Thank you for trying Sticky AMP!!

আধুনিক মানবের উৎপত্তি বতসোয়ানায়

আধুনিক মানবজাতির ‘আবাসস্থল’ হিসেবে বতসোয়ানার উত্তরাঞ্চলকে চিহ্নিত করেছেন বিজ্ঞানীরা। ছবি: রয়টার্স

আফ্রিকাকে মানবজাতির সূতিকাগার ধরা হয় দীর্ঘদিন থেকেই। তবে ঠিক আফ্রিকার কোথা থেকে মানবজাতির যাত্রা শুরু হয়, তা নিশ্চিত ছিল না। বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন গবেষণা করে সেই জায়গার সন্ধান পেয়েছেন। আধুনিক মানবজাতির ‘আবাসস্থল’ হিসেবে বতসোয়ানার উত্তরাঞ্চলকে চিহ্নিত করেছেন তাঁরা। নতুন একটি গবেষণায় এমন তথ্য পাওয়া গেছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রখ্যাত সাময়িকী ন্যাচার-এ গত সোমবার নতুন ওই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

গবেষকেরা বলেছেন, হোমো স্যাপিয়েন্সকে মানুষের আধুনিক প্রজাতি হিসেবে ধরা হয়। আর ওই প্রজাতির মানুষের যাত্রা শুরু হয়েছিল বৃহত্তর জামবেজি নদীর অববাহিকার দক্ষিণাঞ্চলে। সময়টা ছিল দুই লাখ বছর আগে। জামবেজি আফ্রিকার চতুর্থ বৃহত্তম নদী। এটি পড়েছে বতসোয়ানা এবং নামিবিয়া ও জিম্বাবুয়ের কিছু অংশে। নদীটির দক্ষিণে পড়েছে বতসোয়ানা। 

 প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই অঞ্চলে ৭০ হাজার বছর ধরে বেশ প্রভাব-প্রতিপত্তি নিয়েই বসবাস করে আসছিলেন আধুনিক মানবজাতির পূর্বপুরুষেরা। এরপর জলবায়ু পরিবর্তন তাঁদের আফ্রিকা ছাড়তে বাধ্য করে এবং ধীরে ধীরে তাঁরা ছড়িয়ে পড়েন সারা বিশ্বে।

এর আগের কিছু জীবাশ্ম নিয়ে গবেষণায় জানা যায়, আধুনিক মানবজাতির উৎপত্তি ঘটে পূর্ব আফ্রিকা থেকে। তবে ডিএনএ পরীক্ষা করে সম্পাদিত নতুন গবেষণায় মানবজাতির পূর্বপুরুষদের আবাসস্থল আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলে বলে নিশ্চিত করা হয়েছে। আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চল বতসোয়ানায় পড়েছে। অস্ট্রেলিয়ার সিডনির গারভান ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল রিসার্চ ও ইউনিভার্সিটি অব সিডনির গবেষক এবং গবেষণার প্রধান লেখক ভেনিসা হায়েস বলেন, ‘দীর্ঘকাল থেকেই নিশ্চিত ছিল যে প্রায় ২ লাখ বছর আগে আফ্রিকায় উৎপত্তিগতভাবে আধুনিক মানবজাতির যাত্রা শুরু হয়। তবে কোথা থেকে সেই যাত্রা শুরু হয় এবং সারা বিশ্বে কীভাবে তাঁরা ছড়িয়ে পড়েন, তা নিয়ে ছিল তুমুল বিতর্ক। এখন আধুনিক মানবজাতির আবাসস্থলের সেই নির্দিষ্ট জায়গাকে শনাক্ত করতে আমরা সক্ষম হয়েছি।’

গবেষণায় ওই এলাকাটিকে মাকজাদিকগাদি-ওগাভাঙ্গো হিসেবে বলা হয়েছে। ওই এলাকায় একটি প্রকাণ্ড হ্রদ ছিল। ওই হ্রদের কাছে ছিল তাদের আবাসস্থল। ওই হ্রদ ভিক্টোরিয়া হ্রদ বা লেক ভিক্টোরিয়ার চেয়ে দ্বিগুণ বড় ছিল।

আধুনিক মানবজাতির আবাসস্থল চিহ্নিত করতে বিজ্ঞানীরা প্রথমে বর্তমানে দক্ষিণ আফ্রিকা ও নামিবিয়ায় বসবাসরত খোইসান জাতিগোষ্ঠীর ২০০ লোকের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করেন। কারণ, এই জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে ডিএনএ শাখা ‘এলো’র প্রভাব অনেক বেশি রয়েছে। এরপর ২ লাখ বছর আগ থেকে এলোর বংশানুক্রম–সংবলিত জিনগত টাইমলাইনের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হয় তাঁদের ডিএনএ নমুনা। সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হয় ভৌগোলিক বিন্যাস, প্রত্নতাত্ত্বিক পরিবর্তন ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব। এরপরই নিশ্চিত হওয়া যায়, বতসোয়ানাতেই ছিল আধুনিক মানবজাতির উৎপত্তিস্থল।