Thank you for trying Sticky AMP!!

বিশ্বের ১৫৯ শহরে সংহতি সমাবেশ

মাসা আমিনির ছবি নিয়ে প্রবাসী ইরানি ও সমর্থকদের মিছিল। গতকাল ইরানের রোম শহরে

ইরানের তরুণী মাসা আমিনির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট বিক্ষোভের প্রতি সংহতি জানিয়েছেন প্রবাসী ইরানিরা। বিশ্বের বিভিন্ন শহরে প্রবাসী ইরানি ও তাঁদের সমর্থকেরা জড়ো হয়ে এ বিক্ষোভের সমর্থনে শামিল হয়েছেন। ইরানিয়ানস ফর জাস্টিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস গ্রুপ জানিয়েছে, অকল্যান্ড থেকে নিউইয়র্ক, সিউল থেকে জুরিখ পর্যন্ত বিশ্বের ১৫৯টি শহরে ইরানের বিক্ষোভের সমর্থনে শনিবার জড়ো হন প্রবাসীরা।

অস্ট্রেলিয়ার ব্রিসবেনে এমন একটি সমাবেশে হাজির হন হাজারো প্রবাসী ইরানি ও তাঁদের প্রতি সমর্থকেরা। তাঁরা মাতৃভূমির স্বাধীনতা দাবি করে আওয়াজ তোলেন, ‘আমাদের কণ্ঠস্বর হও’। টোকিওর সমাবেশে ইরানে বিক্ষোভকারী নারীদের ছবিসহ হাজির হন অনেকেই। কেউ কেউ নৈতিকতা পুলিশের হাতে নিহত মাসা আমিনির ছবি তুলে ধরেন।

এদিকে মাসা আমিনির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ইরানের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। নরওয়েভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর) বলছে, প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে চলা এ বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত ৮৩ জন নিহত হয়েছেন। ‘অনুপযুক্ত পোশাক’ পরিধান ও ঠিকমতো হিজাব না পরার অভিযোগে ১৩ সেপ্টেম্বর রাজধানী তেহরানে মাসাকে গ্রেপ্তার করে ইরানের নৈতিকতা পুলিশ। তিন দিন সংজ্ঞাহীন থাকার পর হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। তবে সরকারি ভাষ্যে মৃত্যুর সংখ্যা ৪১।

কুর্দিস্তানের সাক্কেজ শহরে রাস্তায় বিক্ষোভ এখনো চলছে। সেখানে বিক্ষোভকারীদের স্লোগান হচ্ছে, নারী, জীবন, স্বাধীনতা ও স্বৈরশাসকের মৃত্যু। দেশটিতে বিক্ষোভকারীদের ধরপাকড় অব্যাহত রয়েছে। বিক্ষোভে অংশ নেওয়ায় গ্রেপ্তার হওয়া শিক্ষার্থীদের মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবাদ চলছে।

Also Read: মাশার মৃত্যুতে ইরানে ৫০ শহরে বিক্ষোভ

তেহরানের বিশ্ববিদ্যালয়ে দাঙ্গা পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গতকাল রাজধানী তেহরানে ও মাশাদ শহরে বড় ধরনের বিক্ষোভের ভিডিও তুলে ধরা হয়েছে। সিস্তান-বেলুচিস্তান প্রদেশে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় ইসলামি বিপ্লবী গার্ডস বাহিনীর এক কর্নেলসহ ১৯ জন নিহত হয়েছেন। গত শুক্রবার এ ঘটনা ঘটে।

গত মাসের শুরুর দিকে ইরানের নীতি পুলিশের হেফাজতে কুর্দি তরুণী মাসা আমিনির মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় দেশটিতে চলমান ব্যাপক বিক্ষোভের সঙ্গে এই বন্দুকযুদ্ধের কোনো সম্পর্ক আছে কি না, তাৎক্ষণিকভাবে তা স্পষ্ট নয়। বন্দুকযুদ্ধের বিষয়ে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে আঞ্চলিক গভর্নর হোসেইন খিয়াবানি বলেন, ‘এই ঘটনায় ১৯ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ২০ জন।’ রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানায়, গোলাগুলিতে ইসলামি বিপ্লবী গার্ডস বাহিনীর প্রাদেশিক গোয়েন্দা কর্মকর্তা কর্নেল আলি মোসাভিও নিহত হয়েছেন। নিহত বাকিদের পরিচয় সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি।

সিস্তান-বেলুচিস্তান আফগানিস্তান ও পাকিস্তান সীমান্তবর্তী ইরানের একটি দারিদ্র্যপীড়িত প্রদেশ। মাদক কারবারিদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘাতের অন্যতম অঞ্চল এটি। পাশাপাশি সংখ্যালঘু বালুচ এবং সুন্নি মুসলিমদের চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গেও তাঁদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে থাকে।

এর আগে শুক্রবার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, বন্দুকধারীরা প্রাদেশিক রাজধানী জাহেদানের একটি থানায় হামলা চালালে নিরাপত্তা বাহিনী পাল্টা জবাব দেয়। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলা হয়, ওই গুলিবিনিময়ের ঘটনায় কয়েকজন পুলিশ সদস্যের পাশাপাশি পথচারীরাও আহত হন।

গতকাল ইরানের গোয়েন্দাবিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা নয়জন বিদেশি নাগরিককে আটক করেছে। এর মধ্যে ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, নেদারল্যান্ডস ও পোল্যান্ডের নাগরিক রয়েছেন। দাঙ্গা সৃষ্টিতে মদদ দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া বিরোধী দলের ২৫৬ সদস্য আটক হয়েছেন।

এদিকে ইরানের পক্ষ থেকে দেশজুড়ে বিক্ষোভের পেছনে বিদেশি শক্তিকে দায়ী করা হয়েছে।

Also Read: ইরানে বিক্ষোভ দমনে আরও কঠোর হওয়ার বার্তা প্রেসিডেন্টের

Also Read: ইরানে বিক্ষোভে নিহত বেড়ে ৭৬: আইএইচআর