সিংড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলোয়ার হোসেনকে মারধর ও অপহরণের কাজে ব্যবহৃত কালো রঙের হায়েস মাইক্রোবাসটি জব্দ করেছে পুলিশ। পরে ওই মাইক্রোবাসে তল্লাশি চালিয়ে অভিযুক্ত প্রার্থী লুৎফুল হাবীবের লিফলেট, প্রচারপত্রসহ নানা সরঞ্জাম ও অস্ত্র পাওয়া যায়।
আজ শনিবার সন্ধ্যায় সিংড়ার শেরকোল ইউনিয়নের দুর্গম চকপুর গ্রামের আতাউর রহমানের বাড়ি থেকে মাইক্রোবাসটি জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আতাউর রহমানকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
নাটোরের পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সন্ধ্যায় চকপুরের একটি বাড়ি থেকে মাইক্রোবাসটি জব্দ করা হয়েছে। মাইক্রোবাসটি একটি ঘরের মধ্যে জ্বালানির লাকড়ি দিয়ে ঢেকে রাখা ছিল। বাড়িটি লুৎফুল হাবীবের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের একজন ব্যবস্থাপকের বলে জানা যায়। গ্রেপ্তার আতাউরকে মাইক্রোবাসের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
গত সোমবার বিকেল চারটার কিছুক্ষণ পর নাটোর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের ভেতর থেকে দুর্বৃত্তরা দেলোয়ার হোসেনকে মারধর করতে করতে একটি কালো মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। এর পাঁচ ঘণ্টা আগে তাঁর ভাইসহ এক আওয়ামী লীগ নেতাকে একই এলাকা থেকে তুলে নিয়ে যায়। পরে বিকেল পাঁচটার কিছু পরে দুর্বৃত্তরা মুমূর্ষু অবস্থায় প্রার্থী দেলোয়ারকে গ্রামের বাড়ির (সিংড়ার কলম ইউনিয়নের পারসাঐল গ্রাম) সামনে ফেলে রেখে যায়। বর্তমানে তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
অভিযুক্ত লুৎফুল হাবীব উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদের শ্যালক। তিনি উপজেলার শেরকোল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের পদ ছেড়ে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন করছেন। তবে প্রার্থী অপহরণের ঘটনায় সম্পৃক্ততার অভিযোগে ইতিমধ্যে তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে আওয়ামী লীগ। একই সঙ্গে গতকাল শুক্রবার তাঁকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মাইক্রোবাস জব্দ ও একজনকে গ্রেপ্তারের পর জরুরি সংবাদ সম্মেলনের ডাক দেন পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম। সন্ধ্যা সাতটায় নিজ কার্যালয়ে তিনি সংবাদ সম্মেলনে ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলন তারিকুল ইসলাম বলেন, জব্দ করা মাইক্রোবাস (ঢাকা মেট্রো-চ-৫৬-৫৩৯৫) প্রার্থী লুৎফুল হাবীবের নির্বাচনী প্রচারপত্র, পোস্টার ও লিফলেট পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ওই প্রার্থীর প্রাইভেট কারের চালক সুজন সাহার ড্রাইভিং লাইসেন্স, গাড়ির কাগজপত্রও পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, মাইক্রোবাসটি তল্লাশি করে দুটি চায়না চাপাতি, একটি টিপ চাকু, একটি বর্মিজ কাটার, দুটি রামদা, দুটি স্টিলের পাইপ, দুটি স্ট্যাম্প ও একটি দেশি চাপাতি জব্দ করা হয়েছে।