পাঁচবারের সংসদ সদস্য মতিয়া চৌধুরী সপ্তমবার পেলেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন

‘শান্তি সমাবেশে’ বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী। ঢাকা, ২২ জুলাই
ছবি: প্রথম আলো

আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে ন্যাপ ছেড়ে যোগ দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগে। এরপর ছয়বার দলীয় মনোনয়নে নির্বাচন করে পাঁচবারই শেরপুর-২ (নকলা-নালিতাবাড়ী) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারও তাঁর ওপরেই আস্থা রেখেছে আওয়ামী লীগ। সপ্তমবারের মতো দলের প্রবীণ এই নেতা মনোনয়ন পাওয়ায় খুশি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারাও।

আরও পড়ুন

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেরপুর-২ আসনে মতিয়া চৌধুরীসহ ছয়জন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। দলীয় মনোনয়ন ফরম জমা দেওয়া অপর পাঁচ ব্যক্তি হলেন আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য ও শেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি চন্দন কুমার পাল; আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ক্রীড়া ও যুব উপকমিটির সদস্য নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব আবদুস সামাদ ফারুক; নালিতাবাড়ী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোকছেদুর রহমান; কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা উপকমিটির প্রয়াত নেতা কৃষিবিদ বদিউজ্জামানের ছেলে রাগিব হাসান এবং জাতীয় পার্টির সাবেক নেত্রী রোজী সিদ্দিকী। গত রোববার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনীত প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করে আওয়ামী লীগ। সেখানে শেরপুর-২ আসনে মতিয়া চৌধুরীর নাম ঘোষণা করা হয়।

উপজেলা আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, আগামীকাল বুধবার সকাল ১০টায় নালিতাবাড়ী পৌর শহরের স্থানীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে দলীয় নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। এরপর তিনি মনোনয়নপত্র জমা দেবেন।

পুনরায় মতিয়া চৌধুরীকে মনোনয়ন দেওয়ায় দলীয় প্রধানের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে নকলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘মতিয়া চৌধুরী দেশের ও দলের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড এবং সততার জন্য দলের সভানেত্রীর কাছে বিশ্বস্ততার জায়গা তৈরি করে নিয়েছেন। মতিয়া আপা জননেত্রী শেখ হাসিনার অত্যন্ত আস্থাভাজন।’

মতিয়া চৌধুরী ১৯৪২ সালের ৩০ জুন পিরোজপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা মহিউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা এবং মা নুরজাহান বেগম ছিলেন গৃহিণী। ১৯৬৪ সালের ১৮ জুন খ্যাতিমান সাংবাদিক বজলুর রহমানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। মতিয়া চৌধুরীর রাজনীতির হাতেখড়ি হয় ইডেন কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থায়। তিনি ১৯৬৫ সালে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি নির্বাচিত হন। পরে ১৯৬৭ সালে পূর্ব পাকিস্তান ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টিতে (ন্যাপ) যোগ দেন এবং এর কার্যকরী কমিটির সদস্য হন। মতিয়া চৌধুরী আইয়ুববিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে আলোচিত হন।

আরও পড়ুন

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, স্বামীর জন্মস্থানের সুবাদে মতিয়া চৌধুরী শেরপুর-২ আসন থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। এ আসন থেকে তিনি আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হিসেবে ছয়বার মনোনয়ন পান। ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ মোট পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এর মধ্যে দুবার কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর দায়িত্ব পালন করছেন। ২০২৩ সালে ১২ জানুয়ারি তিনি জাতীয় সংসদের উপনেতা হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন।

নালিতাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম মোস্তফা কামাল প্রথম আলোকে বলেন, মতিয়া চৌধুরীকে নামেই মানুষ বিশ্বাস করেন। তিনি কৃষকদের ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করেছেন। তাঁর সততার প্রতি দলের ও দুই উপজেলার (নকলা-নালিতাবাড়ী) মানুষের আস্থা রয়েছে। দলের সভাপতির আস্থা রয়েছে। এই বয়সেও দল তাঁর প্রতি আস্থা রাখায় দুই উপজেলার আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

আরও পড়ুন