গ্রেপ্তার ৩ আসামি জানালেন, ভ্যান ছিনিয়ে নিতে চালককে জুস খাইয়ে হত্যা করেন তাঁরা

ভ্যানচালক প্রহ্লাদ হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার তিনজন। সঙ্গে উদ্ধার করা ভ্যান
ছবি: প্রথম আলো

বাগেরহাটে ভ্যানচালক প্রহ্লাদ কুমার দাস ওরফে ভোলা (৪৫) হত্যার রহস্য উদ্‌ঘাটনের কথা জানিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পিবিআই বাগেরহাট জেলা কার্যালয়ের পুলিশ সুপার মো. আবদুর রহমান এ কথা জানান। প্রহ্লাদের ব্যাটারিচালিত ভ্যানটি ছিনিয়ে নিতেই তাঁকে হত্যা করা হয়েছে বলে উঠে এসেছে পিবিআইয়ের ছায়া তদন্তে। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের আজ বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

আরও পড়ুন

নিহত প্রহ্লাদ বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার সাংদিয়া গ্রামের পরিতোষ দাসের ছেলে। গত ৩০ নভেম্বর ভ্যান নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হন। এর পর থেকে তাঁর ব্যবহৃত মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও সন্ধান না মেলায় প্রহ্লাদের স্ত্রী ১ ডিসেম্বর বাগেরহাটের কচুয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এদিকে নিখোঁজের পাঁচ দিন পর হজরত খানজাহান আলী (রহ.)–এর মাজারের দিঘিতে এক ব্যক্তির লাশ পাওয়া যায়। পরে লাশটি ওই ভ্যানচালকের বলে শনাক্ত করে তাঁর পরিবার।

পিবিআই বাগেরহাট কার্যালয়ের পুলিশ পরিদর্শক এম এম মিজানুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় ৫ ডিসেম্বর বাগেরহাট সদর মডেল থানায় নিহত ব্যক্তির ভাই চঞ্চল দাস বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। পিবিআই ওই ঘটনার ছায়া তদন্ত শুরু করে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডে জড়িত এক ব্যক্তিকে শনাক্ত করে। অভিযান চালিয়ে গতকাল বুধবার রাতে ঢাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জড়িত আরও দুজনকে বাগেরহাটের চিতলমারী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। নিহত প্রহ্লাদের ভ্যানটিও উদ্ধার করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার হিজলা গ্রামের মৃত মালেক মল্লিকের ছেলে মো. ইউসুফ মল্লিক (৩৬), একই উপজেলার চিংগুরিয়া এলাকার মোশারেফ মুন্সির ছেলে মো. শামসুল হক মুন্সি (২৬) এবং কুলিয়া গ্রামের সাজ্জাদ হোসেনের ছেলে গোলাম ফারুখ চাঁদ (২৪)। এর মধ্যে ইউসুফকে ঢাকার মিরপুরের দারুস সালাম এলাকা থেকে এবং শামসুল হক মুন্সিকে চিতলমারী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁদের দেওয়া তথ্যমতে গোলাম ফারুখকে গোলাম ফারুখকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তাঁর বাড়ি থেকে ভ্যানটি উদ্ধার করা হয়।

আরও পড়ুন

পিবিআই কর্মকর্তা মিজানুর বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার ইউসুফ ও শামসুল জানান, তাঁরা ভ্যানটি ছিনতাইয়ের জন্য ৩০ নভেম্বর কচুয়া উপজেলা সাইনবোর্ড এলাকা থেকে বাগেরহাট যাওয়ার কথা বলে ভাড়া করেন। পথে চালক প্রহ্লাদের সঙ্গে সখ্য গড়েন। একপর্যায়ে মাজার মোড়ে এসে চেতনানাশক ওষুধ মেশানো জুস কৌশলে তাঁকে খাইয়ে দেন। পরে তাঁকে নিয়ে মাজারের দিঘির পাড়ে ঘুরতে থাকেন। দিঘির পূর্ব পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় প্রহ্লাদ অচেতন হয়ে পাড়েন। এ সময় ভ্যানচালক প্রহ্লাদের পকেট থেকে মুঠোফোন ও টাকা নিয়ে তাঁকে দিঘিতে ফেলে দিয়ে ভ্যান নিয়ে পালিয়ে যান ওই দুই ব্যক্তি।

আরও পড়ুন