ময়মনসিংহে হোটেলে তরুণী খুন: সঙ্গে থাকা যুবকের পরিচয় শনাক্ত

ময়মনসিংহ নগরের বড় বাজার এলাকায় অবস্থিত আবাসিক হোটেল নিরালা রেস্ট হাউস
ছবি: প্রথম আলো

ময়মনসিংহ নগরের বড় বাজার এলাকার নিরালা রেস্ট হাউস নামের সেই আবাসিক হোটেলে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) না দেখেই উঠতে দেওয়া হয়েছিল খুনের শিকার তরুণী ও তাঁর কথিত স্বামী রাকিবকে। পুলিশ বলছে, ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করায় ওই তরুণীর পরিচয় শনাক্ত করা না গেলেও সঙ্গে থাকা যুবকের পরিচয় পাওয়া গেছে। তাঁকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

গতকাল শনিবার দুপুরে ময়মনসিংহ নগরের বড় বাজার এলাকার নিরালা রেস্ট হাউসের একটি কক্ষের বাথরুম থেকে অজ্ঞতনামা এক তরুণীর (২০) গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে কোতোয়ালি মডেল থানা-পুলিশ। হোটেলের নিবন্ধন খাতায় দেওয়া ঠিকানা অনুযায়ী খোঁজ করে পুলিশ ওই তরুণীর পরিচয় শনাক্ত করতে পারেনি। যে কারণে হোটেলে দেওয়া ঠিকানাকে ভুয়া মনে করছে পুলিশ।

আরও পড়ুন

আজ রোববার দুপুরে নিরালা রেস্ট হাউসে গিয়ে কথা হয় দায়িত্বরত ব্যবস্থাপক মনিরুজ্জামান মানিকের সঙ্গে। তিনি জানান, ১৪ মার্চ দিবাগত রাত দেড়টা থেকে পৌনে দুইটার দিকে ওই তরুণী ও যুবক হোটেলে উঠেন। ওই সময় হোটেলের ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে ছিলেন মাহফুজ নামের একজন। তিনি এনআইডি দেখতে চাইলে মুঠোফোনে ছবি দেখান ওই যুবক। মুঠোফোনে ছবি দেখেই তাঁদের হোটেলের দুতলার একটি কক্ষে থাকতে দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন

মনিরুজ্জামান আরও বলেন, হোটেলের মোট ছয়টি সিসি ক্যামেরা রয়েছে। তরুণীর লাশ উদ্ধারের পর ছয়টি ক্যামেরার ফুটেজ দেখেও ওই যুবকের হোটেল কক্ষ থেকে বের হয়ে যাওয়ার শনাক্ত করতে পারেনি তাঁরা। হোটেলের প্রবেশের সময় যে পোশাক পড়েছিলেন, ওই রকম পোশাক পরে আর কাউকে হোটেল থেকে বেরিয়ে যেতে দেখা যায়নি। এতে ধারণা করা হয় পরিকল্পিতভাবেই ওই যুবক ভুয়া পরিচয় দিয়ে হোটেলে উঠে তরুণীকে হত্যা করেন।

নিরালা রেস্ট হাউস সূত্রে জানা যায়, লাশ উদ্ধারের হোটেলের মালিক মো. মূসাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছিল। পরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে আজ তিনি হোটেলে আসেননি। তাঁর ব্যবহৃত মুঠোফোন নম্বরটি বন্ধ রয়েছে।

১৪ মার্চ রাতে হোটেলের ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে থাকা মাহফুজ মুঠোফোনে বলেন, দিবাগত রাত পৌনে দুইটার দিকে তাঁরা হোটেলে উঠেন। ওই সময় যুবকের মুখে মাস্ক ছিল। মাস্ক খুলতে বললেও খোলেননি। জাতীয় পরিচয়পত্র দেখতে চাইলেও দেখাননি। পরে মুঠোফোনে জাতীয় পরিচয়পত্রের ছবি দেখান।

ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকার্ত (ওসি) শাহ কামাল আকন্দ বলেন, তরুণীকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। হত্যায় ধারলো ছুরি ব্যবহার করার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এতে ধারণা করা হচ্ছে পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। লাশের পরিচয় না পেলেও যুবককে শনাক্ত করতে পেরেছেন। তাঁকে গ্রেপ্তার করতে অভিযান চালানো হচ্ছে।