৭ টনের ট্রাকে সাড়ে ১৩ টন মাল বহন করছিলেন চালক রাজু

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে ট্রাকচালক রাজু আহমেদ
ছবি: সংগৃহীত

ধারণক্ষমতার প্রায় দ্বিগুণ মালামাল ট্রাকে পরিবহন করছিলেন চালক মো. রাজু আহমেদ ওরফে সিপন। টাল সামলাতে না পেরে তিনি ট্রাক তুলে দেন ময়মনসিংহের ত্রিশালে সড়ক পারাপারের অপেক্ষায় থাকা অন্তঃসত্ত্বা নারী, তাঁর স্বামী ও সন্তানের ওপর।

ট্রাকচালক রাজুকে গতকাল সোমবার ঢাকার অদূরে সাভার থেকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে আজ মঙ্গলবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে সংস্থাটি। সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন।

আরও পড়ুন
সড়কে জন্ম নেওয়া নবজাতক
ফাইল ছবি

গত শনিবার বিকেলে ত্রিশালে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের কোর্টভবন এলাকায় ট্রাকচাপায় নিহত হন উপজেলার রায়মনি গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম (৪২), তাঁর স্ত্রী রত্না বেগম (৩২) ও তাঁদের ৬ বছরের মেয়ে সানজিদা। ট্রাকচাপায় রত্না বেগমের মৃত্যুর সময় ভূমিষ্ঠ হয় এক নবজাতক। নবজাতক এখন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

দুর্ঘটনার পর ট্রাকটি জব্দ করে পুলিশ, তবে চালক পালিয়ে গিয়েছিলেন। গতকাল তাঁকে সাভার থেকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদ করে র‍্যাব।

জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে র‍্যাব জানায়, তারা কাগজপত্র পরীক্ষা করে দেখেছে, রাজুর ভারী যান চালানোর অনুমতি ছিল না। তাঁর মধ্যম সারির যান চালানোর একটি সনদ ছিল। এই সনদেরও মেয়াদ পেরিয়ে যায় ২০১৬ সালে।

র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন বলেন, ট্রাকটির ধারণক্ষমতা ছিল ৭ টন, কিন্তু দুর্ঘটনার সময় ট্রাকে সাড়ে ১৩ টন মালামাল ছিল।

আরও পড়ুন

র‍্যাব জানায়, রাজু ১১ জুলাই থেকে টানা পাঁচ দিন ট্রাক চালাচ্ছিলেন। ত্রিশালে দুর্ঘটনার দিন তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আম ও রাজশাহীর নৌহাটা থেকে আলু-পেঁয়াজ নিয়ে কিশোরগঞ্জের তাড়াইলে যাচ্ছিলেন।

র‍্যাব বলছে, চালক রাজু আগে জেল খেটেছেন। ২০০২ সালে যশোরের এক ট্রাকচালকের সহকারী ছিলেন তিনি। সে সময় এক দুর্ঘটনায় তাঁর বাঁ পা জখম হয়। এখনো তাঁর বাঁ পা অচল।

আরও পড়ুন

র‍্যাব জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে রাজু দাবি করেন, ত্রিশালে তাঁর ট্রাকটির পেছনে যাত্রীবাহী একটি বাস ছিল। বাসটি অনবরত হর্ন বাজাচ্ছিল। তিনি বাসটিকে জায়গা দিতে বাঁয়ে চাপানোর চেষ্টা করেন। এ সময় ব্রেক কাজ করছিল না ফলে তিনি নিয়ন্ত্রণ হারান।

সড়কের পাশে দাঁড়ানো পরিবারটিকে রাজু দেখতে পাননি বলে র‍্যাবের কাছে দাবি করেছেন।

র‍্যাব জানায়, ট্রাকের মালিক রাজশাহীর ব্যবসায়ী মনজুর। দুর্ঘটনার সময় ট্রাকচালক রাজুর সহকারী খায়রুল ঘুমাচ্ছিলেন।