Thank you for trying Sticky AMP!!

রণতরিতে মার্কিন যুদ্ধবিমান

ইরাক-সিরিয়ার কোন লক্ষ্যবস্তুতে কেন হামলা করল যুক্তরাষ্ট্র

মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরাক ও সিরিয়ার ভূখণ্ডে গতকাল শুক্রবার ৮৫টির বেশি লক্ষ্যে একযোগে বিমান হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বলা হয়েছে, ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোর (আইআরজিসি) ও ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর স্থাপনায় এসব হামলা হয়েছে।

গত রোববার সিরিয়ার সীমান্তের কাছে জর্ডানে যুক্তরাষ্ট্রের একটি সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলার প্রতিক্রিয়া হিসেবে গতকালের হামলাকে দেখা হচ্ছে। সামরিক ঘাঁটিতে ওই হামলায় তিনজন মার্কিন সেনা নিহত হন। আহত হন ৪১ জন।

ওই হামলার জন্য ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীকে দায়ী করে আসছিল ওয়াশিংটন। এর প্রতিক্রিয়ায় সিরিয়া ও ইরাকে অবস্থিত ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালানোর পরিকল্পনায় অনুমোদন দেয় যুক্তরাষ্ট্র।

এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে জো বাইডেন প্রশাসনের পক্ষ থেকে গতকালের হামলা ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে প্রথম বহুমুখী প্রতিক্রিয়া। আগামী দিনগুলোয় এমন হামলা আরও হতে পারে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।

গতকালের হামলায় দূরপাল্লার বি-১ বোমারু বিমান ব্যবহার করা হয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্র থেকে উড়িয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে ইরানের ভূখণ্ডে সরাসরি হামলা চালায়নি মার্কিন বাহিনী।

Also Read: ইরাক ও সিরিয়ায় হামলা সফল, সময় লেগেছে ৩০ মিনিট: হোয়াইট হাউস

প্রায় চার মাস ধরে চলমান ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের জেরে মধ্যপ্রাচ্য আগে থেকেই উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে। এ ছাড়া ইরান-সমর্থিত হুতিদের রুখতে ইয়েমেনে ইঙ্গ-মার্কিন হামলা চলছে। এর মধ্যে ইরাক ও সিরিয়ায় নতুন করে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার ঘটনা ওই অঞ্চলকে দীর্ঘ মেয়াদে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে, এমন আশঙ্কা বিশ্লেষকদের।

গতকালের হামলার পর মার্কিন সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সাতটি স্থানে ৮৫টির বেশি লক্ষ্যবস্তুতে একযোগে হামলা চালানো হয়েছে। ইরাকে তিনটি ও সিরিয়ায় চারটি স্থানে এসব হামলা চালানো হয়েছে। এ ছাড়া লক্ষ্যবস্তুগুলোর মধ্যে ছিল সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর কমান্ড ও নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র, সামরিক রসদভান্ডার এবং ড্রোন স্টোরেজ ইউনিট।

লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়েছে সিরিয়া ও ইরাকে থাকা আইআরজিসির এলিট বাহিনী কুদস ফোর্সের স্থাপনা। ইরাক থেকে লেবানন, সিরিয়া থেকে ইয়েমেন—মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে কুদস ফোর্সের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোয় বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে প্রভাব বাড়িয়েছে কুদস ফোর্স।

Also Read: ইরাক ও সিরিয়ায় ইরানের বিভিন্ন স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলা

হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে গতকালের হামলাকে ‘স্পষ্টতই সফল’ দাবি করে বলা হয়েছে, হামলায় সময় লেগেছে ৩০ মিনিট।

এসব হামলায় হতাহত কিংবা ক্ষয়ক্ষতির হিসাব দেয়নি কোনো পক্ষই। তবে ব্রিফিং করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের জয়েন্ট স্টাফের পরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল ডগলাস সিমস। হামলা সফল হয়েছে বলে জানান তিনি।

এখন কেন ইরাক-সিরিয়ায় হামলা চালাল যুক্তরাষ্ট্র, এমন প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন ডগলাস সিমস। তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে আবহাওয়া অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবক ছিল। তিনি জানান, কয়েক দিন ধরে মেঘাচ্ছন্ন আবহাওয়ার কারণে বিমান হামলা চালানো কঠিন ছিল। শুক্রবার পরিস্থিতি বদলে যায়।

এদিকে নিজেদের ভূখণ্ডে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলা চালানোকে ‘আমেরিকান আগ্রাসন’ বলেছে সিরিয়া। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম গতকাল জানায়, সিরিয়া-ইরাক সীমান্ত এলাকায় মরুভূমিতে হামলা চালানো হয়েছে। হামলায় কয়েকজন হতাহত হওয়ার খবর জানানো হয়েছে।

Also Read: ইরানের বিরুদ্ধে কি সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারে যুক্তরাষ্ট্র

কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইরাকের সামরিক বাহিনীও। গতকালের হামলার জেরে সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন ইরাকের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ইয়াহইয়া রসুল। তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, সীমান্ত এলাকায় হামলার ফলে বাগদাদ ও ওয়াশিংটনের মধ্যকার সম্পর্কে টানাপোড়েন দেখা দিতে পারে।

যদিও যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে বলা হয়েছে, ইরাককে জানিয়েই দেশটির বিভিন্ন স্থানে হামলা চালানো হয়েছে।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত শুরুর পর থেকে ইরাক, সিরিয়া ও জর্ডানে ১৬০ বারের বেশি হামলা চালিয়েছে মার্কিন বাহিনী।

Also Read: তিন মার্কিন সেনা নিহতের ঘটনায় বাইডেনের ওপর চাপ বাড়ছে