নিকট ভবিষ্যতেই হয়তো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) একেবারে মানুষের মতো কাজ করতে সক্ষম হয়ে উঠবে, যে প্রযুক্তিকে আর্টিফিশিয়াল জেনারেল ইনটেলিজেন্স বা এজিআই বলা হচ্ছে। কত দিনে এই এজিআই আমরা দেখতে পাব, তা এখনো নিশ্চিত না হলেও মানবাকৃতির রোবট প্রযুক্তিতে দারুণ এক সংযোজন এনেছে চীন। এবার চীনের তৈরি একটি মানবাকৃতির রোবট পিএইচডি প্রোগ্রামে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। রোবটটির নাম ‘সুয়েবা ০১’।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোবটটি বানিয়েছে ইউনিভার্সিটি অব সাংহাই ফর সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ও ড্রয়েডআপ রোবোটিকস।
সাংহাই থিয়েটার একাডেমি (এসটিএ) সুয়েবা ০১-এর নাটক ও চলচ্চিত্র বিষয়ে চার বছরের পিএইচডি প্রোগ্রামে ভর্তির আবেদন গ্রহণ করেছে। এর মধ্য দিয়ে এই প্রথম কোনো মেশিন পিএইচডি শিক্ষার্থী হওয়ার সুযোগ পেল।
গত ২৭ জুলাই সাংহাইয়ে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স সম্মেলনের দিন আনুষ্ঠানিকভাবে রোবটটির আবেদন গ্রহণ করে সাংহাই থিয়েটার একাডেমি। সেটি চীনা ঐতিহ্যবাহী অপেরার ওপর গবেষণা করবে।
সুয়েবা ০১-এর উচ্চতা ১ দশমিক ৭৫ মিটার, ওজন প্রায় ৩০ কেজি। মানুষের মতোই তার মুখাবয়ব। সেটির সিলিকনে তৈরি চামড়ায় ফুটে ওঠে আবেগ ও অভিব্যক্তি। সে শুধু হাঁটাচলাই জানে না, মানুষের সঙ্গে মুখোমুখি কথাও বলতে পারে।
এর আগের সংস্করণটি বিশ্বের প্রথম হিউম্যানয়েড হাফ-ম্যারাথনে তৃতীয় স্থান পেয়েছিল। আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর রোবটটি ক্যাম্পাসে হাজির হয়ে প্রশাসনিক কাজকর্ম শেষে শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত হবে। অন্য পিএইচডি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে করবে মঞ্চনাটকের মহড়া, অংশ নেবে থিসিস রচনায়।
শুধু অভিনয় নয়, সুয়েবা ০১ শিখবে মঞ্চসজ্জা, চিত্রনাট্য লেখা, শরীরের গতিনিয়ন্ত্রণ, ভাষা উৎপাদনের মতো প্রযুক্তিনির্ভর জটিল বিষয়ও। রোবটটিকে এরই মধ্যে একটি ভার্চ্যুয়াল শিক্ষার্থী আইডি দেওয়া হয়েছে, আর তার পরামর্শক হবেন খ্যাতনামা সাংহাই শিল্পী ও অধ্যাপক ইয়াং ছিংছিং।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রোবটের পিএইচডি ছাত্র হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। কেউ লিখেছেন, ‘এবার শিক্ষার্থীদের জায়গা রোবট নেবে!’ আরেকজনের মন্তব্য, ‘শিল্প তো জীবনের অভিজ্ঞতা চায়—রোবট কি সেটা জানে?’
আর এক সমালোচক ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘চীনে কলা অনুষদের পিএইচডি শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ এখনো মাসে ৩ হাজার ইউয়ানের (৪২০ মার্কিন ডলার) কম পান। তাহলে কি এই রোবট শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ সম্পদে ভাগ বসাতে চলেছে?’