সাংবাদিক শফিউজ্জামানের বিরুদ্ধে সব অভিযোগ অবিলম্বে প্রত্যাহারের আহ্বান সিপিজের

সাংবাদিক শফিউজ্জামান রানা। ১২ মার্চ কারামুক্তির পর শেরপুর জেলা কারাগারের সামনেছবি: প্রথম আলো

সাংবাদিক শফিউজ্জামান রানার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে)।

একই সঙ্গে লালমনিরহাটে পাঁচ সাংবাদিককে হয়রানির ঘটনা তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।

সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় সোচ্চার বৈশ্বিক সংগঠন সিপিজে গতকাল বুধবার এই আহ্বান জানায়। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কভিত্তিক সংগঠনটির এই আহ্বান সিপিজের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন
সিপিজে
ছবি: সিপিজের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া

শফিউজ্জামান দেশ রূপান্তর পত্রিকার শেরপুরের নকলা উপজেলা সংবাদদাতা। গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনসহ অন্যান্য সূত্রের তথ্যমতে, একটি সরকারি প্রকল্পের তথ্য চেয়ে তিনি তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করেছিলেন। ৫ মার্চ একপর্যায়ে সরকারি কার্যালয়ে তাঁকে আটক করে পুলিশ। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে অসদাচরণের অভিযোগে তাঁকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তিনি এক সপ্তাহ কারাগারে ছিলেন। ১২ মার্চ তিনি জামিনে মুক্তি পান। তাঁর আপিলের ওপর শুনানির জন্য আগামী ১৬ এপ্রিল তারিখ ধার্য রয়েছে।

তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেছিলেন, তথ্য কমিশন ঘটনাটি তদন্ত করবে। প্রতিমন্ত্রী সিপিজেকে বলেছিলেন, কমিশনের তদন্ত প্রতিবেদনের একটি অনুলিপি তিনি ১৮ মার্চ পাবেন। তদন্ত প্রতিবেদনের ফলাফলের বিষয়ে মন্তব্যের জন্য সিপিজের পরবর্তী অনুরোধে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেননি।

আরও পড়ুন

অপর ঘটনার বিষয়ে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনসহ অন্যান্য সূত্রের তথ্যমতে, ১৪ মার্চ তথ্য সংগ্রহ করতে সাংবাদিক মাহফুজ সাজু লালমনিরহাট সদর উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়ে গিয়েছিলেন। সেখানে ভূমিসংক্রান্ত বিষয়ে শুনানির ভিডিও ধারণ করেন তিনি। একপর্যায়ে কার্যালয়ের কর্মচারীরা তাঁকে আটকে রাখেন। খবর পেয়ে লালমনিরহাট প্রেসক্লাবের চার সদস্য ঘটনাস্থলে যান। তাঁদেরও কার্যালয়ে আটকে রাখা হয়। পরে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ঘটনাস্থলে গিয়ে পাঁচ সাংবাদিককে মুক্ত করেন। অপর চার সাংবাদিক হলেন মাজহারুল ইসলাম বিপু, এস কে সাহেদ, নিয়ন দুলাল, লিয়াকত আলী।

লালমনিরহাটের ঘটনায় মন্তব্যের জন্য সিপিজের অনুরোধে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেননি তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী।

আরও পড়ুন

সিপিজের এশিয়া প্রোগ্রামের সমন্বয়কারী বেহ লিহ ই বলেন, সাংবাদিক শফিউজ্জামানকে প্রতিহিংসামূলকভাবে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় সরকারি তদন্তকে তাঁরা স্বাগত জানান। শুধু তথ্য চাওয়ার জন্য সাংবাদিকদের প্রতিহিংসার শিকার হওয়া উচিত নয়।

বেহ লিহ ই আরও বলেন, লালমনিরহাটে সরকারি কার্যালয়ে পাঁচ সাংবাদিককে আটকে রাখার বিষয়ে কর্তৃপক্ষের একটি স্বচ্ছ তদন্ত শুরু করা উচিত। সাংবাদিকেরা যাতে দায়মুক্তিসহ হয়রানির শিকার না হন, তা কর্তৃপক্ষের নিশ্চিত করা উচিত।