জয়পুরহাটে মাটি খুঁড়ে খুলিসহ হাড়গোড় উদ্ধারের ঘটনায় দম্পতি গ্রেপ্তার

হাতকড়া
প্রতীকী ছবি

জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলায় গোসলখানা নির্মাণের জন্য মাটি খোঁড়ার সময় একজনের মাথার খুলিসহ হাড়গোড় উদ্ধারের ঘটনায় করা মামলায় এক দম্পতিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বগুড়া সদর উপজেলার পীরগাছা এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করেন র‍্যাব-৫ জয়পুরহাট ক্যাম্পের সদস্যরা। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হলো।

গ্রেপ্তার দুজন হলেন রেজ্জাকুল ওরফে রাজ্জাক (৪৩) ও তাঁর স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন (৩৮)। তাঁরা বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার গোপীনাথপুর এলাকার বাসিন্দা। কয়েক মাস ধরে তাঁরা পাঁচবিবি উপজেলার ধরঞ্জী গ্রামের সামছুল ইসলামের বাড়ি ভাড়া নিয়ে বসবাস করছিলেন।

ধরঞ্জী বাজার এলাকার সামছুল ইসলামের বাড়িতে ৯ সেপ্টেম্বর গোসলখানা নির্মাণের জন্য মাটি খননের সময় মানুষের হাড়গোড় বেরিয়ে আসে। পরে রাত ৯টার দিকে মাথার খুলিসহ বস্তাবন্দী হাড়গোড় উদ্ধার করে পুলিশ। হাড়গোড়ের সঙ্গে থাকা পরনের কাপড় দেখে গ্রামের বাসিন্দা গোলাপী বানু সেটি তাঁর ছেলে নাঈম হোসেনের (২৩) লাশ বলে শনাক্ত করেন। প্রায় পাঁচ মাস আগে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয়েছিলেন নাঈম। ঘটনার দিন রাতেই বাড়ির মালিক সামছুল ইসলামকে আটক করা হয়েছিল। পরে তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ।

আরও পড়ুন

র‍্যাব-৫ ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক সহকারী পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম বলেন, মাথার খুলি ও হাড়গোড় উদ্ধারের পর রেজ্জাকুল ও তাঁর স্ত্রী পালিয়েছিলেন। তাঁদের বগুড়া সদর উপজেলার পীরগাছা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাড়িটির মালিক সামছুল ইসলাম দুটি বিয়ে করেছেন। তিনি গ্রামের পুরোনো বাড়িতে দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে থাকেন। নতুন বাড়িতে প্রথম স্ত্রী রেনুকা এক সন্তান নিয়ে থাকেন। প্রায় এক বছর আগে সামছুল তাঁর নতুন বাড়ি রেজ্জাকুল নামের বগুড়ার শিবগঞ্জ এলাকার এক ব্যক্তিকে ভাড়া দেন। স্ত্রী, তিন ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে রেজ্জাকুল সেখানে বসবাস করে আসছেন। রেজ্জাকুল ধরঞ্জী গ্রামের কয়েকজন ব্যক্তির ১০ থেকে ১৫ বিঘা জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করছিলেন। নাঈমের নানাবাড়ি এলাকায় রেজ্জাকুল কলার বাগান করতেন। রেজ্জাকুল ও তাঁর স্ত্রী সেই কলাবাগান পরিচর্যা করতে আসতেন। তখন রেজ্জাকুলের সঙ্গে নাঈমের সখ্য তৈরি হয়। রেজ্জাকুলের ভাড়া বাড়িতে যাওয়া-আসা করতেন নাঈম। রেজ্জাকুলের স্ত্রীর সঙ্গে নাঈমের সম্পর্ক তৈরি হয়। আর এ ঘটনা থেকেই এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল হক বলেন, নাঈম হোসেন ২২ এপ্রিল ধরঞ্জী বাজারে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি। এই ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছিল। নাঈম হোসেনকে হত্যা পর লাশ গুম করতে মাটি খুঁড়ে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। গ্রেপ্তার আসামিদের আদালতে পাঠিয়ে পুলিশি হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবেদন জানানো হবে।

আরও পড়ুন