দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা

মুখ্যমন্ত্রী চড় খাওয়ার পরদিনই দিল্লির পুলিশ কমিশনারকে বদলি

ভারতের দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তাকে গতকাল বুধবার সকালে নিজের বাসভবনে ‘জনশুনানি’ চলাকালে এক ব্যক্তি আচমকা চড় মারেন। এ ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার দিল্লির পুলিশ কমিশনার এস বি কে সিংকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁর জায়গায় ১৯৯২ ব্যাচের কর্মকর্তা সতীশ গোলচাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

ভারতের হোম গার্ডসের মহাপরিচালক এস বি কে সিং অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে ১ আগস্ট দিল্লি কমিশনারের দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। তিনি ১৯৮৮ ব্যাচের আইপিএস কর্মকর্তা এবং এজিএমইউটি (অরুণাচল প্রদেশ, গোয়া, মিজোরাম ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল) ক্যাডারের সদস্য।

আর সতীশ গোলচা ১৯৯২ ব্যাচের আইপিএস কর্মকর্তা এবং এজিএমইউটি ক্যাডারের সদস্য। তিনি দিল্লি পুলিশের বিভিন্ন পদে কাজ করেছেন। এসব পদের মধ্যে দিল্লির উপপুলিশ কমশিনার, যুগ্ম পুলিশ কমিশনার এবং পুলিশের বিশেষ কমিশনার (আইনশৃঙ্খলা ও গোয়েন্দা) অন্যতম।

সতীশ ২০২০ সালে উত্তর-পূর্ব দিল্লির দাঙ্গার সময় পুলিশের বিশেষ কমিশনার ছিলেন। গত বছরের এপ্রিলে তাঁকে ডিরেক্টর জেনারেল (কারাগার) পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তাকে নিজের বাসভবনে চড় মারাকে নিরাপত্তাব্যবস্থায় বড় ঘাটতি হিসেবে দেখা হচ্ছে। গতকাল জনশুনানি চলাকালে এক দর্শনার্থী তাঁর দিকে একটি কাগজ এগিয়ে দিয়ে কথা বলার ভান করে আচমকা চড় মারেন।

নিরাপত্তারক্ষীরা সঙ্গে সঙ্গে ওই ব্যক্তিকে আটক করেন। মুখ্যমন্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁর আঘাত গুরুতর নয়।

ঠিক কী ঘটেছে, তা নিয়ে প্রথম দিকে বিভিন্ন মহলের বিভিন্ন ধরনের দাবি ছিল। পরে পুলিশ জানায়, বুধবার সকালে সাপ্তাহিক ‘জনশুনানি’ চলছিল। জনশুনানির দিন মানুষজন তাঁদের দাবিদাওয়া নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে থাকেন।

সেই সময় মধ্যবয়সী এক ব্যক্তি মুখ্যমন্ত্রীর দিকে একটি কাগজ এগিয়ে দেন। তারপরই তিনি স্বর উঁচিয়ে গালিগালাজ করেন এবং মুখ্যমন্ত্রীকে চুলের মুঠি ধরে চড় মারেন।

প্রাথমিক অনুসন্ধানে পুলিশ জানায়, আটক ওই ব্যক্তির নাম রাজেশ সাকরিয়া। তিনি গুজরাটের রাজকোটের বাসিন্দা।

রাজেশের মা ভানু বলেছেন, রাজেশ কুকুরপ্রেমী। দিল্লি ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় রাস্তার কুকুরদের ধরে আশ্রয়স্থলে রাখা নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট সম্প্রতি যে রায় দিয়েছেন, রাজেশ নাকি তাতে ক্ষুব্ধ।

তবে পুলিশ জানিয়েছে, সাকরিয়ার বিরুদ্ধে হত্যা চেষ্টাসহ নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে।

হামলায় রেখা গুপ্তার হাত, কাঁধ ও মাথায় আঘাত লাগে। তবে এসব আঘাত ততটা গুরুতর নয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তিনি বাসায় ফিরেছেন।

পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে রেখা গুপ্তা বলেছেন, ‘এ হামলায় স্বাভাবিকভাবেই আমি বিস্মিত হয়েছি। তবে এখন ভালো আছি। আমার শুভাকাঙ্ক্ষীদের প্রতি অনুরোধ, আমাকে দেখতে আসার জন্য হুড়োহুড়ি করবেন না। আমি খুব শিগগির আপনাদের মধ্যে কাজে ফিরব। এমন হামলা আমার মনোবল ও জনগণের সেবা করার সংকল্পকে কখনো দমাতে পারে না।’