সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী
ফাইল ছবি

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপো এলাকায় বিস্ফোরণের ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর সব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবেন। তদন্ত প্রতিবেদন বাস্তবায়নে জিরো টলারেন্স। এ ঘটনায় দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। আজ সোমবার বেলা তিনটার দিকে সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি এলাকার বিএম কনটেইনার ডিপো এলাকায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এই মুহূর্তে ক্ষতিগ্রস্তদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করে যাচ্ছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসেছি।’

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণের ঘটনায় দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। এত বড় ক্ষতি হয়েছে যে দেশের ভাবমূর্তির সঙ্গে ধাক্কা লেগেছে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুনঃ

আন্তর্জাতিকভাবে আমরা ব্যবসা-বাণিজ্য করি, সেটার অনেক ক্ষতি হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন বাস্তবায়নে আমরা জিরো টলারেন্স।’

এর আগে সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার পরপর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এক কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা এবং আহত ব্যক্তিদের ৫০ হাজার টাকা করে চিকিৎসার জন্য দেওয়া হয়েছে। শ্রম মন্ত্রণালয় থেকে নিহত ব্যক্তিদের ২ লাখ এবং আহত ব্যক্তিদের ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়।

প্রতিটি দুর্ঘটনার পর তদন্ত কমিটি হয়। কিন্তু কমিটির দেওয়া সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করা হয় না কেন, প্রশ্ন করা হলে সাংবাদিকদের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিটি দুর্ঘটনা থেকে আমরা শিক্ষা নিই। যেকোনো ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকার কাজ করে যাচ্ছে। বিএম কনটেইনার ডিপোতে নীতিমালা বাস্তবায়ন হয়েছিল কি না, ফায়ার সেফটি ছিল কি না, তা প্রতিবেদন পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

দুই প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী ছিলেন। তবে তিনি এ বিষয়ে কিছু বলেননি। তিন মন্ত্রী একসঙ্গে ঘটনাস্থলে আসেন।

গত শনিবার রাতে আগুনের পর বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার বিএম কনটেইনার ডিপোতে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪১ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার বিএম কনটেইনার ডিপোটি যৌথ বিনিয়োগে তৈরি। এই ডিপোতে বাংলাদেশের স্মার্ট গ্রুপের অংশীদারি রয়েছে। যে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড নামের রাসায়নিক পদার্থ থেকে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে, সেটিও স্মার্ট গ্রুপের আরেক প্রতিষ্ঠান আল রাজী কেমিক্যাল কমপ্লেক্সের। পোশাক, এলপিজি ও খাদ্যপণ্য খাতে বিনিয়োগ রয়েছে স্মার্ট গ্রুপের। এই কোম্পানির ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিএম কনটেইনার ডিপোর চেয়ারম্যান বার্ট প্রঙ্ক। ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে আছেন মোস্তাফিজুর রহমান। পরিচালক হলেন স্মার্ট জিনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুজিবুর রহমান। মুজিবুর সম্পর্কে মোস্তাফিজুরের ভাই। মুজিবুর রহমান চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ পদে আছেন। বিগত সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন তিনি। তবে তাতে সাড়া দেয়নি দল।