কৌশলকে বেশ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা। তাঁদের মতে, তিমি, সিল, পেঙ্গুইন ও মাছের মতো প্রাণীর প্রাথমিক খাদ্য উৎস হিসেবে ক্রিল মহাসাগরের খাদ্য জালের ভিত্তি তৈরি করে। ক্রিলের খাদ্য গ্রহণে সামান্য পরিবর্তন সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রের মধ্য ব্যাপক প্রভাব তৈরি করতে পারে। ক্রিলের কারণে শিকারি প্রাণীর জনসংখ্যা ও সামগ্রিক বাস্তুতন্ত্রের স্থিতিশীলতা নষ্ট হতে পারে।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, মহাসাগরের পৃষ্ঠের কাছাকাছি ভাসমান অণুবীক্ষণিক ও উদ্ভিদসদৃশ জীব ফাইটোপ্লাঙ্কটন ক্রিলের খাদ্যের প্রধান উৎস। বৈশ্বিক উষ্ণায়ন সমুদ্রের স্রোত ও পুষ্টির চক্রকে ব্যাহত করছে। এতে ফাইটোপ্লাঙ্কটনের উপস্থিতি কমে যাচ্ছে। এতে ক্রিলের জীবনে পরিবর্তন আসছে।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া