
নিউইয়র্ক পুলিশ (এনওয়াইপিডি) সম্প্রতি শহরের গৃহহীনদের আশ্রয় প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসতে একটি অভিনব পদক্ষেপ নিয়েছে। পাতাল রেল স্টেশনগুলোতে গিয়ে গিয়ে গৃহহীন লোকদের হাতে ধোঁয়া ওঠা গরম কফির কাপ ধরিয়ে দিচ্ছে তারা। তাও আবার যে সে ব্র্যান্ডের কফি নয়! নিউইয়র্ক শহরের গৃহহীনদের বিশ্বখ্যাত ডানকিন ডোনাট কফি খাওয়াচ্ছে এনওয়াইপিডি। বিনিময়ে একটিই আরজি, ‘দয়া করে আশ্রয়কেন্দ্রে চলুন’।
নিউইয়র্ক শহরে গৃহহীন লোকের সংখ্যা নেহাত কম নয়। এদের অনেকেই রাতে পাতালরেল স্টেশনগুলোতে ঘুমায়। অনেকে টার্মিনালে থাকা ট্রেনের বগিগুলোতে উঠে ঘুমায়। স্টেশন ও ট্রেনে গৃহহীনদের এ রকম উপদ্রবে ট্রেনের সময়সূচিতে মাঝেমধ্যেই বিঘ্ন ঘটে। অনেকে তো ট্রেনের নরম গদিতে ঘুমে এমন বিভোর থাকে যে, পুলিশের লাঠির গুঁতোতেও উঠতে চায় না। সিট ছাড়বে না বলে বচসাও বাঁধে। গৃহহীনদের মধ্যে নাছোড়বান্দা অনেককে বচসায় কুলোতে না পেরে থানায় নিয়ে যেতে বাধ্যও হয় পুলিশ। এমন পরিস্থিতিতে নিউইয়র্ক শহর কর্তৃপক্ষ গৃহহীনদের জন্য একটি পাইলট প্রকল্পের আওতায় আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ করছে। অনেকগুলোর নির্মাণকাজ শেষও হয়েছে। পুলিশ ও আশ্রয় প্রকল্পের কর্মীরা এখন পাতালরেল স্টেশনগুলোতে গিয়ে গিয়ে গৃহহীন লোকজন বাছাই করছে।
নিউইয়র্ক শহর কর্তৃপক্ষ ও এনওয়াইপিডি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, পাতালরেলে গৃহহীনদের ছড়াছড়ি উপদ্রব মনে হলেও সেটিকে অপরাধ হিসেবে দেখার সুযোগ নেই। স্টেশন বা ট্রেনের বগিতে ঘুমিয়ে থাকাটা স্বাভাবিক চোখে আইন বিরুদ্ধ হলেও এদের ক্ষেত্রে সেই একই মানদণ্ডে বিচার করতে গেলে সমস্যার সমাধান হবে না। গৃহহীনদের থাকার জায়গা নেই বলেই এই সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে, গৃহহীনদের থাকার জন্য বিকল্প জায়গা তৈরি করে, সেখানে সুন্দরভাবে যাওয়ার প্রস্তাব দিচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
এই সুন্দরভাবে বলার একটা রাস্তা হলো কফি অফার করা। পুলিশ ও আশ্রয় প্রকল্পের কর্মীরা গৃহহীন ঘুমন্ত মানুষগুলোকে জাগিয়ে বলছে, ‘হাই/হ্যালো, নিন, কফি খান।’ কফিতে চুমুক দিয়ে লোকটির একটু চনমনে ভাব এলেই কর্মীদের প্রস্তাব, ‘আপনাদের জন্য আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে; চলুন।
এখানে এইভাবে ঘুমোলে যাত্রীদের ভোগান্তি হচ্ছে। সেটি বুঝে আশ্রয় প্রকল্পকে সহায়তা করুন।’
মোটকথা, ‘মশায়, কফি শেষ করে আশ্রয়কেন্দ্রর পথ ধরুন। আমাদের উদ্ধার করুন।’