Thank you for trying Sticky AMP!!

দাবি না মানলে আন্দোলনে নামার ঘোষণা

পশ্চিম মেদিনীপুরের জঙ্গলমহল

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জঙ্গলমহল এলাকার মাওবাদীরা নতুন করে সংঘবদ্ধ হয়েছেন। দাবি তুলেছেন পুনর্বাসনের, সরকারি প্যাকেজ এবং সরকারি চাকরির। তা না হলে তাঁরা আবারও জঙ্গলমহলজুড়ে আন্দোলন গড়ে তোলার হুমকি দিয়েছেন।

ঝাড়গ্রামের লোধাশুলিসংলগ্ন টুটুহার জঙ্গলে বঞ্চিত হওয়া সাবেক মাওবাদীরা গতকাল বোববার এক বৈঠকে অংশ নেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সাবেক ৫০ থেকে ৬০ জন মাওবাদী। ঝাড়গ্রাম জেলার জামবনি, বীনপুর এলাকার মাওবাদীরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে নেতৃত্ব দেন সাবেক মাওবাদী নেতা তপন মাহাত।

বৈঠকে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা বলেন, তাঁরা জঙ্গলমহলে অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে মাওবাদী নেতা কিষেণজি, উমাকান্ত, মাওবাদী নেতা সুচিত্রার সঙ্গে থেকে লড়াই করেছেন। এরপর সরকারের আশ্বাসে ফিরে এসেছেন। তাঁরা বলেন, ‘আজও আমরা পুনর্বাসনের আর্থিক প্যাকেজ ও সরকারি চাকরি পাইনি। তাই আমরা হুঁশিয়ার করছি আমাদের দাবি মানা না হলে আবার আমরা জঙ্গলমহলে আন্দোলন ছড়িয়ে দেব।’

বৈঠক থেকে মাওবাদীরা ঘোষণা দেন, ভবিষ্যতে তাঁরা বিড়িহাড়িতে মাওবাদী নেতা উমাকান্তর শহীদবেদির সামনে জড়ো হয়ে নতুন করে অধিকার আদায়ের আন্দোলন শুরু করবেন। এ বিষয়ে শিগগিরই তাঁরা জামবনি, বাঁশতলা, বিনপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় আবারও বৈঠকে বসার ঘোষণা দেন।

বৈঠকে অন্যদের মধ্যে ছিলেন মাওবাদী নেতা রঞ্জিত সিট, সঞ্জয় মাহাত, বাবুল কিসকু প্রমুখ।

Also Read: পশ্চিমবঙ্গে ফের মাওবাদী তৎপরতা

এদিকে বঞ্চিত জঙ্গলমহলের উন্নয়নের স্বার্থে ইতিমধ্যে জঙ্গলমহলকে নিয়ে পৃথক জঙ্গলমহল রাজ্য গঠনের দাবি তুলেছেন বাঁকুরা জেলার বিষ্ণুপুর আসনের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। তিনি দাবি করেছেন, জঙ্গলমহলের উন্নয়নের স্বার্থে পুরুলিয়া, বাঁকুরা, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম বীরভূম ও মেদিনীপুর জেলা নিয়ে পৃথক জঙ্গলমহল রাজ্য গঠনের। তবে এই দাবির প্রতি সমর্থন জানায়নি রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এর আগে বিজেপির আরেক সাংসদ জন বারলার আলিপুরদুয়ারে গত ১৯ জুন এক সভায় বঞ্চিত উত্তরবঙ্গের উন্নয়নের জন্য পৃথক উত্তরবঙ্গ রাজ্য গড়ারও দাবি তুলেছিলেন।

পশ্চিমবঙ্গের পাহাড় ও জঙ্গল–অধ্যুষিত চার জেলা পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, বাঁকুরা ও ঝাড়গ্রাম, রাজ্যের মাওবাদী এলাকা হিসেবে পরিচিত। এসব এলকার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে অর্থনৈতিকভাবে বঞ্চিত হয়ে আসার পর মূলত এলাকার আদিবাসী, উপজাতি ও তপসিলি সম্প্রদায়ের যুবকেরা মাওবাদীদের পতাকা হাতে নিয়ে শুরু করেছিলেন মাওবাদী আন্দোলন। ২০১১ সালের দিকে এখানকার মাওবাদীরা সংঘবদ্ধ হয়ে জঙ্গলমহলজুড়ে অধিকার আদায়ের দাবিতে তীব্র আন্দোলন শুরু করেছিল।
তৎকালীন বাম ফ্রন্টের বিরুদ্ধে ওই আন্দোলনে তখনকার বিরোধীদলীয় তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এসে দাঁড়িয়েছিলেন মাওবাদীদের পাশে। ঘোষণা দিয়েছিলেন তাঁর দল জিতলে তিনি মাওবাদীদের জীবনের মূল্য¯ফিরিয়ে আনবেন। তাঁদের পুনর্বাসনের জন্য আর্থিক প্যাকেজ এবং চাকরির সুবিধা দেবেন।