শেখ কামাল ছিলেন বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী

শেখ কামাল
ফাইল ছবি

শেখ কামাল বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী একজন মানুষ ছিলেন। তিনি ছিলেন একটি অনুপ্রেরণার নাম। তাঁর মধ্যে ছিল অসাধারণ নেতৃত্বের গুণাবলী।

বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ পুত্র ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামালের ৭৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার বিকেলে এক স্মরণসভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই স্মরণসভা আয়োজন করে।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, ‘শেখ কামাল ঢাকা কলেজে আর আমি নটরডেমে পড়তাম। আমরা ধানমন্ডিতে থাকতাম। তাই আমাদের নিয়মিত দেখা হত। শেখ কামাল রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় ছিলেন। তাই পরিস্থিতি বোঝার জন্য আমরা শেখ কামালের দিকে তাকিয়ে থাকতাম। তবে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের পর মার্চের ২২-২৩ তারিখের দিকে আমরা বুঝতে পারলাম কি ঘটতে যাচ্ছে।’

এ সময় সালমান এফ রহমান আরও বলেন, ‘স্বাধীনতার পর শেখ কামাল আমাকে আবাহনী প্রতিষ্ঠা করার ইচ্ছার কথা জানালেন। তিনি চেয়েছিলেন মোহামেডানের চেয়ে ভালো ক্লাব করতে হবে। কারণ, প্রতিযোগিতা থাকলে দেশে খেলার মান আরও ভালো হবে। তারপর আমরা আবাহনী ক্লাব শুরু করলাম।’

সালমান এফ রহমান বলেন, ‘স্বাধীনতার পর দেশে ব্যবসায় বাণিজ্যের অনেক সুযোগ আসে। তখন শেখ কামালকে দেশি–বিদেশি ব্যবসায়ীরা নানা প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তবে তিনি কোনো সুবিধা নেননি। আজ শেখ কামাল বেঁচে থাকলে দেশ অনেক দূর এগিয়ে যেত।’

ভিডিও বার্তায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘শেখ কামাল ছিলেন দেশের ইতিহাসের সফল ক্রীড়া সংগঠক ও বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী একজন মানুষ। মাত্র ২৬ বছরের জীবনে দেশকে তিনি অনেককিছু দিয়ে গেছেন। সর্বোচ্চ ক্ষমতার বলয়ের খুব কাছে থেকেও তিনি ছিলেন নিজ গুণে উজ্জ্বল। মুক্তিবাহিনীর সুদক্ষ নেতৃত্ব তৈরির লক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধের ১১টি সেক্টরের মধ্য থেকে মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে নির্বাচিত ৬১ জনের মধ্যে শেখ কামাল ছিলেন অন্যতম। তিনি মুক্তিযুদ্ধের গেরিলা বাহিনীর সংগঠনে ও তাঁদের প্রশিক্ষণে অসামান্য অবদান রেখেছিলেন।’

আরও পড়ুন

সভাপতির বক্তব্যে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় শেখ কামালের বয়স ছিল মাত্র ২১ বছর। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাঁর পিতাকে গ্রেপ্তার করে অজানা জায়গায় নিয়ে যাওয়ার পরেও তিনি (শেখ কামাল) সুকৌশলে বাড়ি থেকে লুকিয়ে চলে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তিনি দেশের জন্য, মুক্তিযুদ্ধের জন্য তাঁর পরিবারের অন্য সদস্যদের একপ্রকার অনিশ্চয়তার মধ্যে রেখেই মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন।’

শেখ কামালের নির্মোহ ও সাধারণ জীবনযাপনের কথা উল্লেখ করে শাহরিয়ার আলম আরও বলেন, ‘শিশুকাল থেকে ২৬ বছর বয়স পর্যন্ত শেখ কামালের জীবনের প্রতিটি অধ্যায় ছিল খুবই সাধারণ। একজন সাধারণ শিশু, সাধারণ একজন তরুণ হিসেবেই আমরা তাঁকে দেখেছি।’

আরও পড়ুন

সভায় নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার সাবেক ব্যুরো প্রধান এম শফিকুল করিম বলেন, ‘শেখ কামাল আমার সহপাঠী ছিলেন। তিনি রাষ্ট্রপতির ছেলে হলেও অহংকার ছিল না। তাঁর আচরণ ছিল সাধারণ মানুষের মতো। তবে তিনি ছিলেন খুব সাহসী একজন মানুষ।’

স্মরণসভায় পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘শহীদ শেখ কামাল এক অনুপ্রেরণার নাম। তাঁর মধ্যে অসাধারণ নেতৃত্বের গুণাবলী ছিল। তিনি সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়াঙ্গনে বিশেষ অবদান রেখে গেছেন। আমরা জন্মদিনে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানাই।’

আরও পড়ুন