পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনে ঘোষিত ২৪৫ আসনের ফলাফলে ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরাই অন্য যেকোনো দলের চেয়ে বেশি আসনে জয়ী হয়েছেন। নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফলে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলেও পাকিস্তানের রাজনীতিতে পিটিআইয়ের শক্ত অবস্থান বিশ্বব্যাপী নতুন বার্তা দেবে।
আর ইমরান খানের পিটিআই–সমর্থিত প্রার্থীরা যদি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে যান, তাহলে সেই জয় স্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির সরকার ও জনপ্রশাসন নীতিবিষয়ক সহকারী অধ্যাপক মায়া টুডোর। তিনি বলেছেন, পাকিস্তানের সাম্প্রতিক ইতিহাসে অন্যান্য প্রতিটি নির্বাচনেই সেনাবাহিনীর পছন্দের প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। ইমরান খানের সামনেও অনেক প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হয়েছিল। পিটিআইয়ের ক্ষমতা খর্ব করতে সেনাবাহিনী তাদের প্রতিটি অস্ত্র ব্যবহার করেছে। পিটিআইয়ের দলীয় প্রতীক ক্রিকেট ব্যাট বাতিল করা থেকে শুরু করে ভোটের দিন ইন্টারনেট বন্ধ করাসহ সবকিছুই তারা করেছে।
ইমরান খান ছাড়াও দলটির অনেক নেতাকে বিভিন্ন মামলায় কারাবন্দী করা হয়েছে। মামলার আসামি হয়ে অনেক নেতা পালিয়ে বেড়িয়েছেন। বৈরী এই পরিস্থিতির মধ্যেও নির্বাচনে পিটিআই–সমর্থিত প্রার্থীদের চমক জাগানোর মতো ফলের পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে বলে বিশ্লেষকেরা মনে করছেন। তার মধ্যে অন্যতম হলো তরুণদের মধ্যে পিটিআইয়ের বিপুল সমর্থন।
এই তরুণ ভোটাররা যেহেতু যোগাযোগের নতুন প্রযুক্তিতে অভ্যস্ত, সে কারণে নির্বাচনী প্রচারে ডিজিটাল মিডিয়ার ওপর নির্ভর করেন পিটিআই নেতারা। কারাবন্দী ও আত্মগোপনে থেকেও তাঁরা ডিজিটাল মিডিয়ার মাধ্যমে ভোটারদের কাছে নিজেদের বার্তা পৌঁছে দেন। পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ এড়াতে অনেকেই অজ্ঞাত স্থান থেকে ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে যুক্ত হয়ে সমাবেশে বক্তব্য দেন।
এত কিছুর পরও পিটিআই–সমর্থিত প্রার্থীরা যদি জয়ী হতে পারেন, তাহলে তাঁদের সামনের পথও দুর্গম হবে বলে মনে করছেন অধ্যাপক মায়া টুডোর। তিনি বলেন, নাজুক অর্থনীতি, প্রায় সব সীমান্তে সংঘাত, মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি—এসবই এখন সাধারণ পাকিস্তানিদের সামনে রয়েছে। নির্বাচনে কেউ স্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে এসব সমস্যার সঙ্গে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা যুক্ত হবে।