মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মিনবিয়া শহরে গতকাল সোমবার সামরিক জান্তা বাহিনীর বোমা হামলায় অন্তত ২৩ রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৩৩ জন। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, কোনো ধরনের উসকানি ছাড়াই এই হামলা চালিয়েছে জান্তা বাহিনী।
আজ মঙ্গলবার মিয়ানমারের সংবাদপত্র দ্য ইরাবতির এক খবরে বলা হয়, গতকাল থারডার এলাকায় জান্তা বাহিনী যুদ্ধবিমান থেকে দুটি বোমা নিক্ষেপ করেছে। এতে ২৩ জন নিহত হন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে এক ধর্মীয় নেতা, তাঁর স্ত্রী ও বেশ কয়েকটি শিশু রয়েছে।
এক বাসিন্দা দ্য ইরাবতিকে বলেন, বিদ্রোহী আরাকান আর্মি (এএ) বোমা হামলায় আহত ১৮ রোহিঙ্গার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে। তুলনামূলক কম আহত আরও অন্তত ১৫ জনকে স্থানীয় ক্লিনিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
ওই বাসিন্দা বলেন, আহত ব্যক্তিদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বাকিদের অবস্থা স্থিতিশীল। মানুষ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।
থারডার এলাকায় প্রায় ৩০০ রোহিঙ্গা পরিবার বসবাস করে, যাদের জনসংখ্যা দুই হাজারের বেশি। বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের অনেকেই ওই এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন।
রোহিঙ্গা সমাজকর্মী নায় সান লিউইন বলেন, ‘মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অপকর্মের জন্য কখনো তাদের শাস্তি হয়নি। দায়মুক্তি পেয়ে এরা শুধু রোহিঙ্গাদের ওপরই দমন–পীড়ন করছে না, বরং অন্যান্য জাতিগোষ্ঠী মানুষের ওপরও দমন–পীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে। এই দায়মুক্তি তুলে নেওয়া না হলে তাদের অপরাধ কখনো বন্ধ হবে না।
এএ বিদ্রোহীরা গত ৬ ফেব্রুয়ারি মিনবিয়া শহর দখলের পর সামরিক জান্তা প্রায়ই সেখানে বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণ করছে।
রাখাইনের রাজধানী সিতওয়ের ঘাঁটি থেকে সামরিক জান্তা ৮ মার্চ স্থানীয় সময় বেলা ১১টার দিকে মিনবিয়ার দুটি এলাকায় গোলাবর্ষণ করে। ১৬ মার্চ জান্তা মিনবিয়ার একটি সরকারি বিদ্যালয়ে হামলা চালায়। এতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এ ছাড়া ১২ মার্চ জান্তা বাহিনীর আরেক হামলায় বেশ কয়েকজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন।
আরাকান আর্মির দখল করা অন্যান্য শহরেও সামরিক জান্তা প্রায়ই হামলা চালাচ্ছে। গত বছরের নভেম্বরে জান্তার বিরুদ্ধে অভিযান শুরুর পর রাখাইন রাজ্যের পাকতাউ, পোনাজিউন, ম্রাউক–ইউ, মিনবিয়া, মায়েবন, রাম্রি, রথেডং, কাইয়াকতাউ ও টং পাইউ লেটউই শহর এবং পাশের চিন রাজ্যের পালেতাওয়া শহর বিদ্রোহী গোষ্ঠী এএ দখল করেছে।