জাহাঙ্গীরের মা জায়েদা খাতুন জনসমক্ষে এসে বললেন, ‘ছেলের জন্য শেষ পর্যন্ত লড়ে যাব’

মনোনয়নপত্র সংগ্রহ বা জমা দেওয়া থেকে শুরু করে এত দিন জায়েদা খাতুনকে সামনে আসতে দেখা না গেলেও আজ দুপুরে প্রথমবারের মতো জনসমক্ষে আসেন তিনি
ছবি: প্রথম আলো

দুপুর সাড়ে ১২টা। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বরখাস্ত মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের বাসার ভেতরে-বাইরে মিলিয়ে তখন কয়েক শ কর্মী-সমর্থকের জটলা। তবে সবাই অপেক্ষা করছেন জাহাঙ্গীরের মা ও সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মেয়র পদপ্রার্থী জায়েদা খাতুনকে দেখবেন বলে। মিনিট পাঁচেক পর জাহাঙ্গীরের হাত ধরে দোতলা থেকে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামলেন জায়েদা। সঙ্গে সঙ্গে কেউ কেউ ছুটে গেলেন জায়েদার কাছে। কেউ আবার আবেগাপ্লুত হয়ে জায়েদার পা ছুঁয়ে সালাম করলেন।

আরও পড়ুন

আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন চেয়ে আবেদন করেছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। কিন্তু দল থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লা খানকে। এরপর ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হিসেবে মেয়র পদে মনোনয়নপত্র জমা দেন জাহাঙ্গীর আলম। সঙ্গে মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মা জায়েদা খাতুনের মনোনয়নপত্রও জমা দেন তিনি। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ে ঋণখেলাপি হওয়ায় জাহাঙ্গীরের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যায়। তবে তাঁর মা জায়েদা খাতুনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়।

মনোনয়নপত্র সংগ্রহ বা জমা দেওয়া থেকে শুরু করে এত দিন জায়েদা খাতুনকে সামনে আসতে দেখা যায়নি। এর মধ্যে আজ দুপুরে প্রথমবারের মতো জনসমক্ষে হাজির হন তিনি। তাঁর সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য আজ সকাল থেকেই জাহাঙ্গীরের বাসার সামনে ভিড় করেন কয়েক শ কর্মী-সমর্থক। আজ সকাল থেকে জাহাঙ্গীরের বাসায় অবস্থান করে এই চিত্র দেখা যায়। দুপুর ১২টা ৩৫ মিনিটের দিকে জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে বাড়ির নিচতলায় নামেন জায়েদা খাতুন। এ সময় উপস্থিত কর্মী-সমর্থকেরা তাঁকে ঘিরে ধরেন। এরপর জাহাঙ্গীর আলমের হাত ধরে বাড়ির সামনের অংশ ঘুরে দেখেন জায়েদা। তবে কোনো কর্মী-সমর্থকের সঙ্গে তাঁকে সেভাবে কথা বলতে দেখা যায়নি।

আরও পড়ুন

প্রার্থিতার বিষয়ে জায়েদা খাতুন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার ছেলে নগরে বাসিন্দাদের জন্য কাজ করে যাচ্ছিল। নগরের রাস্তাঘাটের অনেক উন্নয়ন করছে। কিন্তু কিছু মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে, ষড়যন্ত্র করে আমার ছেলেকে বসানো হইছে। আমার ছেলের বিরুদ্ধে অন্যায় করা হয়েছে। আমি এই অন্যায়ের প্রতিবাদে মাঠে নেমেছি। নগরের ৫৭টা ওয়ার্ডের মানুষ আমাকে কতটা ভালোবাসে, তা আমি ভোটের মাধ্যমে প্রমাণ করতে চাই। আমি ছেলের জন্য শেষ পর্যন্ত লড়ে যাব।’

আরও পড়ুন

২৫ মে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। জায়েদা খাতুনসহ এখন পর্যন্ত মেয়র পদে প্রার্থী আছেন ৯ জন। এদিকে ঋণখেলাপির দায়ে মনোনয়ন বাতিল করায় রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীর আলম বিভাগীয় কমিশনার কাছে আপিল করেন। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলামও ঋণখেলাপির কারণে জাহাঙ্গীরের মনোনয়নপত্র বাতিল করে রিটার্নিং কর্মকর্তার দেওয়া আদেশ বহাল রাখেন। কাল রোববার উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথা আছে জাহাঙ্গীরের।