বিক্রির সময় ট্রাকসহ সরকারি বিনা মূল্যের চার টন পাঠ্যবই জব্দ

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় মোয়াজ্জেমপুর ছালেহিয়া আলিম মাদ্রাসা থেকে কেজি দরে এসব সরকারি পাঠ্যবই বিক্রি করা হয়
ছবি: প্রথম আলো

পটুয়াখালীর কলাপাড়ার একটি মাদ্রাসায় রাতের আঁধারে কেজি দরে বিক্রি করা চার টন সরকারি বিনা মূল্যের পাঠ্যবই জব্দ করা হয়েছে। গোপন মাধ্যমে খবর পেয়ে গতকাল রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার মহিপুর ইউনিয়নের মোয়াজ্জেমপুর ছালেহিয়া আলিম মাদ্রাসায় এ অভিযান চালান উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কৌশিক আহমেদ। বিক্রীত বই ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়ার সময় মাদ্রাসাসংলগ্ন সড়ক থেকে জব্দ করা হয়।

আরও পড়ুন

এলাকাবাসী এসব পাঠ্যবই বই বিক্রির জন্য মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এ কে এম আবুবকর সিদ্দিক ও বাংলা বিষয়ের প্রভাষক মো. হাসানকে দায়ী করেছেন। তাঁরা জানান, জব্দ করা বইগুলো ঝিনাইদহের ভাঙারি ব্যবসায়ীদের কাছে ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হয়।

কলাপাড়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) কৌশিক আহমেদ জানান, রাতের আঁধারে সরকারি বই বিক্রি হচ্ছে, এমন খবর পেয়ে তাঁরা বইগুলো জব্দ করে মহিপুর থানার হেফাজতে রেখেছেন।

আরও পড়ুন

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জব্দ করা বইগুলো মাধ্যমিক স্তরের বাংলা, ইংরেজি, গণিত, সাধারণ বিজ্ঞান, বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচিতি, ইসলাম ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা, হিন্দু ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা, ক্যারিয়ার শিক্ষা, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, চারুপাঠ, কৃষি শিক্ষা, আনন্দপাঠ, গার্হস্থ্য অর্থনীতিসহ বিভিন্ন বিষয়ের। বইগুলোর ২০২১ ও ২০২২ শিক্ষাবর্ষের বলে জানা গেছে।

রোববার রাতে স্থানীয় প্রশাসন পাঠ্যবইসহ এই ট্রাকটি জব্দ করেছে
ছবি: সংগৃহীত

কলাপাড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রতিবছর সরকারি বই শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ করার জন্য দেওয়া হয়। পাঠ্যবই অতিরিক্ত থাকলে তা জমা দিতে হয়। সরকারি পাঠ্যবই বিক্রি করা দণ্ডনীয় অপরাধ। মোয়াজ্জেমপুর ছালেহিয়া মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আবদুল মালেক আকন্দ বলেন, মাদ্রাসার পুরাতন কাগজ বিক্রির অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। ব্যবস্থাপনা কমিটিকে অন্ধকারে রেখে পাঠ্যবই বিক্রি করা হয়েছে। এ ঘটনার জন্য মাদ্রাসার অধ্যক্ষসহ জড়িত শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।

আরও পড়ুন

মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এ কে এম আবুবকর সিদ্দিকের সঙ্গে কথা বলার জন্য তাঁর মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হয়। তাঁর ফোন বন্ধ থাকায় এ বিষয়ে তাঁর বক্তব্য জানা যায়নি।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, সরকারি পাঠ্যবই অব্যবহৃত থাকলে সরকারি গুদামে জমা দিতে হয়। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ কেন বইগুলো বিক্রি করেছে, তা তদন্ত করা হচ্ছে। আইনের কোনো ব্যত্যয় হলে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরও পড়ুন