Thank you for trying Sticky AMP!!

গৃহকর্মীকে ডাস্টবিনের খাবার খেতে বাধ্য করায় ভারতে স্ত্রীসহ সেনা কর্মকর্তা গ্রেপ্তার

শিশু নির্যাতন

শরীরের জায়গায় জায়গায় আগুনে পোড়া দাগ। দাঁত ভেঙে গেছে। কেটে গেছে জিব। নাকও ফেটেছে। এটি নির্যাতনের শিকার এক কিশোরী গৃহকর্মীর স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রতিবেদন। দীর্ঘ ছয় মাস ধরে চলা অমানবিক নির্যাতনে তার অবস্থা এখন গুরুতর। ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের আসাম রাজ্যে।  

আসামে এক সেনা কর্মকর্তার বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে ছিল ১৬ বছরের এই কিশোরী। কমবয়সী গৃহকর্মীকে এভাবে নির্যাতন করার অভিযোগে ওই সেনা কর্মকর্তা ও তাঁর স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে রাজ্য পুলিশ। তবে সেনা কর্মকর্তা ও তাঁর স্ত্রীর দাবি, সিঁড়ি থেকে পড়ে এ অবস্থা হয়েছে কিশোরীর।  

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শরীরজুড়ে শুধু আঘাতের চিহ্নই নয়, কিশোরীকে বেশির ভাগ সময় নগ্ন করে রাখা হতো। খেতে দেওয়া হতো না দিনের পর দিন। যখন খাবারের জন্য আকুতি করত, তখন তাকে ময়লার পাত্র থেকে তুলে নষ্ট খাবার দেওয়া হতো। এভাবে ছয় মাস নির্যাতন করা হয়।

নির্যাতনের শিকার গৃহকর্মী বলেছে, জামাকাপড় খুলে তাকে মারধর করা হতো। যতক্ষণ পর্যন্ত রক্ত বের না হতো, ততক্ষণ পর্যন্ত নির্যাতন চলত। পরে নিজের রক্ত চাটতে বাধ্য করা হতো তাকে।

দুঃসহ সেই যন্ত্রণার বর্ণনা দিয়ে ওই কিশোরী বলে, ‘তিনি (সেনা কর্মকর্তার স্ত্রী) আমাকে বাড়ির একটি কক্ষে আটক করে রাখতেন। আমার চুল টেনে ধরে পরে মারতেন। বাড়ির কাজ নাকি আমি ঠিকমতো করতে পারি না—এমন কথা বলতেন ও মারতেন। জামাকাপড় খুলতে বাধ্য করতেন।’

আসামের দিমা হাসাও জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মৈনাক কুমার জানিয়েছেন, ওই সেনা কর্মকর্তা ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে শিশুদের যৌন হয়রানি থেকে সুরক্ষা-সংক্রান্ত আইন (পিএসিএসও); তফসিলি সম্প্রদায়ের ওপর নিপীড়ন প্রতিরোধ আইনসহ আরও কয়েকটি ধারায় মামলা হয়েছে।  

মৈনাক কুমার বলেন, ‘মেয়েটি আমাদের জানিয়েছে, ছয় মাস তাকে এভাবে নির্যাতন করা হয়।’

অভিযুক্ত ব্যক্তি ভারতীয় সেনাবাহিনীর মেজর পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা। তাঁর বাচ্চার দেখাশোনা করার জন্য ওই কিশোরীকে তিনি হিমাচল প্রদেশের পালামপুরে তাঁর কর্মস্থলে নিয়ে গিয়েছিলেন। সেখানেই কয়েক মাস ধরে ওই কিশোরীর ওপর এভাবে অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়েছে।

সম্প্রতি ছুটিতে আসামে আসে ওই পরিবার। এরপর ওই কিশোরী তার বাড়িতে যায়। সেখানে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের কাছে নির্যাতনের শিকার হওয়ার বিষয়টি জানায় সে। সব জেনে তার পরিবার থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ ওই সেনা কর্মকর্তা ও তাঁর স্ত্রীকে সম্প্রতি গ্রেপ্তার করে।