পুরুষের চেয়ে নারী বেশি কথা বলে?

নারী না পুরুষ, কে বেশি কথা বলে, তা আজও নিশ্চিত করে জানা যায়নি। ছবি: ফাইল
নারী না পুরুষ, কে বেশি কথা বলে, তা আজও নিশ্চিত করে জানা যায়নি। ছবি: ফাইল

আলাপ-আলোচনায় পুরুষের চেয়ে নারীরা বেশি কথা বলে—এমন একটি কথা সমাজে প্রচলিত আছে।  কিন্তু আসলেই কি তাই?
২০০৬ সালে প্রকাশিত সান ফ্রানসিসকোর ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নায়ু-মনোবিজ্ঞানী লুয়ান ব্রিজেনডাইনের লেখা ‘দ্য ফিমেল ব্রেন’ নামের এক বইয়ে দাবি করা হয়েছে, নারীরা দিনে গড়ে ২০ হাজার শব্দ ব্যবহার করে। আর পুরুষেরা করে, সাত হাজার শব্দ। অর্থাত্ পুরুষের তুলনায় নারীরা বেশি কথা বলে।
গতকাল মঙ্গলবার বিবিসি অনলাইনে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, ওই বইয়ের সংশ্লিষ্ট তথ্যটি বিভিন্ন সময় ব্যাপকভাবে ব্যবহূত হয়েছে। ১৯৯৩ সালে বিয়ে-সংক্রান্ত একটি পুস্তিকায়ও একই ধরনের তথ্য পাওয়া যায়। কিন্তু নারী-পুরুষের কথা বলার তুলনামূলক পার্থক্যের এই সংখ্যা উপস্থাপনের ক্ষেত্রে জোরালো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেননি স্নায়ু-মনোবিজ্ঞানী ব্রিজেনডাইন। তাই তাঁর সরল স্বীকারোক্তি, পরের সংস্করণে বই থেকে ওই সংখ্যাটি সরিয়ে ফেলা হবে।
শিশুদের ওপর পরিচালিত ৭৩টি গবেষণার ফলাফল সমন্বয় করে মার্কিন গবেষকেরা দেখতে পান, দুই থেকে আড়াই বছর বয়সী ছেলেশিশুদের চেয়ে মেয়েশিশুরা বেশি কথা বলে। তবে এই পার্থক্য খুবই সামান্য। শিশুরা যখন তাদের মা-বাবার সঙ্গে কথা বলে, কেবল তখনই এই পার্থক্য দেখা যায়। বন্ধুদের সঙ্গে কথোপকথনের সময় তা দেখা যায় না।

ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানী ক্যাম্পেল লিপার তাঁর গবেষণায় কিশোর-কিশোরীদের কথা বলার ব্যবধানের ক্ষেত্রে খুবই কমই পার্থক্য দেখতে পান। তবে তাঁর গবেষণায় দেখা গেছে, ছেলেরাই বেশি কথা বলে।

নারী-পুরুষের কথোপকথন কায়দার ওপর পরিচালিত ৫৬টি গবেষণার পর্যালোচনার ভিত্তিতে ১৯৯৩ সালে প্রকাশিত একটি বইয়ে দেখা যায়, গবেষণাগুলোর মধ্যে দুটিতে বলা হয়েছে, পুরুষের চেয়ে নারী বেশি কথা বলে। অপরদিকে ৩৪টি গবেষণায় বলা হয়, নারীর চেয়ে পুরুষ বেশি কথা বলে।

বিভিন্ন সময়ে পরিচালিত গবেষণা থেকে নারী-পুরুষের কথা বলার হার সম্পর্কে ভিন্ন ভিন্ন ফল আসায় সর্বসম্মত কোনো  সিদ্ধান্তে আসা যায়নি।