বেইলি রোডে ভবনের আগুনে মারা গেলেন বুয়েট শিক্ষার্থী লামিসা, পুলিশ কর্মকর্তা বাবা নির্বাক

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) যন্ত্রপ্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন লামিসা ইসলাম
ছবি: সংগৃহীত

শুক্রবার দুপুর ১২টা। ফরিদপুর শহরের দক্ষিণ ঝিলটুলী মহল্লার একতলা বাড়ি স্বর্ণলতার সামনে টানানো হয়েছে লাল-নীল শামিয়ানা। এর নিচে ফ্রিজিং ভ্যানে রাখা একটি লাশ। আশপাশে অনেকটা ভিড়। প্লাস্টিকের একটি চেয়ারে বসে ছিলেন পুলিশের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) নাসিরুল ইসলাম। তিনি নিশ্চুপ। তাঁকে ঘিরে আরও অনেকেই বসে ছিলেন। তাঁরাও নিশ্চুপ।

রাজধানীর বেইলি রোডে বহুতল একটি ভবনে অগ্নিকাণ্ডে যে ৪৬ জন নিহত হয়েছেন, তাঁদের একজন নাসিরুল ইসলামের বড় মেয়ে লামিসা ইসলাম । বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) যন্ত্রপ্রকৌশল বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন লামিসা। নাসিরুল ইসলামের দুই কন্যার মধ্যে বড় ছিলেন লামিসা। ২০১৮ সালে অসুস্থতার কারণে তাঁর স্ত্রী মারা যান। এর পর থেকে দুই সন্তানকে একাই লালন করছিলেন তিনি।

আরও পড়ুন

আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে লামিসার মরদেহ নিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি লাশবাহী ফ্রিজিং ভ্যান ফরিদপুর শহরে তাঁদের বাড়িতে আসে। সেখানে আগে থেকেই পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদ ও স্বজনেরা ছিলেন। লাশ এনে রাখা হয় বাড়িসংলগ্ন খোলা জায়গায়।

বাড়ির সামনের রাস্তায় স্বজন ও সহকর্মীদের নিয়ে চুপচাপ বসেছিলেন লামিসার বাবা নাসিরুল ইসলাম। আজ দুপুর ১২টার দিকে ফরিদপুর শহরের দক্ষিণ ঝিলটুলী মহল্লায়
ছবি: প্রথম আলো

বাড়ির সামনের রাস্তায় স্বজন ও সহকর্মীদের নিয়ে বসে ছিলেন লামিসার বাবা নাসিরুল ইসলাম। তিনি এতটাই নিশ্চুপ হয়ে গেছেন, যে কারও সঙ্গে কথা বলছিলেন না। কাঁদছিলেনও না। প্রতিবেশী ও সহকর্মীরাও সবাই চুপচাপ ছিলেন।

আরও পড়ুন

দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে ফ্রিজিং ভ্যানসহ আত্মীয়স্বজনেরা জানাজার জন্য রওনা হন ফরিদপুর চকবাজার জামে মসজিদের উদ্দেশে। সেখানে জানাজা শেষে আলীপুর কবরস্থানে লামিসা ইসলামকে দাফন করা হয়।

দক্ষিণ ঝিলটুলী মহল্লার বাসিন্দা আলেয়া বেগম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওরা দুইটা বোন খুবই চুপচাপ থাকত। ওদের মা ২০১৮ সালে মারা যাওয়ার পর ওদের বাবা পরম আদরে একাই ওদের বড় করেছেন। স্বপ্ন ছিল বুয়েটে পড়াবে। সে স্বপ্নও বাস্তবায়ন হয়েছিল। কিন্তু ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস, আল্লাহ মেয়েটাকে নিয়ে গেল।’

আরও পড়ুন