বিখ্যাত আইফেল টাওয়ারের সামনে, সমুদ্রসৈকতের নরম বালুতে হাঁটু গেড়ে বা প্রিয় কোনো রেস্তোরাঁর নিরিবিলি কোণে—প্রিয় মানুষটিকে বিয়ের প্রস্তাব দিতে আমরা মনে মনে এমন একটি স্থানের বা দৃশ্যের কল্পনা করি। কিন্তু রাশিয়ার এক সাংবাদিক এ সবকিছুর মধ্যে যাননি; বরং তিনি প্রেমিকাকে বিয়ের প্রস্তাব দিতে বেছে নিয়েছেন একেবারেই ভিন্ন একটি মঞ্চ।
ওই তরুণ সাংবাদিক প্রেমিকাকে বিয়ের প্রস্তাব দিতে বেছে নেন ‘পুতিনস টিভি ম্যারাথন’কে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন প্রতিবছর নিয়ম করে টেলিভিশনে একটি বার্ষিক ভাষণ দেন। এটি তাঁর বছরের শেষ ভাষণ হয়, যা দেশজুড়ে টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয়। কয়েক ঘণ্টা ধরে এই সংবাদ সম্মেলন চলে, এ কারণে এটির নাম ‘পুতিনস টিভি ম্যারাথন’।
পুতিনের ভাষণ তখন মাঝপথে। ইউক্রেন যুদ্ধ ও নিজের পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে প্রেসিডেন্ট যখন দৃঢ় কণ্ঠে বক্তব্য দিচ্ছেন, ঠিক তখনই অপ্রত্যাশিত ঘটনাটি ঘটে। স্থানীয় সাংবাদিক কিরিল বাজানভ লাল বো টাই পরে হাজির হন, হাতে একটি পোস্টার, তাতে লেখা, ‘আমি বিয়ে করতে চাই।’
রাশিয়ার দীর্ঘদিনের শাসক পুতিনের নজর কাড়তে বাজানভের খুব বেশি সময় লাগেনি। পুতিন তাঁকে কথা বলার সুযোগ দেন। মাইক্রোফোন হাতে নিয়েই এই সাংবাদিক বলে ওঠেন, ‘আমি জানি, আমার বান্ধবীও এখন এই সংবাদ সম্মেলন দেখছেন। ওলেচকা, আমাকে বিয়ে করবে?’
বাজানভের এই কথার সঙ্গে সঙ্গেই হলভর্তি সাংবাদিকেরা হাততালি দিয়ে ওঠেন।
বাজানভ অবশ্য ব্যক্তিগত আবেগ প্রকাশের মধ্যেই থেমে থাকেননি। প্রেমিকাকে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়ার পর তিনি রাশিয়ায় জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়া নিয়েও প্রশ্ন করেন।
তবে বিয়ের প্রস্তাবের উত্তর পেতে তাঁকে এক ঘণ্টার বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে। অবশ্য শেষমেশ অনুষ্ঠান সঞ্চালকেরা তাঁকে সুখবরই দেন। প্রেসিডেন্ট পুতিন নিজের বক্তব্য থামিয়ে বলেন, ওলেচকা ‘হ্যাঁ’ বলেছেন। আবারও হলজুড়ে উচ্ছ্বাস আর করতালির ঝড় ওঠে। পুতিনকে বিয়েতে আমন্ত্রণ জানানো হয়।
পুতিন বিয়ের আমন্ত্রণে সাড়া না দিলেও মজা করে বলেন, নতুন দম্পতির জন্য তহবিল তোলার ব্যবস্থা করা যেতেই পারে। পুতিন বলে ওঠেন, ‘একজন পুরুষকে তো পরিবারের ভরণপোষণের দায়িত্ব নিতে হয়। চলুন, অন্তত বিয়ের খরচ জোগাড় করা যাক।’