Thank you for trying Sticky AMP!!

ইরানে ধরপাকড় ও মৃত্যু বাড়লেও বিক্ষোভের তেজ কমছে না

মাসা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে ইরানের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ হয়

ইরানে পুলিশি হেফাজতে তরুণী মাসা আমিনির মৃত্যুর ঘটনায় আজ মঙ্গলবার দেশটির একাধিক শহরে দাঙ্গা পুলিশ ও অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়েছে। ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। এদিকে চলমান এই বিক্ষোভে দেশটিতে আজ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৭৬ হয়েছে। নরওয়ের অসলোভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর) এ তথ্য জানিয়েছে।

গত ১৩ সেপ্টেম্বর ২২ বছর বয়সী মাসা আমিনি পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে ইরানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল কুর্দিস্তান প্রদেশের সাকেজ থেকে রাজধানী তেহরানে আসেন। ‘অসভ্য’ পোশাক পরার অভিযোগে দেশটির ‘নীতি পুলিশ’ মাসাকে আটক করে। তিন দিন পর পুলিশি হেফাজতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। নির্যাতনে মাসার মৃত্যু হয়েছে দাবি করে ইরানের মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেন। তাঁরা এই মৃত্যুর ন্যায়বিচার দাবি করেন। ২০১৯ সালে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বিশাল বিক্ষোভ হয়েছিল। এরপর এত বড় বিক্ষোভ আর হয়নি দেশটিতে। ইরান ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মাসার মৃত্যুর বিচার চেয়ে বিক্ষোভ হচ্ছে।

বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে আসলে কতজন মারা গেছেন, তা নির্দিষ্ট করে জানা না গেলেও আইএইচআর জানিয়েছে, তাদের কাছে ৭৬ জনের মৃত্যুর খবর এসেছে। আর ইরানের কর্মকর্তারা বলেছেন, ১ হাজার ২০০ জনের বেশি বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে মানবাধিকারকর্মী ও সাংবাদিকও রয়েছেন। বিক্ষোভ দমনে বিক্ষোভকারীদের পাশাপাশি সাংবাদিক, অধিকারকর্মীদের ওপরও ধরপাকড় চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

ধরপাকড় ও মৃত্যু বাড়লেও বিক্ষোভের তেজ কমছে না। টুইটারে পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা গেছে, ইরানের ধর্মীয় শাসকগোষ্ঠীর পতন চেয়ে রাজধানী তেহরান, তাবরিজ, কারাজ, কোম, ইয়াজদ ও অন্য শহরগুলোতে বিক্ষোভ করেন মানুষ। এ সময় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে তাঁদের সংঘর্ষ হয়।

ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানিয়েছে, কিছু শহরে দাঙ্গাকারীদের (বিক্ষোভকারী) সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাসের শেল ব্যবহার করে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে বিক্ষোভকারীদের স্লোগান দিতে দেখা যায়। তাঁদের হিজাব পোড়াতে দেখা যায়।

বিক্ষোভকারীদের হত্যা-নির্যাতন বন্ধে দ্ব্যর্থহীন ও ঐক্যবদ্ধভাবে বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আইএইচআরের পরিচালক মাহমুদ আমিরি মোগাদ্দাম। বিক্ষোভকারীদের ওপর দমনপীড়ন চালানোয় ইরানের নিন্দা জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। বিক্ষোভে দমনপীড়ন চালানোর ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়েছে কানাডা।

Also Read: ইরানের এই বিক্ষোভ বহু বছরের বঞ্চনার প্রতিবাদ

এদিকে বিক্ষোভে দমনপীড়ন চালানোয় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন। কমিশনের এক মুখপাত্র বলেন, চলমান বিক্ষোভ দমনে সহিংস হয়ে উঠেছে নিরাপত্তা বাহিনী, যা খুবই উদ্বেগের।          

Also Read: ইরানে বিক্ষোভ দমনে আরও কঠোর হওয়ার বার্তা প্রেসিডেন্টের