অস্ট্রেলিয়ার সিডনিসহ বেশ কয়েকটি শহরে অভিবাসনবিরোধী বড় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সমাবেশের প্রতিবাদ করেছেন শরণার্থীবাদীরা। একই সময়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে র্যালি করেছেন তাঁরা। সব মিলিয়ে চতুর্দিকের উত্তেজনা সামলাতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে দেশটির পুলিশ বাহিনীকে।
স্থানীয় সময় রোববার দুপুরে সিডনির সেন্ট্রাল রেলওয়ে স্টেশনের কাছ থেকে অভিবাসনবিরোধী সমাবেশ শুরু হয়। বেলমোর পার্ক থেকে প্রায় এক কিলোমিটার হেঁটে ক্যাম্পারডাউনের ভিক্টোরিয়া পার্ক পর্যন্ত ‘মার্চ ফর অস্ট্রেলিয়া’–তে অংশ নেন বিক্ষোভকারীরা। এ সময় সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা অস্ট্রেলিয়ার পতাকা হাতে নিয়ে অভিবাসীদের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন।
সমাবেশ ঘিরে আগে থেকেই উত্তেজনা বিরাজ করছিল। আয়োজকেরা শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদী গোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পর্কের কথা অস্বীকার করলেও সমাবেশে একটি কট্টর নব্য নাৎসি গোষ্ঠীর সরব উপস্থিতি বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। তারা সমাবেশে নাৎসি স্লোগান দেয় এবং বর্ণবাদী প্রচারপত্র বিলি করে। এ সময় ‘তাদের ফেরত পাঠাও’ স্লোগান দেয় তারা।
সমাবেশের অন্যতম আয়োজক নিজেকে ‘বেক ফ্রিডম’ নামে পরিচয় দেন। তিনি বলেন, অস্ট্রেলিয়া দ্রুত পেছনের দিকে যাচ্ছে। সমাবেশের আগে তিনি শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদী গোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছিলেন। কিন্তু এখন একদল নব্য নাৎসির মঞ্চে ওঠার সুযোগ দেওয়ায় তাঁর ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে।
এই বর্ণবাদী সমাবেশের নিন্দা জানিয়ে অস্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টনি বার্ক বলেন, ‘যারা আমাদের সমাজে বিভেদ তৈরি করতে চায় এবং সামাজিক সম্প্রীতি নষ্ট করতে চায় তাদের জন্য অস্ট্রেলিয়ায় কোনো স্থান নেই।’ তিনি এই সমাবেশকে অস্ট্রেলিয়ার মূল চেতনার পরিপন্থী বলে আখ্যা দেন।
সিডনি ছাড়াও অস্ট্রেলিয়ার অন্যান্য বড় শহর—মেলবোর্ন, ব্রিসবেন, ক্যানবেরা, পার্থ, অ্যাডিলেড, হোবার্ট এবং ডারউইনেও একই ধরনের অভিবাসনবিরোধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এসব সমাবেশের প্রতিক্রিয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই নিজেদের মতামত জানিয়েছেন। সিডনিপ্রবাসী বাংলাদেশি মোস্তাফা আবদুল্লাহ বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়া আর কী পরিচয় দাবি করতে পারে “অভিবাসী জাতি” ছাড়া? আজকের অস্ট্রেলিয়া গড়ে উঠেছে অভিবাসী ও এই ভূমির প্রথাগত অধিবাসীদের সম্মিলিত অবদানে।’
রোববার সকালে সিডনিতে ৩৫ হাজারের বেশি দৌড়বিদের অংশগ্রহণে মর্যাদাপূর্ণ সিডনি ম্যারাথন অনুষ্ঠিত হয়। একই সময়ে শরণার্থীবাদীদের সংগঠন ‘রিফিউজি অ্যাকশন কোয়ালিশন’ এবং ‘প্যালেস্টাইন অ্যাকশন গ্রুপ’-এর আয়োজনে অভিবাসনবিরোধী পাল্টা প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।