Thank you for trying Sticky AMP!!

বসকে হত্যার পর থাই সেনার নির্বিচার গুলি, নিহত ২০

নির্বিচারে গুলি চালিয়ে নিজের বসসহ ২০ জনকে হত্যা করেছেন থাই সেনা জাকরাফান্ত থোম্মা। ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

থাইল্যান্ডের কোরাত শহরে এক সেনা সদস্যের নির্বিচারে গুলির ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২০ জনে দাঁড়িয়েছে। নিহতদের মধ্যে আছেন ওই সেনা সদস্যের কমান্ডিং অফিসারও। নিজের বসকে হত্যা করে তাঁর অস্ত্র নিয়েই পালিয়ে গিয়েছিলেন জুনিয়র কর্মকর্তা জাকরাফান্ত থোম্মা। পরে শহরের একটি বৌদ্ধ মন্দির ও শপিং মলে গিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে বাকিদের হত্যা করেন। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল কংচিপ তন্ত্রভানিক ২০ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয় পত্রিকা ব্যাংকক পোস্টের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, শনিবার বিকেলে কোরাত শহরের সুয়াথাম ফিটাক সেনা শিবির থেকে এই ঘটনার সূত্রপাত। সেনা শিবিরের মধ্যেই কমান্ডিং অফিসার কর্নেল আনানথারোট ক্রাসেকে গুলি করে হত্যা করেন ৩২ বছর বয়সী থোম্মা। এরপর তাঁর অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে সেনা শিবির থেকে বেরিয়ে যান। বের হওয়ার আগে শিবির থেকে আরও কিছু অস্ত্র নিজের সঙ্গে নিয়ে যান।

হামলার পরপরই ওই সেনা সদস্যকে ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে নিজেদের ফেসবুক পেজে পোস্টার দিয়েছে থাই পুলিশ। প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ চান-ওচা পরিস্থিতির ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখছেন। নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি।

সরকারের এক মুখপাত্র ক্রিসানা পাত্তানাচারিওন বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, হামলাকারী একটি মেশিনগান দিয়ে নির্দোষ মানুষদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালান। অনেক মানুষ নিহত ও আহত হয়েছেন।

ঘটনার পর শহরবাসীকে ঘর থেকে বের না হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে থাই পুলিশ। ব্যাংকক পোস্ট জানিয়েছে, ওই সেনা সদস্য শপিং মলের ভেতরেই কয়েকজনকে জিম্মি করে রেখেছেন। তিনি নিজেও সেখানেই অবস্থান করছেন বলে ধারণা করছে পুলিশ।

এর আগে ঘটনার পরপর তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কংচিপ তন্ত্রভানিক বিবিসিকে জানান, হত্যাকাণ্ড ঘটানোর আগে কমান্ডিং অফিসারের কাছ থেকে পিস্তল ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যান থোম্মা। কিছুক্ষণ পর শহরের একটি বৌদ্ধ মন্দির ও শপিং মলে গিয়ে নির্বিচারে গুলি ছোড়েন। এতে ঘটনাস্থলেই ১২ জন নিহত হন। এ সময় আহত হন আরও অনেকে।

গুলিবর্ষণের পর গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে শপিং মলে আগুন লেগে যায়। ছবি: এএফপি

স্থানীয় গণমাধ্যমের ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, একটি শপিং মলের সামনে গাড়ি থেকে নামেন জাকরাফান্ত। তড়িঘড়ি করে গাড়ি থেকে নেমেই সামনে থাকা মানুষজন লক্ষ্য করে নির্বিচার গুলি শুরু করেন তিনি। এ সময় তাঁর গুলিতে শপিং মলের গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে আগুন ধরে যায়। কেন এমন কাণ্ড ঘটালেন ওই সেনা সদস্য, সেটি পরিষ্কার নয়।

হামলা চালানোর সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্টও দিয়েছেন জাকরাফান্ত। গুলিবর্ষণের পর এক পোস্টে তিনি জানতে চান, তাঁর এখন আত্মসমর্পণ করা উচিত কি না। এর আগে ফেসবুকে একটি পিস্তল ও তিনটি গুলির ছবি পোস্ট করে তিনি লেখেন, ‘এখন রোমাঞ্চিত হওয়ার সময়। কেউ মৃত্যু এড়াতে পারবে না।’ ফেসবুক কর্তৃপক্ষ তাঁর অ্যাকাউন্টটি আপাতত নিষ্ক্রিয় করে রেখেছে। নৃশংস এ ঘটনায় একটি বিবৃতিও দিয়েছে ফেসবুক। বিবৃতিতে তারা বলেছে, ‘এই ধরনের নৃশংস কাজ যারা করে, ফেসবুকে তাঁদের কোনো জায়গা নেই। নিহত ও আহতদের পরিবারের প্রতি আমরা সমবেদনা জানাই।’

আরও পড়ুন:

বসের পিস্তল ছিনিয়ে নিয়ে থাই সেনার নির্বিচার গুলি, নিহত ১২