এপস্টেইন–সংক্রান্ত নথির কিছু পৃষ্ঠা কালো রং দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে
এপস্টেইন–সংক্রান্ত নথির কিছু পৃষ্ঠা কালো রং দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে

এপস্টেইন–সংক্রান্ত নতুন নথি প্রকাশ, ক্লিনটনের তথ্য সামনে টেনে কী করতে চাইছেন ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের কুখ্যাত যৌন নিপীড়ক প্রয়াত জেফরি এপস্টেইন-সংক্রান্ত কয়েক হাজার নথি প্রকাশ করেছে মার্কিন বিচার বিভাগ। এসব নথিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নাম খুব কমই উল্লেখ করা হয়েছে। তবে সেখানে সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের নাম উল্লেখজনকভাবে উঠে এসেছে।

ট্রাম্পের নাম উল্লেখ না থাকার বিষয়টি বিশেষভাবে উল্লেখজনক। কারণ, এর আগে এপস্টেইন-সংক্রান্ত যেসব নথি প্রকাশ পেয়েছিল, সেগুলোতে ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্কিত ছবি ও কাগজপত্র দেখা গিয়েছিল; যেমন চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বিচার বিভাগ প্রথম দফায় এপস্টেইন-সংক্রান্ত যেসব নথি প্রকাশ করে, তাতে এপস্টেইনের ব্যক্তিগত বিমানের যাত্রীদের তালিকা অন্তর্ভুক্ত ছিল। সেখানে ট্রাম্পের নামও দেখা গেছে।

গত নভেম্বর মাসে কংগ্রেসে পাস হওয়া এক আইনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে আংশিকভাবে নতুন নথিগুলো প্রকাশ করা হয়েছে। ওই আইনে এপস্টেইন–সংক্রান্ত সব নথি প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদিও রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অনেক দিন ধরেই নথিগুলো গোপন করে রাখার চেষ্টা করছিলেন।

গত নভেম্বর মাসে কংগ্রেসে পাস হওয়া এক আইনের সঙ্গে সংগতি রেখে আংশিকভাবে নতুন নথিগুলো প্রকাশ করা হয়েছে। ওই আইনে এপস্টেইন–সংক্রান্ত সব নথি প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদিও রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অনেক দিন ধরেই নথিগুলো গোপন করে রাখার চেষ্টা করছিলেন।

নতুন নথিগুলোতে আসলে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আছে, তা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এপস্টেইনের মৃত্যুর পর থেকে বিভিন্ন সময়ে তাঁর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন নথি প্রকাশ করা হয়েছে। ২০১৯ সালে কারাগারে এপস্টেইনের মৃত্যু হয়। একে আত্মহত্যা বলে রায় দেওয়া হয়েছিল।

এপস্টেইন-সংক্রান্ত বহু নথি আগেই প্রকাশ করা হয়েছে। গতকাল নতুন প্রকাশিত নথিগুলোর অনেক তথ্য অবশ্য ঢেকে রাখা হয়েছে। ১০০ বা এরও বেশি পৃষ্ঠার কয়েকটি নথির অনেক তথ্য কালো কালি দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। বিচার বিভাগ বলেছে, নতুন করে প্রকাশের জন্য তারা আরও হাজার হাজার পৃষ্ঠার নথি পর্যালোচনা করছে।

সাবেক প্রেসিডেন্টের দিকে মনোযোগ ঘুরিয়ে নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে চাইছে হোয়াইট হাউস। তারা (মার্কিন বিচার বিভাগ) যত পুরোনো ছবিই (এপস্টেইন সংশ্লিষ্ট) প্রকাশ করুক, এটি বিল ক্লিনটনের ব্যাপার নয়।
—অ্যাঞ্জেল উরেনা, বিল ক্লিনটনের ডেপুটি চিফ অব স্টাফ

এদিকে নথি প্রকাশের অল্পপরই যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী গতকাল শুক্রবার সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বেশ কয়েকটি লক্ষ্যবস্তুতে বিমান হামলা চালায়। সম্প্রতি সিরিয়ায় মার্কিন সেনা সদস্যদের ওপর এক হামলার ঘটনার প্রতিশোধ হিসেবে এ হামলা চালানো হয়।

নথিতে এপস্টেইন সম্পর্কিত কয়েকটি তদন্ত থেকে পাওয়া প্রমাণাদিসহ বিভিন্ন বিষয়ের উল্লেখ আছে। পাশাপাশি বিল ক্লিনটনের কিছু ছবি আছে। তবে এ নথিতে ট্রাম্পের ছবি বা তাঁর নাম উল্লেখ করা দলিলের সংখ্যা খুব কম বা নেই বললে চলে। যদিও ১৯৯০–এর দশক এবং ২০০০-এর দশকের শুরুর দিকে ট্রাম্প ও এপস্টেইনের মধ্যে বেশ ভালো বন্ধুত্ব ছিল। ২০০৮ সালে এপস্টেইনের বিরুদ্ধে আদালতের প্রথম রায় ঘোষণার আগে দুজনের সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যায়।

নথি প্রকাশের অল্প পরই যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী গতকাল শুক্রবার সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বেশ কয়েকটি লক্ষ্যবস্তুতে বিমান হামলা চালায়। সম্প্রতি সিরিয়ায় মার্কিন সেনা সদস্যদের ওপর এক হামলার ঘটনার প্রতিশোধ হিসেবে এ হামলা চালানো হয়।

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কোনো অপরাধের অভিযোগ আনা হয়নি। এপস্টেইনের অপরাধ সম্পর্কে কিছু জানার কথা তিনি বরাবরই অস্বীকার করে আসছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ ক্লিনটনের দিকে সবার মনোযোগ আকর্ষণ করার চেষ্টা করছেন। দুজন মুখপাত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন ছবি পোস্ট করেছেন, যেখানে ক্লিনটনকে এপস্টেইনের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের সঙ্গে দেখা যাচ্ছে।

ক্লিনটনের ডেপুটি চিফ অব স্টাফ অ্যাঞ্জেল উরেনা বলেছেন, সাবেক প্রেসিডেন্টের দিকে মনোযোগ ঘুরিয়ে নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে চাইছে হোয়াইট হাউস। তিনি আরও বলেন, ‘তারা যত পুরোনো ছবিই প্রকাশ করুক, এটি বিল ক্লিনটনের ব্যাপার নয়।’

গত মাসে ট্রাম্প বিচার বিভাগকে এপস্টেইনের সঙ্গে ক্লিনটনের সম্পর্কের বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। সমালোচকদের মতে, ট্রাম্প তাঁর নিজের সঙ্গে এপস্টেইনের সম্পর্কের বিষয়টি থেকে মানুষের দৃষ্টি সরানোর চেষ্টা করছেন।