
গাজা থেকে জিম্মিরা মুক্ত হওয়ার পরপরই সেখানকার ভূগর্ভস্থ সুড়ঙ্গ নেটওয়ার্কের অবশিষ্টাংশ গুঁড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে ইসরায়েল। যুক্তরাষ্ট্রের অনুমোদনে এই পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আজ রোববার ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ এ কথা বলেছে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ বলেছেন, যে দেশটির উদ্যোগে তিন দিন আগে গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে, সেই যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন একটি ‘আন্তর্জাতিক’ তদারকিতে এই অভিযান চলবে।
এক বিবৃতিতে কাৎজ বলেছেন, ‘জিম্মিদের মুক্তি পাওয়ার ধাপটি শেষ হলে ইসরায়েলের জন্য বড় চ্যালেঞ্জটি হবে গাজায় হামাসের সব সুড়ঙ্গ ধ্বংস করা। এ অভিযান পরিচালনার জন্য প্রস্তুত থাকতে আমি সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছি।’
ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস গাজায় ভূগর্ভস্থ সুড়ঙ্গের একটি নেটওয়ার্ক পরিচালনা করে। এ ধরনের সুড়ঙ্গ ব্যবহার করে ইসরায়েলের গোয়েন্দা নজরদারির বাইরে থেকে কাজ করার সুযোগ পায় তারা। এর মধ্যে কিছু সুড়ঙ্গ সীমানার বেড়ার নিচ দিয়ে ইসরায়েলে ঢুকে পড়েছে। এগুলো ব্যবহার করে ইসরায়েলে আকস্মিক হামলা চালানোর সুযোগ পায় হামাস।
‘জিম্মিদের মুক্তি পাওয়ার ধাপটি শেষ হলে ইসরায়েলের জন্য বড় চ্যালেঞ্জটি হবে গাজায় হামাসের সব সুড়ঙ্গ ধ্বংস করা। এ অভিযান পরিচালনার জন্য প্রস্তুত থাকতে আমি সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছি।’ (ইসরায়েল কাৎজ, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী)
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস সীমান্ত পার হয়ে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে ঢুকে হামলা চালায়। জবাবে সেদিন থেকেই গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল। এর পর থেকে দুই বছর ধরে ইসরায়েলি হামলা চালিয়ে বেশ কিছু সুড়ঙ্গ ধ্বংস করে দিয়েছে।
কাৎজ বলেছেন, হামাসকে নিরস্ত্রীকরণ ও সংগঠনটির সামরিক ক্ষমতা কমানোর রূপরেখা অনুযায়ী বাকি সুড়ঙ্গগুলো ধ্বংস করা হবে। গাজায় যুক্তরাষ্ট্র–সমর্থিত যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার পরবর্তী ধাপে এমন পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
হামাস মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রস্তাবিত পরিকল্পনার প্রথম ধাপ মেনে নিয়েছে। এর আওতায় গত শুক্রবার থেকে গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চলছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, আগামীকাল সোমবার ৪৮ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস। এর মধ্যে যাঁরা জীবিত আছেন, তাঁদের জীবিত অবস্থায় তুলে দেওয়া হবে। আর যাঁরা নিহত হয়েছেন, তাঁদের লাশ হস্তান্তর করা হবে।
ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে ইসরায়েল ২৫০ জন কারাবন্দীকে মুক্তি দেবে। এর মধ্যে প্রাণঘাতী হামলার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হওয়া কয়েকজন ব্যক্তিও আছেন। গাজা থেকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর হাতে আটক হওয়া ১ হাজার ৭০০ জন ফিলিস্তিনিও মুক্তি পাবেন।
তবে হামাস এখনো পুরোপুরি নিরস্ত্রীকরণের জন্য রাজি হয়নি। আজ রোববার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা হোসাম বাদরান বলেছেন, মার্কিন পরিকল্পনার দ্বিতীয় ধাপে অনেক জটিলতা এবং সমস্যার বিষয় আছে।