চলমান বিক্ষোভ দমাতে দেশজুড়ে এর আগেই সেনা মোতায়েন করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। এবার সে সংখ্যা আরও বাড়িয়ে ২৫ হাজার করার কথা চিন্তা করছে কর্তৃপক্ষ। দেশটিতে আজ ষষ্ঠ দিনের মতো বিক্ষোভ চলছিল। বিক্ষোভের কারণে দেশটিতে খাদ্য ও জ্বলানিসংকট দেখা দেওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকার উৎপাদনে আঘাত হেনেছে বিক্ষোভ।
দক্ষিণ আফ্রিকার সরকারি হিসাবমতে, চলমান দাঙ্গা, বিক্ষোভ ও লুটপাটের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৭২ জন নিহত হয়েছে। এদিকে দেশটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিক্ষোভ ও লুটপাটের ঘটনায় ১ হাজার ৭০০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমাকে কারাগারে পাঠানোর প্রতিবাদে শুরু হওয়া বিক্ষোভ এখন সহিংসতায় রূপ নিয়েছে। সেখানকার প্রশাসন বলছে, বিভিন্ন অপরাধী এ পরিস্থিতিতে সুযোগ নিচ্ছে।
এদিকে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দক্ষিণ আফ্রিকার একটি পত্রিকা তাদের পত্রিকা ছাপানো বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। দ্য উইটনেস নামের পত্রিকাটি গতকাল বুধবার তাদের ওয়েবসাইটে এই ঘোষণা দেয়। পত্রিকাটি জ্যাকব জুমার প্রদেশ কাওয়াজুলু নাতালে বেশি পঠিত।
দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার বলছে, গতকাল দেশটিতে ২০৮টি লুটপাট ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি সামলাতে পাঁচ হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়। কিন্তু দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী নসিভিউই মাপিসা সংসদে ২৫ হাজার সেনা মোতায়েনের অনুরোধ জানান। দেশটিতে সেনা মোতায়েনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার শুধু প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাপোসার।
প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাপোসা চলমান পরিস্থিতিকে তাঁর দেশে ১৯৯০ সালের পর থেকে হওয়া সহিংসতাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জঘন্য বলে আখ্যা দেন। চলমান সহিংসতায় অগ্নিসংযোগ, মহাসড়ক অবরোধ, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও গুদাম ঘর লুটপাটের ঘটনা ঘটছে। বিশেষ করে এই পরিস্থিতি জ্যাকব জুমার নিজের প্রদেশ কাওয়াজুলু নাতালের প্রধান শহরগুলো থেকে শুরু করে ছোট শহরগুলোয়। একই অবস্থা বিরাজ করছে গুতেং প্রদেশেও।
১৫ মাসের কারাদণ্ডাদেশ পাওয়ার পর গত বুধবার পুলিশে ধরা দেন জ্যাকব জুমা (৭৯)। পরে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। আদালত অবমাননার দায়ে গত ২৯ জুন জুমাকে এই কারাদণ্ড দেন আদালত। ওই ঘটনার পর তাঁর নিজ প্রদেশ কাওয়াজুলু নাতালে বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়।