
জ্যাকব মিল্টনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি ১০ লাখ ডলার চুরি করেছেন। এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে সাজাও ভোগ করেন তিনি। কিন্তু নিউইয়র্ক নগরের ম্যানহাটন সুপ্রিম কোর্ট জ্যাকবকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে সাড়ে ১২ মিলিয়ন ডলার দিতে বিবাদীদের নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালতের এ ক্ষতিপূরণ মামলার রায় নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন জ্যাকব মিল্টন। ১৭ আগস্ট নগরের জ্যাকসন হাইটসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জ্যাকব মিল্টন বলেন, সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী এই মামলায় এখন তিনি নির্দোষ। মামলাকারীদের বিরুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষ জ্যাকব মিলটনকে ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য জুরি বোর্ড রায় দিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে জ্যাকব মিল্টন বলেন, ২০০৬ সালে গ্রিফিন মর্টগেজ নামের ব্যাংকে কর্মরত কতিপয় ব্যক্তি তাঁকে দায়ী করে পুলিশের রিপোর্ট করে। কোনো তদন্ত ছাড়াই ২০০৭ সালের অক্টোবরে পুলিশ জ্যাকব মিল্টনকে গ্রেপ্তার করেছিল। তাঁর বিরুদ্ধে মায়রা মেসিয়াস, জুয়ান বি আলভারেজ, জুয়ান সি আলভারেজ, লড়েনা আলভারেজ ও হেক্টর স্যান্ডোভালের পরিচয় চুরি করে একাধিক বাড়িঘর ক্রয় এবং আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছিল। তদন্ত বা জিজ্ঞাসাবাদ ছাড়াই সে সময় কুইন্স কাউন্টি ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি রিচার্ড ব্রাউন সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তাঁর নামে অভিযোগ প্রধান প্রধান সংবাদমাধ্যমে উপস্থাপন করেন।
জ্যাকব মিল্টন লিখিত বক্তব্যে বলেন, ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নির সংবাদ সম্মেলনের পর তদন্ত কর্মকর্তারা বুঝতে পারেন, ভুল তথ্যে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্তকারীদের পক্ষ থেকে মামলা তুলে নিতে শর্ত হিসেবে বিভিন্ন ধরনের প্রস্তাব দেওয়া হয়। একপর্যায়ে প্রসিকিউটরের পক্ষ থেকে অপরাধ স্বীকার করার কাগজে স্বাক্ষরও নেওয়া হয়।
তখনকার পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে জ্যাকব মিল্টন বলেছেন, বাধ্য হয়ে তিনি অপরাধ স্বীকারের কাগজে স্বাক্ষর করেন। পরে আদালতে অপরাধ স্বীকারপত্র প্রত্যাহারের আবেদন করেও কোনো ফল পাননি। নিজের বিপন্ন সময়ে কমিউনিটির কেউ তাঁর সাহায্যেও এগিয়ে আসেননি। অপরাধ স্বীকার করে আদালতের দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপিল করলে আপিল আদালত তাঁর দণ্ড মওকুফ করে মুক্তির নির্দেশ দেন। হাজত থেকে মুক্তির পরপরই তিনি ম্যানহাটন সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণের মামলা দায়ের করেন। যথাসময়ে ‘প্রসেস সার্ভারের’ মাধ্যমে অভিযোগকারী মায়রা মেসিয়াস, জুয়ান বি আলভারেজ, জুয়ান সি আলভারেজ, লড়েনা আলভারেজ, হেক্টর স্যান্ডোভাল ও নূর মোহাম্মদের কাছে মামলার বিবরণ সার্ভ করা হয়েছিল যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই।
ক্ষতিপূরণ মামলার রায় পাওয়ার পর কালেকশন অ্যাটর্নিরা ক্ষতিপূরণ আদায়ের উদ্যোগ নেওয়ার পর অভিযোগকারীরা বলছেন, এমন মামলার বিষয়টিই তাঁদের জানা নেই।
কুইন্স ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালে অর্থ চুরির মামলায় জ্যাকব মিল্টনের দুই থেকে ছয় বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড দেন আদালত। প্রায় এক বছর সাজা ভোগের পর অপরাধ স্বীকার করে আদালতের দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপিল করলে আপিল আদালত তাঁর দণ্ড মওকুফ করে মুক্তির নির্দেশ দেন।