‘মেরিনার কাজে প্রকৃত শিল্পীর অভিব্যক্তি দেখা যায়’
স্থপতি নাহাস আহমেদ খলিল বলেছেন, ‘মেরিনা তাবাশ্যুমের কাজে একজন প্রকৃত শিল্পীর অভিব্যক্তি দেখা যায়, যা নৈতিকভাবে শক্তিশালী ও সৎ। অভিব্যক্তিতে (এক্সপ্রেশন) সততা না থাকলে আমরা এগোতে পারব না।’
সম্প্রতি দ্বিতীয়বারের মতো স্থাপত্যে আগা খান পুরস্কার পান মেরিনা তাবাশ্যুম। এই পুরস্কারপ্রাপ্তি উদ্যাপন করতে গতকাল শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন নাহাস আহমেদ।
মেরিনা তাবাশ্যুম সম্পর্কে তাঁর শিক্ষক ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অব আর্কিটেকচারের চেয়ারপারসন জয়নব ফারুকি আলী বলেছেন, ‘স্থাপত্য মানুষের জীবন ও আধ্যাত্মিকতার সঙ্গে কী অসাধারণভাবে মিশে যায়, মেরিনা তাবাশ্যুম সেটার স্বাক্ষর রেখেছেন তাঁর ঢাকার দক্ষিণখানের বায়তুর রউফ মসজিদে। ২০১৬ সালে যখন মসজিদটির উদ্বোধনে যাই, তখন মসজিদটির মোয়াজ্জিনের কাছে জানতে চাই, এ মসজিদের কোন বিষয়টি আপনার সবচেয়ে ভালো লাগে। মোয়াজ্জিন বলেছিলেন, “আমার এখান থেকে আজান দিতে ভালো লাগে।”’
মেরিনা তাবাশ্যুমের কাজে একজন প্রকৃত শিল্পীর অভিব্যক্তি দেখা যায়, যা নৈতিকভাবে শক্তিশালী ও সৎ। অভিব্যক্তিতে (এক্সপ্রেশন) সততা না থাকলে আমরা এগোতে পারব না।স্থপতি নাহাস আহমেদ খলিল।
গতকাল ‘বিটুইন ইরোজন অ্যান্ড ইমার্জেন্স’ শীর্ষক অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে আর্কিকানেক্টের সহযোগিতায় সিরামিক বাংলাদেশ ম্যাগাজিন। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন আর্কিকানেক্টের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্থপতি জালাল আহমেদ।
মেরিনা তাবাশ্যুম বলেন, ‘মসজিদের প্রকল্পটি ছিল ব্যক্তিগত। নানির দান করা জায়গায় ২০০৬ সালে এ মসজিদটির ডিজাইন শুরু করি। এটিকে শুধু মসজিদ হিসেবে না দেখে পারিপার্শ্বিকতার সঙ্গে যুক্ত করে মোর দ্যান মস্ক (মসজিদের চেয়েও বেশি কিছু) হিসেবে দেখার চেষ্টা করেছি।’
খুদিবাড়ি নিয়ে এবারের আগা খান পুরস্কার পাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশে চর একটি ইন্টারেস্টিং ল্যান্ডেস্কেপ। ভূমিহীন মানুষদের জন্য চর একটি ভরসার জায়গা। এখানে হুটহাট বন্যা হানা দেয়। ফলে এরা স্থানচ্যুত জনগোষ্ঠী। যাঁরা সামর্থ্যবান, তাঁদের স্থানান্তর করা যায়, তাঁরা ঘর বানিয়ে নিতে পারেন। কিন্তু সহায়সম্বলহীন মানুষের পক্ষে এগুলো করা সম্ভব নয়। কারণ, এ রকম ঘর করতে কমপক্ষে দুই লাখ টাকা লাগে।
সমাপনী বক্তব্যে বাংলাদেশ সিরামিক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি মইনুল ইসলাম বলেন, মেরিনা তাবাশ্যুমের প্রতিটি কাজই দারুণ। খুদিবাড়ি তাঁর যুগোপযোগী আবিষ্কার। নদীভাঙনের শিকার মানুষের জীবনে একটি দারুণ আশ্রয় তাঁর আবিষ্কৃত এ ঘর।
স্থপতি মৌসুমি আহমদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন স্থপতি ফুয়াদ হাসান মল্লিক।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিসিএমইএর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট, এক্স-মোনালিসা সিরামিকস গ্রুপের অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর মামুনুর রশিদ এফসিএমএ, বিসিএমইএর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট, এক্সিলেন্ট টাইলসের ম্যানেজিং ডিরেক্টর আবদুল হাকিম, বিসিএমইএর সাধারণ সম্পাদক ও সিরামিক বাংলাদেশ ম্যাগাজিনের প্রধান সম্পাদক ইরফান উদ্দিন।