Thank you for trying Sticky AMP!!

সালমান রুশদি অস্ত্রোপচারের পর ভেন্টিলেশনে, কথা বলতে পারছেন না

ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক সালমান রুশদি

নিউইয়র্কে একটি অনুষ্ঠানে ছুরিকাঘাতের পর ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক সালমান রুশদির শরীরে অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়েছে। তিনি ভেন্টিলেশনে (কৃত্রিম উপায়ে শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার প্রক্রিয়া) আছেন। কথা বলতে পারছেন না। তাঁর এক কর্মকর্তার বরাতে বিবিসির প্রতিবেদনে এসব তথ্য দেওয়া হয়েছে।  

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, অ্যান্ড্রু ওয়াইলি নামের সালমান রুশদির ওই কর্মকর্তা এক বিবৃতিতে বলেছেন, সালমান রুশদি একটি চোখ হারাতে পারেন। তিনি বলেন, রুশদিকে নিয়ে ‘ভালো খবর নেই।’ অ্যান্ড্রু ওয়াইলি বলেন, সালমান রুশদি সম্ভবত একটি চোখ হারাতে পারেন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, বুকারজয়ী ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক সালমান রুশদিকে ১০ থেকে ১৫ বার আঘাত করেছেন হামলাকারী।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে শিটোকোয়া ইনস্টিটিউটের মঞ্চে সালমান রুশদির ভাষণ শুরুর আগমুহূর্তে তাঁর ওপর হামলা হয়। অনুষ্ঠানস্থলে তখন উপস্থিত ছিলেন প্রায় আড়াই হাজার দর্শক। হামলার সময় তাৎক্ষণিকভাবে অনেকে ঠিক কী ঘটছে, তা বুঝতে পারছিলেন না। সালমান রুশদি মেঝেতে গড়িয়ে পড়ার পর দর্শকদের কেউ কেউ তাঁর কাছে ছুটে গেছেন।

ঘটনার সময় দর্শকসারিতে ছিলেন রাব্বি চার্লস সাভেনর নামের এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, ‘ওই ব্যক্তি (হামলাকারী) দৌড়ে মঞ্চে উঠে যান এবং রুশদিকে আঘাত করতে শুরু করেন।

মার্কিন একটি বার্তা সংস্থার প্রতিবেদকের বরাতে এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, সালমান রুশদিকে ১০ থেকে ১৫ বার আঘাত করা হয়েছে।

একটি সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সাভেনর বলেন, ‘প্রথমে ভাবছিলাম কী চলছে? এরপর কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে পুরোপুরি স্পষ্ট হয় যে তাঁকে পেটানো হচ্ছে।’ সাভেনরের মতে, প্রায় ২০ সেকেন্ড ধরে হামলা চলেছে।

কাথলিন জোন্স নামের আরেক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, হামলাকারী কালো রঙের পোশাক পরা ছিলেন। তাঁর মুখে কালো মুখোশ ছিল।

ঘটনার সময় দর্শকসারিতে ছিলেন কাথলিন। তিনি বলেন, ‘আমরা ভাবছিলাম এটি হয়তো অভিনয়। এ লেখককে ঘিরে যে এখনো অনেক বিতর্ক আছে, সেটাই হয়তো দেখানোর চেষ্টা চলছে। তবে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই প্রমাণিত হয়, যা ভাবছি তা ঠিক নয়।’

একটি মার্কিন বার্তা সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়, হামলার কিছুক্ষণের মধ্যেই সালমান রুশদি মেঝেতে গড়িয়ে পড়েন। হামলাকারী তখন থেমে যান।

কয়েকজন লোক তখন সালমান রুশদিকে ঘিরে ফেলেন এবং তাঁর পা ওপরের দিকে তুলে ধরেন। ধারণা করা হচ্ছে, রুশদির বুকে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টায় তাঁরা এমনটা করেছেন।

ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক সালমান রুশদি ২০ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন। ১৯৮১ সালে ‘মিডনাইট’স চিলড্রেন’ নামক বইয়ের জন্য বুকার পুরস্কার জেতেন তিনি। তবে ১৯৮৮ সালে তাঁর চতুর্থ বই ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’-এর জন্য তাঁকে ৯ বছর লুকিয়ে থাকতে হয়েছিল। যুক্তরাজ্যে বসবাসকালে বেশির ভাগ সময় তাঁকে সরকারের সুরক্ষা নিয়ে থাকতে হয়েছে। ‘স্যাটানিক ভার্সেস’ উপন্যাসে ইসলাম ধর্মকে অবমাননা করা হয়েছে বলে মনে করেন মুসলিমরা। এটি প্রকাশের পর থেকে সালমান রুশদি হত্যার হুমকি পেয়ে আসছিলেন। বইটি প্রকাশের এক বছর পর ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লা আলী খামেনি সালমান রুশদির মৃত্যুদণ্ডের ফতোয়া জারি করেন। সেই সঙ্গে তাঁর মাথার দাম হিসেবে ৩ মিলিয়ন (৩০ লাখ) ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেন।

সাহিত্যে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ২০০৭ সালে সালমান রুশদিকে নাইট উপাধি দেন ব্রিটিশ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ।