স্বতন্ত্র প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচন ভন্ডুলের অপচেষ্টার অভিযোগ নৌকার প্রার্থীর

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ফরিদপুর পৌরসভার মেয়র অমিতাভ বোস। পরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন শামীম হক। বুধবার দুপুরে ফরিদপুর প্রেসক্লাবেছবি: প্রথম আলো

ফরিদপুর-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা এ কে আজাদের (ঈগল) বিরুদ্ধে নির্বাচন ভন্ডুলের অপচেষ্টার অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী শামীম হক। আজ বুধবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে ফরিদপুর প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে জেলা আওয়ামী লীগ।

সংবাদ সম্মেলনে শামীম হক স্বাক্ষরিত লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ফরিদপুর পৌরসভার মেয়র অমিতাভ বোস। পরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন শামীম হক।

আরও পড়ুন

লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করা হয়, এ কে আজাদ স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করেছেন এবং দলের সভাপতি শেখ হাসিনাকে চ্যালেঞ্জ করার অপচেষ্টা চালিয়েছেন। ১৯ ডিসেম্বর মামুদপুর, মোল্লা বাজার, বটতলায় ঈগল প্রতীকের সন্ত্রাসী বাহিনী তিনজনকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে; ২৫ ডিসেম্বর ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর গ্রামের কামরুল ও সেলিমকে কুপিয়ে জখম করা হয়; ২৪ ডিসেম্বর ঈগল প্রতীকের বাবু ও বাবলু বাইপাস সড়কে নৌকা প্রতীকের পোস্টার-ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন। ঈগল প্রতীকের সমর্থকেরা নিজেদের মধ্যে হানাহানি করে নৌকা প্রতীকের সমর্থকদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে বলেও অভিযোগ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, আওয়ামী লীগের প্রার্থী শামীম হকের ভাবমূর্তি নষ্ট ও নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে দেশি-বিদেশি চক্রান্তকারীদের অংশ হিসেবে শামীম হকের নাগরিকত্বসহ বিভিন্ন যোগ্যতা নিয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।

আরও পড়ুন

লিখিত বক্তব্যের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন শামীম হক। তিনি বলেন, সাংবিধানিক ধারাবাহিকতার জন্য নির্বাচন করতেই হতো। নির্বাচনে উনি (এ কে আজাদ) স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। নিজের ভরাডুবির আশঙ্কায় এখন নানা কূটকৌশল করে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘আজাদ আমার ছোট ভাই। সে যখন আমার নাগরিকত্ব নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার সামনে প্রশ্ন তোলে, তখন আমি বলেছিলাম, এভাবে কাদা ছোড়াছুড়ি না করে আসো আমরা একসঙ্গে নির্বাচন করি। তুমি নির্বাচিত হলে আমি তোমার গলায় ফুলের মালা পরিয়ে দেব। কিন্তু এ কে আজাদ তা না করে একের পর এক আমাকে আদালতে টেনে নিয়ে গেছে। আমার সময়ক্ষেপণ করেছে।’

শামীম হক বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের রায় আমার পক্ষে আসায় গণজাগরণ দেখে ভয় পেয়ে গেছেন এ কে আজাদ। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের পদধারী, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, বীর মুক্তিযোদ্ধারা সবাই আমার পক্ষে। এ অবস্থায় মানুষ ভুল করতে পারেন না, তাঁরা উন্নয়নের স্বার্থে উন্নয়নের পক্ষে নৌকায় ভোট দেবেন।’

স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে আজাদ কয়েকজনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে সাংবাদিকেরা জানতে চাইলে শামীম হক বলেন, ‘শহীদুল সন্ত্রাসী হলে বারবার নির্বাচিত হয় কেন, মোবাররক খলিফা নির্বাচিত কাউন্সিলর, গোলাম নাসির ও তোফাজ্জেল বড় সংগঠক। তাঁরা থাকলে এ কে আজাদ জিততে পারবে না। এ জন্য এলাকায় যাঁরা জনপ্রিয়, তাঁদের চরিত্র হননের জন্য এসব অভিযোগ করা হচ্ছে।’

এদিকে দুপুরে ফরিদপুরের ঝিলতুলী এলাকায় নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে আজাদ। সংবাদ সম্মেলনে তিনি শামীম হকের বিরুদ্ধে নির্বাচনী এলাকাকে সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য বানানোর অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেছেন, পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে ঠেকেছে যে নির্বাচনের মাঠে টিকে থাকা কঠিন হয়ে গেছে।