কানাডার অন্টারিওতে একটি হাইস্কুলে মেরামতকাজ চলছিল। নির্মাণশ্রমিকেরা স্কুলের একটি শৌচাগারে কাজ করার সময় দেয়ালের পেছনে এমন একটি জিনিস খুঁজে পান, যেটির জন্য তাঁরা মোটেও প্রস্তুত ছিলেন না।
অন্টারিওর স্টোনি ক্রিকের ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির নাম অরচার্ড পার্ক সেকেন্ডারি স্কুল। এই স্কুলের তত্ত্বাবধায়ক লর্না ম্যাককুইন বলেন, মেরামতকাজ করতে ২৬ আগস্ট শ্রমিকেরা একটি শৌচাগার ভেঙে ফেলেন। তখনই তাঁরা ভাঙা দেয়ালের চিপায় আটকে থাকা একটি ওয়ালেট দেখতে পান। পরে তাঁরা সেটি টেনে বের করেন।
ওয়ালেটের ভেতরে থাকা কাগজপত্র ঘেঁটে দেখতে পান, সেটির মালিক টম শপ্ফ। ১৯৭৪ সালে তিনি এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র ছিলেন, সে সময় তাঁর বয়স ছিল ১৭ বছর।
ওয়ালেটের ভেতরে তাঁর শিক্ষার্থী আইডি, ড্রাইভিং লাইসেন্স, একটি সোশ্যাল ইনস্যুরেন্স কার্ড, পরিবার ও বন্ধুদের ছবি, ট্রেনের ট্রানজিট পাস, কানাডার একটি মদ প্রস্তুতকারক কোম্পানির মূল্য তালিকা এবং হকি ম্যাচের ৩৫ সেন্টের টিকিট পাওয়া যায়।
ম্যাককুইন বলেন, ‘আমাদের জন্মের আগের এমন কিছু খুঁজে পাওয়া সত্যিই মজার ব্যাপার।’
ম্যাককুইন আরও বলেন, ‘আমরা ভাবলাম, এই ব্যক্তিকে খুঁজে বের করে যদি তাঁকে এটা ফেরত দিই, তবে কেমন হয়। ৫১ বছর পর তিনি নিশ্চয়ই এটা ফেরত পেতে চাইবেন।’
যেমন ভাবনা, তেমন কাজ। তাঁরা অনলাইনে টম শপ্ফের খোঁজ শুরু করেন—এ যেন খড়ের গাদায় সুই খোঁজা।
তবে শেষ পর্যন্ত ম্যাককুইনদের চেষ্টা ব্যর্থ হয়নি। ফেসবুকে তাঁরা খুঁজে বের করেন টম শপ্ফকে। এখন তাঁর বয়স ৬৭ বছর।
টম শপ্ফ বলেন, শুরুতে তিনি ভেবেছিলেন কেউ তাঁর সঙ্গে মজা করছেন। কারণ, তাঁরা বলেছিলেন, তাঁরা সেটির ভেতর একটি সোশ্যাল ইনস্যুরেন্স কার্ড আর একটি জন্মসনদ পেয়েছেন।
শপ্ফ আরও বলেন, ‘কিন্তু এ দুটো কাগজ তো আমার কাছেই আছে। তবে কিছুক্ষণ ভাবার পর আমার মনে পড়ল, আমি তো কোনো এক সময় এগুলো নবায়ন করেছিলাম। তখন মনে হলো, ঠিক আছে, স্কুলে গিয়ে বিষয়টা দেখে আসা যাক।’
২৯ আগস্ট বিকেলে স্কুলে গিয়ে শপ্ফ আবিষ্কার করেন, সেটি তাঁরই ওয়ালেট। হারিয়ে গেছে ভেবে যেটির কথা তিনি একেবারে ভুলে গিয়েছিলেন।
শপ্ফ বলেন, ওয়ালেটের ভেতরে থাকা জিনিসপত্র ঘাঁটতে ঘাঁটতে তিনি ফিরে গিয়েছিলেন অতীতে। শৈশবে তিনি যে বাড়িতে থাকতেন, সেই বাড়ির একটি ছবিও তিনি ওয়ালেটে পেয়েছেন।