থাইল্যান্ডের নৌসীমার কাছে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বহনকারী একটি নৌকার পাশে ভিড়েছে থাইল্যান্ডের নৌবাহিনীর একটি নৌযান। কো লি-পে দ্বীপ, ২০১৫
থাইল্যান্ডের নৌসীমার কাছে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বহনকারী একটি নৌকার পাশে ভিড়েছে থাইল্যান্ডের নৌবাহিনীর একটি নৌযান। কো লি-পে দ্বীপ, ২০১৫

সাগরে দুই নৌকাডুবিতে চার শতাধিক রোহিঙ্গার মৃত্যুর আশঙ্কা করছে জাতিসংঘ

সাগরে ৯ ও ১০ মে দুই নৌকাডুবির ঘটনায় মিয়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের অন্তত ৪২৭ জন মারা যেতে পারেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। এ আশঙ্কা সঠিক হলে, তা হবে এই নিপীড়িত জনগোষ্ঠীর জন্য আরেকটি বড় প্রাণঘাতীর ঘটনা।

গতকাল শুক্রবার এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনারের (ইউএনএইচসিআর) কার্যালয় জানায়, যদি এ তথ্য নিশ্চিত হয়, তবে চলতি বছর রোহিঙ্গা শরণার্থী-সংশ্লিষ্ট সবচেয়ে প্রাণঘাতী সাগর দুর্ঘটনা হবে এটি।

‘চলতি মাসের শুরুতে মিয়ানমার উপকূলে দুটি নৌকাডুবির খবর নিয়ে জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন’, বলা হয় বিবৃতিতে। সংস্থাটি আরও জানায়, এ নৌকাডুবির প্রকৃত পারিপার্শ্বিক অবস্থা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে তারা এখনো কাজ করছে।

জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার বিবৃতিতে বলা হয়, নৌকাগুলোয় থাকা রোহিঙ্গারা হয় বাংলাদেশের কক্সবাজারের শরণার্থীশিবির ছেড়ে যাচ্ছিলেন কিংবা মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্য থেকে পালাচ্ছিলেন।

সংস্থার প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে, ৯ মে ২৬৭ জন যাত্রী বহনকারী একটি নৌকা ডুবে যায়। এর মধ্যে ৬৬ জন বেঁচে যান। ১০ মে ২৪৭ রোহিঙ্গা বহনকারী আরেকটি নৌকা উল্টে যায়। সেখানে মাত্র ২১ জন জীবিত উদ্ধার হন।

বিবৃতিতে বলা হয়, নৌকাগুলোয় থাকা রোহিঙ্গারা হয় বাংলাদেশের কক্সবাজারের শরণার্থীশিবির ছেড়ে যাচ্ছিলেন কিংবা মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্য থেকে পালাচ্ছিলেন।

এ দুই মর্মান্তিক খবর ‘রোহিঙ্গাদের চরম দুর্দশার একটি স্মারক এবং বাংলাদেশে শরণার্থীরা যে কঠিন পরিস্থিতিতে রয়েছেন, তার প্রতিফলন; যেহেতু মানবিক সহায়তা ক্রমেই কমে আসছে।’
—ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি, ইউএনএইচসিআরের হাইকমিশনার

মিয়ানমারে দশকের পর দশক নিপীড়নের শিকার রোহিঙ্গাদের হাজারো মানুষ প্রতিবছর প্রাণ বাঁচাতে ঝুঁকি নিয়ে দেশটি থেকে নাজুক নৌকায় সাগর পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া একটি পোস্টে ইউএনএইচসিআরের হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি বলেন, এ দুই মর্মান্তিক খবর ‘রোহিঙ্গাদের চরম দুর্দশার একটি স্মারক এবং বাংলাদেশে শরণার্থীরা যে কঠিন পরিস্থিতিতে রয়েছেন, তার প্রতিফলন; যেহেতু মানবিক সহায়তা ক্রমেই কমে আসছে।’

২০১৭ সালে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নৃশংস অভিযানের পর রাখাইন রাজ্য থেকে ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন।