Thank you for trying Sticky AMP!!

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের সিন্দুকে যা ছিল

পণ্ডিত বিদ্যাসাগরের সিন্দুক। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বিধবা বিবাহ চালুর পাশাপাশি বিধবা ভাতাও চালু করেছিলেন। বিদ্যাসাগরের চালু করা মুক্তাকেশী দেবী উইডো ফান্ডের নথি মিলেছে কলকাতার সংস্কৃত কলেজের সিন্দুক থেকে। গতকাল শুক্রবার চার ঘণ্টার চেষ্টায় ওই সিন্দুকের তালা ভাঙেন এক কারিগর। এরপর সেই সিন্দুকে পাওয়া গেছে প্রচুর ঐতিহাসিক দলিল-দস্তাবেজ।

পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের সিন্দুকে কী আছে, তা এত দিন অজ্ঞাতই ছিল কলকাতার সংস্কৃতি কলেজের কর্মকর্তাদের। ঈশ্বরচন্দ্র ছিলেন কলকাতার সংস্কৃত কলেজের এক সময়ের ছাত্র। ছিলেন এই কলেজের অধ্যক্ষও। এখন কলকাতার সংস্কৃত কলেজ উন্নীত হয়েছে সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে। কলেজের দুটি সিন্দুক ছিল বিদ্যাসাগরের কাছে। বিদ্যাসাগরের মৃত্যুর পর ওই দুটি সিন্দুক আর কেউ খোলেননি। লন্ডনের চাবস কোম্পানির নির্মিত সিন্দুকের ঠাঁই হয় কলেজের গুদামে। একটি ছিল দেয়াল সিন্দুক। সেটিও বন্ধ ছিল।

কলকাতার সংস্কৃত কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮২৪ সালে। কলেজের জন্মের চার বছর আগে ১৮২০ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম মেদিনীপুরের বীরসিংহ গ্রামে জন্মেছিলেন বিদ্যাসাগর। তিনি মৃত্যুবরণ করেন ১৮৯১ সালের ২৯ জুলাই। পশ্চিমবঙ্গজুড়ে পালিত হচ্ছে পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের দ্বিশত জন্মবর্ষ। জন্মবর্ষেই সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয় উদ্যোগ নেয় বিদ্যাসাগরের স্মৃতিবাহী সিন্দুক দুটি খোলার।

সিন্দুকে নানা নথির পাশাপাশি পাওয়া গেছে তিনটি রুপার পদক। তার মধ্যে দুটি গঙ্গা মণি দেবী পদক এবং একটি এ এন মুখার্জি পদক। সে সময় সংস্কৃত এবং প্রেসিডেন্সি কলেজের সংস্কৃতিতে প্রথম স্থান অধিকারীকে দেওয়া হতো এই পদক। আর পদক দেওয়া হতো ইংরেজি ভাষায় সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপককে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সোমা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিকদের বলেন, নথি থেকে জানা গেছে, ওই সময় স্বামীহারা বিধবারা ওই তহবিল থেকে ২ টাকা হারে মাসিক ভাতা পেতেন। দেখা যায় ৮ বিধবার অর্থ গ্রহণের প্রাপ্তি স্বীকার করার খাতাও। সেখানে দুই বিধবা সই করে আর ছয়জন টিপ সই দিয়ে নিয়েছেন ওই অর্থ।

সিন্দুকে সিলগালা করা সাতটি খাম পাওয়া গেছে। এগুলো এখনো খোলা হয়নি। এগুলো দলিল দস্তাবেজ বলে ধারণা করা হচ্ছে।

দেয়াল সিন্দুকে পাওয়া গেছে ৮৫টি পাসবই। এগুলো ডাকঘরের। ওই ডাকঘর থেকে দেওয়া হতো মেধা বৃত্তির টাকা। মিলেছে ১৮২৯ থেকে ১৮৩২ সালের ছাত্রদের হাজিরা খাতা। সেই হাজিরা খাতায় নাম পাওয়া গেছে বিদ্যাসাগরের। একটি খাতা মিলেছে যেখানে ‘মহামহোপাধ্যায়’ উপাধি প্রাপকদের নামও রয়েছে। সেই তালিকায় রয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামও।