ইসরায়েলের বিমান হামলার পর ধোঁয়া উড়তে দেখা যাচ্ছে। কাতারের রাজধানী দোহায়, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ইসরায়েলের বিমান হামলার পর ধোঁয়া উড়তে দেখা যাচ্ছে। কাতারের রাজধানী দোহায়, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

কাতার ও উপসাগরীয় দেশগুলো কীভাবে ইসরায়েলের হামলার জবাব দেবে

আমরা বিভিন্ন সংঘাতের মধ্যস্থতা করি, কখনো বিভিন্ন সংঘাতে নিরপেক্ষ থাকি, কখনোবা শান্তির দূত হিসেবে ভূমিকা রাখি—কাতারের এমন একটি গর্ব ছিল।

কিন্তু সেই কাতারেই প্রথমবারের মতো বিমান ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলে। এতে করে জ্বালানি তেল ও গ্যাসসমৃদ্ধ পারস্য উপসাগরের ছোট দেশটি ইসরায়েলের ক্রমবর্ধমান আঞ্চলিক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ল।

গত মঙ্গলবার কাতারের রাজধানী দোহায় হামাস কর্মকর্তাদের এক বৈঠকে ইসরায়েলের আকস্মিক হামলায় ছয়জন নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে একজন কাতারের নিরাপত্তা কর্মকর্তা। তবে হামাসের শীর্ষ কোনো নেতা নিহত হননি।

দোহায় হামলার মধ্য দিয়ে ইসরায়েল নতুন এক সীমারেখা অতিক্রম করেছে। এবারই তারা উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদের (জিসিসি) কোনো সদস্যরাষ্ট্রে হামলার দায় স্বীকার করল।

কাতার জিসিসির এমন এক সদস্যরাষ্ট্র, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ডের আঞ্চলিক সদর দপ্তর (সেন্টকম) অবস্থিত। সেখানে আট হাজারের বেশি মার্কিন সেনা মোতায়েন রয়েছে।

এখন কাতার কীভাবে ইসরায়েলের হামলার প্রতিক্রিয়া জানাবে, সেদিকে চোখ রাখছে সবাই।

লন্ডনের কিংস কলেজের উপসাগরীয় নিরাপত্তাবিশেষজ্ঞ আন্দ্রেয়াস ক্রিগ মিডল ইস্ট আইকে বলেছেন, ‘স্বল্প মেয়াদে কাতার সেই হাতিয়ারগুলোই ব্যবহার করবে, যেগুলোতে তারা সবচেয়ে দক্ষ। তা হলো কূটনীতি ও আইন।’

ক্রিগ আরও বলেন, ‘জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ বা সাধারণ পরিষদ যেখানে সম্ভব, সেখানেই ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক নিন্দা প্রস্তাব উত্থাপনের জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছে কাতার।’

স্বল্পমেয়াদে কাতার সেই হাতিয়ারগুলোই ব্যবহার করবে, যেগুলোতে তারা সবচেয়ে দক্ষ। তা হলো কূটনীতি ও আইন।
আন্দ্রেয়াস ক্রিগ, নিরাপত্তাবিশেষজ্ঞ, লন্ডনের কিংস কলেজ

আরব গালফ স্টেটস ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ গবেষক ক্রিস্টিন দিওয়ান বলেন, আরব লিগ, ৫৭ সদস্যবিশিষ্ট ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থাসহ (ওআইসি) অন্যান্য যৌথ প্ল্যাটফর্ম থেকেও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে নিন্দামূলক বিবৃতি আদায়ের চেষ্টা করবে দোহা।

ক্রিস্টিন মিডল ইস্ট আইকে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র ইসরায়েলের মধ্যে এই হামলাকে কেন্দ্র করে কোনো মতপার্থক্য থাকলে তা শক্তিশালীভাবে সামনে আনা এবং ইসরায়েলের ওপর যুদ্ধবিরতির জন্য চাপ সৃষ্টি করাই হবে এসব তৎপরতার মূল উদ্দেশ্য।’

মঙ্গলবার হামলার পর কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, এ ঘটনার প্রতিক্রিয়া জানাতে একটি আইনজীবী দল গঠন করা হয়েছে।

কিন্তু কাতারের তরফে ইসরায়েলের হামলার সামরিক প্রতিশোধ নেওয়ার সম্ভাবনা কম বলেই মনে করেন লন্ডনের কিংস কলেজের নিরাপত্তাবিশেষজ্ঞ আন্দ্রেয়াস ক্রিগ।

ক্রিগ বলেন, ‘কাতারের সামরিক উত্তেজনা বাড়ানোর কোনো ইচ্ছা নেই, সেই সক্ষমতাও নেই। মধ্য মেয়াদে প্রতিরোধকৌশল নিয়ে চিন্তাভাবনায় তাদের মনোযোগ থাকবে বলে মনে হচ্ছে।’

ক্রিগ আরও বলেন, ‘ইরানের হামলার বিরুদ্ধে কীভাবে সুরক্ষা নিশ্চিত করা যায়, তা নিয়ে কাতারের সামরিক উপদেষ্টারা আগে থেকেই ভাবছিলেন। এখন তাঁরা ইসরায়েলকে কীভাবে প্রতিরোধ করা যায়, তা নিয়ে প্রকাশ্যে আলোচনা করছেন।’

কাতারে ইসরায়েলের হামলাকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলে বর্ণনা করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। এটি অঞ্চলটির অন্যান্য দেশের ‘মনোযোগ’ এড়ায়নি।
ক্রিস্টিয়ান উলরিকসেন, বেকার ইনস্টিটিউটের ফেলো

গত জুনে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার জবাবে কাতারে অবস্থিত দেশটির সামরিক ঘাঁটি আল উদেইদে হামলা চালিয়েছিল তেহরান। খুব হিসাব-নিকাশ করেই এ হামলা চালানো হয়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্রকে পরোক্ষভাবে সতর্ক করতে আগেভাগেই কাতারকে জানিয়েছিল ইরান। ফলে দোহা ও ওয়াশিংটন আগে থেকেই প্রস্তুতি নিতে পেরেছিল। যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা ব্যবহার করে ইরানের কিছু ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করা হয়েছিল।

কিন্তু মঙ্গলবার এমন প্রস্তুতির কোনো সুযোগই ছিল না।

কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুর রহমান আল-থানি মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘দোহা কীভাবে ক্ষেপণাস্ত্রবৃষ্টি সামাল দিতে পারে, তা আমরা ইরানের হামলার সময় বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছি। কিন্তু ইসরায়েল এমন অস্ত্র ব্যবহার করেছে, যা আমাদের রাডার শনাক্ত করতে পারেনি।’

কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কিন দাবি অস্বীকার করে বলেন, ‘ইসরায়েলের হামলার বিষয়ে ওয়াশিংটন আমাদের আগে থেকে সতর্ক করেনি।’ ‘হামলার ১০ মিনিট’ পরই যুক্তরাষ্ট্রের তরফে তাঁদের কাছে সতর্কতা এসেছিল বলে জানান তিনি।

ক্রিগ বলেন, ‘কাতার নিজেদের নিরাপত্তাব্যবস্থাকে যেভাবে কল্পনা করেন, এ হামলা সেটার ওপর এক বড় ধাক্কা।’

এই নিরাপত্তা বিশ্লেষকের মতে, ‘এখন আকাশ প্রতিরক্ষা খাতে বিনিয়োগ বাড়বে। সম্মিলিত নিরাপত্তাবলয় তৈরির বিষয়ে জিসিসির মধ্যে নতুন উদ্যোগ দেখা যাবে। কৌশলগত অংশীদারত্বে যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে বৈচিত্র্য বৃদ্ধি করা হবে।’

উপসাগরীয় দেশগুলোর ‘যৌথ ক্ষোভ’

কাতারে ইসরায়েলের হামলার একটি অনিচ্ছাকৃত ফল হলো বছরের পর বছর ধরে গভীর মতপার্থক্যে বিভক্তি উপসাগরীয় দেশগুলো একে অপরের কাছাকাছি চলে এসেছে।

কাতারের প্রতি সংহতি জানাতে গত বুধবার সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বিন জায়েদ দোহায় যান। গতকাল বৃহস্পতিবার যান সৌদি আরবের যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমান।

গবেষক ক্রিস্টিন দিওয়ান বলেন, ‘কাতারের ওপর ইসরায়েলের হামলায় উপসাগরীয় দেশগুলোর মধ্যে যৌথ ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘একটি প্রতিবেশী রাজতন্ত্রের ওপর বিমান হামলার পর উপসাগরীয় অঞ্চলের অন্যান্য দেশ নিজেদের মধ্যকার মতপার্থক্য সাময়িকভাবে মুলতবি রেখেছে। একটি রাজতন্ত্রের নিরাপত্তার বলয় ভেঙে যাওয়াটা তাদের সবার ওপর প্রভাব ফেলেছে।’

ইসরায়েলের হামলাকে জিসিসিভুক্ত দেশগুলো নিজেদের অস্তিত্বের জন্য হুমকি হিসেবে দেখতে পারে। এ ক্ষেত্রে কাতারের সঙ্গে প্রতিবেশী কিছু দেশের ২০১৭ সালের সুপরিচিত বিবাদ বাধা হয়ে না–ও দাঁড়াতে পারে। কারণ, দোহায় ইসরায়েলের হামলা এই সবকিছুকে ছাপিয়ে গেছে।

২০১৭ সালের জুন থেকে কাতারের বিরুদ্ধে সৌদি আরব, ইউএই, বাহরাইন ও মিসর সাড়ে তিন বছরের সর্বাত্মক অবরোধ বা নাকাবন্দী ঘোষণা করেছিল। কাতারের বিরুদ্ধে তারা ইরানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রক্ষা এবং সন্ত্রাসবাদের সমর্থনের অভিযোগ এনেছিল। কাতার এসব অভিযোগ দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছিল। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে নাকাবন্দী প্রত্যাহার করা হয়েছিল।

আনুষ্ঠানিকভাবে সেই বিবাদের অবসান হলেও দেশগুলোর মধ্যে এখনো কিছু মতপার্থক্য রয়ে গেছে। কিন্তু কোনো উপসাগরীয় দেশে ইসরায়েলের সরাসরি হামলা অঞ্চলটিকে নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে।

উপসাগরীয় বিশেষজ্ঞ এবং বেকার ইনস্টিটিউটের ফেলো ক্রিস্টিয়ান উলরিকসেন মিডল ইস্ট আইকে বলেছেন, ‘কাতারের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে যেসব বিবৃতি দেওয়া হয়েছে, সেগুলোর ভাষা অন্যান্য সময়ের চেয়ে অনেক বেশি কড়া। এ ক্ষেত্রে বাহরাইন ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের কথা বিশেষভাবে বলতে হয়। কারণ, কিছু আগপর্যন্ত তাদের সঙ্গে দোহার সম্পর্কে টানাপোড়েন ছিল।’

ক্রিস্টিয়ান বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত ইসরায়েলের হামলাকে ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ বলে বর্ণনা করেছে। এটি অঞ্চলটির অন্যান্য দেশের ‘মনোযোগ’ এড়ায়নি।

সংযুক্ত আরব আমিরাত নিজেও এমন একটি ধাক্কা খেয়েছিল। ২০১০ সালে হামাসের সশস্ত্র শাখার জ্যেষ্ঠ অস্ত্র সংগ্রহ কর্মকর্তা মাহমুদ আল-মাভহুহকে দুবাইয়ের একটি হোটেল রুমে হত্যা করা হয়েছিল।

ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ এ হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে বলে ধারণা করা হয়। কিন্তু ইসরায়েল এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। আবার বিষয়টি অস্বীকারও করেনি।

সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের কারণে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইসরায়েলের মধ্যে অল্প কিছুদিন উত্তেজনা দেখা দিয়েছিল। কিন্তু তাতে করে দুই দেশের গোপন সহযোগিতা কখনো বন্ধ হয়নি।

এক দশক পর ২০২০ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চুক্তি হয়, যা আব্রাহাম চুক্তি হিসেবে পরিচিত। এতে সবার আগে সই করেছিল আমিরাত ও বাহরাইন।

গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যা (জেনোসাইড) নিয়ে নিন্দা জানালেও আমিরাত বা বাহরাইন কেউ আব্রাহাম চুক্তি প্রত্যাহার বা স্থগিত করেনি। কিন্তু কাতারের ওপর হামলা এ পরিস্থিতি বদলে দিতে পারে।

ক্রিস্টিন দিওয়ান বলেন, ‘কাতারের ওপর হামলা সম্ভাব্য চরম সীমারেখা (রেড লাইন) বলে মনে হচ্ছে। জিসিসি সদস্যদেশের ভূখণ্ডে আঘাতকে উপসাগরীয় দেশগুলোর ওপর সামষ্টিক হামলা হিসেবে বিবেচনা করা হতে পারে।’

