আপনারা কেন সন্তানদের খেয়াল রাখেন না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। ফাইল ছবি
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। ফাইল ছবি

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘ইদানীং কিশোর গ্যাংয়ের আবির্ভাব হয়েছে। তারা অপরাধ করলে তাদের জন্য যে আইন রয়েছে, তাদের সে আইনের মুখোমুখি হতে হবে।’

আজ শনিবার রাজধানীর মিরপুর স্টাফ কলেজের কনভেনশন হলে ‘মাদক সন্ত্রাস, শিশু নির্যাতন, ইভটিজিং, বাল্যবিবাহ এবং মুঠোফোনে ইন্টারনেটের অপব্যবহার প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন। বাংলাদেশ অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার্স কল্যাণ সমিতি এ আলোচনাসভার আয়োজন করে।

কিশোর গ্যাংয়ের ব্যাপারে অভিভাবকদের উদ্দেশে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা কেন আপনাদের সন্তানদের খেয়াল রাখেন না? কিশোরেরা কেন সন্ধ্যাবেলা বাইরে যায়? খেয়াল রাখতে হবে, তারা যেন সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে আসে।’

প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে শূন্য সহিষ্ণু নীতি নিয়ে সরকার কাজ করছে। মাদক সমাজকে ধ্বংস করে দেয়। এ প্রজন্মকে মাদকের হাত থেকে বাঁচাতে হবে। এ লক্ষ্যে সামাজিক আন্দোলনসহ সব ধরনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। মাদকের সরবরাহ বন্ধ করার জন্য বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও নিরাপত্তা বাহিনী তৎপর রয়েছে। যারা মাদকে আসক্ত হয়েছে, তারা যেন স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারে, সরকার সে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি মানুষের উপকারে আসছে। তবে ইদানীংকালে মানুষ মুঠোফোন, ফেসবুকে আসক্ত হয়ে পড়েছে। মুঠোফোনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে যে অপকর্ম করা হচ্ছে, তাকে ‘সোশ্যাল কোকেন সন্ত্রাস’ বলে অভিহিত করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, এ অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে হবে।

এ অনুষ্ঠানে রাজারবাগ পুলিশ লাইনস স্কুল, মিরপুরের শহীদ পুলিশ স্মৃতি স্কুল অ্যান্ড কলেজর শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। তাদের উদ্দেশে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সেলফোন দরকার আছে। কিন্তু যে জায়গাটা তোমাদের জন্য ক্ষতিকর, সেখানে যেও না।’

ইভটিজিং নিয়ে তিনি বলেন, ‘ইভটিজিং নিয়ন্ত্রণে আইন হয়েছে। এটা নিয়ন্ত্রণ করা গেছে। ইভটিজিংয়ের ব্যাপারে যখন খবর পাওয়া যাচ্ছে, তখনই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’ এ ব্যাপারে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটিকে দায়িত্ব নিতে হবে।’

আসাদুজ্জামান খান আরও বলেন, বাল্যবিবাহ রোধে আইন হয়েছে। বাল্যবিবাহ রোধে নিরাপত্তা বাহিনী সজাগ রয়েছে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার্স কল্যাণ সমিতিকে পরামর্শ দিতে বলা হয়েছে।

আজকের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার্স কল্যাণ সমিতির সভাপতি পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত মহাপরিদর্শক আবদুর রউফ। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ মইনুর রহমান চৌধুরী এবং পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক ও বর্তমানে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার পদে বদলি হওয়া মো. শফিকুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।