Thank you for trying Sticky AMP!!

ওডিশায় ট্রেন দুর্ঘটনার ভয়াবহ অভিজ্ঞতা শোনালেন এক যাত্রী

তিনটি ট্রেন—দুটি যাত্রীবাহী, একটি মালবাহী। মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে এসব ট্রেনের সংঘর্ষ হয়। দুর্ঘটনায় দুমড়েমুচড়ে যাওয়া ট্রেনের বগি। ৩ জুন, ভারতের ওডিশার বালেশ্বর জেলার বাহাঙ্গাবাজার এলাকায়

ট্রেনে আরামেই ঘুমাচ্ছিলেন। হঠাৎ ঘুম ভেঙে যায়। এরপরই জীবনের অন্যতম ভয়াবহ এক অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়। এমনই এক ভয়াল অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন ভারতের ওডিশার বালেশ্বর জেলার বাহাঙ্গাবাজার এলাকায় গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় সংঘটিত দুর্ঘটনার সময় ট্রেনে থাকা একজন যাত্রী।

জানা গেছে, কলকাতাগামী বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস ট্রেনটি ডাউন লাইনে ছিল। সন্ধ্যা ৬টা ৫৫ মিনিটে ওডিশার বাহাঙ্গাবাজার এলাকায় এই ট্রেনের কয়েকটি বগি লাইনচ্যুত হয়। এর মিনিট পাঁচেক পর আপ লাইন দিয়ে ওই এলাকা পার হচ্ছিল চেন্নাইগামী শালিমার–চেন্নাই সেন্ট্রাল করমন্ডল এক্সপ্রেস ট্রেনটি। হঠাৎ এই ট্রেনেরও কয়েকটি বগি লাইনচ্যুত হয়।

এ সময় পাশের একটি লাইনে আগে থেকেই দাঁড়িয়ে ছিল মালবাহী একটি ট্রেন। করমন্ডল এক্সপ্রেস ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়ে প্রথমে বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসের কয়েকটি বগিতে আঘাত করে। পরে করমন্ডল এক্সপ্রেস ট্রেনের কয়েকটি বগি আগে থেকে দাঁড়িয়ে থাকা পণ্যবাহী ট্রেনের ওপর গিয়ে আছড়ে পড়ে।

এই দুর্ঘটনায় অন্তত ২৮৮ জনের প্রাণ গেছে বলে জানিয়েছেন ওডিশা ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক সুধাংশু সারেঙ্গি। তিনি আরও জানান, আহত ৮৫০ জনের বেশি। অনেকেই ট্রেনের ভেতরে আটকা পড়েছেন। উদ্ধারকাজ এখনো চলছে। তাই হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

দুর্ঘটনাকবলিত একটি ট্রেনের যাত্রী এএনআইকে বলেন, দুর্ঘটনার আগে তিনি ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। হঠাৎ করে বগিটি লাইনচ্যুত হলে প্রচণ্ড ধাক্কায় তাঁর ঘুম ভেঙে যায়। তিনি বলেন, ‘হঠাৎ করে ১০ থেকে ১৫ জন মানুষ আমার ওপর এসে পড়ে। আমি তাঁদের নিচে চাপা পড়ি।’

Also Read: ভারতে ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত বেড়ে ২৮৮: ফায়ার সার্ভিস

যাত্রী আরও বলেন, ‘আমি হাত ও ঘাড়ে প্রচণ্ড আঘাত পেয়েছি।’ তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, এই দুর্ঘটনায় কতজন মানুষ মারা গেছেন বলে আপনার মনে হয়? জবাবে ওই যাত্রী বলেন, ‘যখন লাইনচ্যুত বগির ভেতর থেকে বেরিয়ে আসি সেখানে আহত মানুষেরা ছড়িয়ে–ছিটিয়ে পড়ে ছিলেন। তাঁদের কেউ হয়তো পা হারিয়েছেন।

কারও হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। কারও ক্ষতবিক্ষত মুখ থেকে রক্ত ঝরছিল।’
আহত যাত্রীদের বালেশ্বর মেডিকেল কলেজ, সোরো ও গোপালপুরের কমিউনিটি হেলথ সেন্টার এবং খান্তাপাড়ায় প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ওডিশার মুখ্যসচিব প্রদীপ জেনা জানিয়েছেন, উদ্ধারকারীরা দুমড়েমুচড়ে যাওয়া ট্রেনের বগিতে আটকে পড়া ব্যক্তিদের উদ্ধারের চেষ্টা করছেন।

Also Read: বগির নিচে আটকা মৃতদেহ বের করতে ব্যবহার করা হচ্ছে ‘গ্যাস কাটার’

দুর্ঘটনার খবরে দুঃখ প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের প্রতিটি পরিবারকে ২ লাখ রুপি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

পাশাপাশি মোদি আহত ব্যক্তিদের ৫০ হাজার রুপি করে সহায়তা দেওয়ার কথা বলেছেন। এ ছাড়া নিহত ব্যক্তিদের পরিবারকে ১০ লাখ রুপি ও গুরুতর আহত ব্যক্তিদের ২ লাখ রুপি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ভারতের রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব।

Also Read: ছবিতে ওডিশার ট্রেন দুর্ঘটনার ভয়াবহতা

Also Read: ‘এখানে একটি হাত পড়ে আছে তো ওখানে একটি পা’

Also Read: বেঁচে ফেরা যাত্রী বললেন, ‘মনে হচ্ছিল ভূমিকম্প হচ্ছে’

Also Read: ভারতের ভয়াবহ যত ট্রেন দুর্ঘটনা