এ হামলার পর ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের পুনর্মূল্যায়নের ব্যাপারে চাপ বৃদ্ধি পেতে পারে বলেও মনে করেন ক্রিস্টিন।

এই বিশ্লেষক বলেন, ‘উপসাগরীয় দেশগুলো আঞ্চলিক নিরাপত্তার বিষয়ে ইসরায়েলকে এখন ইরানের সমতুল্য হুমকি হিসেবে দেখতে শুরু করেছে। সমস্যা হলো, যুক্তরাষ্ট্র এ হুমকি মোকাবিলায় সমাধান হিসেবে পথ দেখাতে পারছে না।’

কাতারের রাজধানী দোহায় ইসরায়েলের বিমান হামলার পরবর্তী দৃশ্য। ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীলতা হ্রাস

কাতারসহ উপসাগরীয় অঞ্চলের অন্যান্য দেশ নিরাপত্তা ও কূটনৈতিক অংশীদার হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে প্রধানত যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভর করে আসছিল। কিন্তু তা সত্ত্বে ওয়াশিংটন এমন একটি দেশে ইসরায়েলের হামলা ঠেকাতে পারেনি, যেখানে হাজার হাজার মার্কিন সেনা অবস্থান করছেন। এটা কাতারকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক নতুন করে ভেবে দেখতে উৎসাহিত করবে।

ক্রিস্টিয়ান উলরিকসেন বলেন, ‘২০১৯ সালে সৌদি আরবের তেল স্থাপনায় এবং ২০২২ সালে আবুধাবিতে হুতিদের হামলার পরই যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। এর পর থেকে কৌশলগত ও নিরাপত্তায় বৈচিত্র্য আনতে দেশগুলো প্রক্রিয়া শুরু করে।’

এ বৈচিত্র্যের অংশ হিসেবে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত চীনের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করেছে। জ্বালানি তেল উত্তোলন ও সরবরাহকারী দেশগুলোর সংগঠন ওপেক প্লাস জোটের সদস্য রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নেও দেশগুলো মনোযোগ দেয়। পাশাপাশি আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের প্রতি আগ্রাসী মনোভাব কিছুটা শিথিল করেছে সৌদি আরব ও আমিরাত।

সৌদি আরব ২০২৩ সালে ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করেছে। একই সময়ে ইয়েমেনে হুতিদের সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ নিয়েছে।

সংযুক্ত আরব আমিরাতও ইরানের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছে। আর কাতারের সঙ্গে বিবাদ শেষ হওয়ার পর তুরস্কের সঙ্গেও সমন্বয় বৃদ্ধি করেছে।

ক্রিস্টিয়ান উলরিকসেন প্রসঙ্গক্রমে বলেন, রিয়াদ ও আবুধাবি নিরাপত্তা ও কূটনীতির ক্ষেত্রে বৈচিত্র্যের চেষ্টা করলেও একই সময়ে কাতার ওয়াশিংটনের সঙ্গে সম্পর্ক আরও মজবুত করছে।

২০২২ সালে জো বাইডেন প্রশাসন কাতারকে মেজর নন-ন্যাটো মিত্রের মর্যাদা দেয়। নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষার জন্য এটা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এর ফলে ন্যাটো সদস্য না হয়েও দেশটির অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তা পাওয়ার কথা রয়েছে। সৌদি আরব বা সংযুক্ত আরব আমিরাতের এ অংশীদারত্ব নেই।

কিন্তু মঙ্গলবারের হামলা এমন অংশীদারত্বের বিশ্বাসযোগ্যতায় ফাটল তৈরি করেছে। ক্রিস্টিয়ান উলরিকসেন বলেন, ‘এ হামলা দোহার হিসাব-নিকাশে কোনো পরিবর্তন আনে কি না, সেটা দেখার বিষয়।’

ক্রিস্টিন দিওয়ান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা করা হলেও উপসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র এখনো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ক্রিস্টিন দিওয়ান আরও বলেন, ‘কাতারের জন্য সেন্ট্রাল কমান্ডের আঞ্চলিক সদর দপ্তর (সেন্টকম) বা সৌদি আরবের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা নিশ্চয়তার বিকল্প এখনো তৈরি হয়নি। এটিই দ্বিধাদ্বন্দ্বের মূল বিষয়।’