কুষ্টিয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীর ওপর নৌকার সমর্থকদের হামলা, ক্যাম্প ভাঙচুর

কুষ্টিয়ায় ঈগলের আহত কর্মী বুলবুল আহম্মেদকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। মঙ্গলবার দুপুরে কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে
ছবি: প্রথম আলো

কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী (ঈগল প্রতীক) পারভেজ আনোয়ারের সমর্থকদের ওপর হামলা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে সদর উপজেলার ঝাউদিয়া ইউনিয়নের ঝাউদিয়া বাজারে এই হামলার ঘটনা ঘটে।

নৌকার কর্মীরা এই হামলা করেছেন বলে ঈগলের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। এই আসনের নৌকার প্রার্থী টানা দুবারের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ।

হামলায় আহত বুলবুল আহম্মেদ ওরফে সাগর (২৪) নামের এক কর্মীকে কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি ঈগল প্রতীকের নির্বাচন ক্যাম্প পরিচালনার দায়িত্বে আছেন।

আরও পড়ুন

এ ছাড়া গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় কুষ্টিয়া পৌরসভার ২১ নম্বর ওয়ার্ডে ঈগলের নির্বাচনী ক্যাম্প ভেঙে সেখানে নৌকার ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সোহেল রানা এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় মো. শামীম শেখ নামের স্বতন্ত্র প্রার্থীর এক কর্মী নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ঈগলের সমর্থক বুলবুল একটি ইজিবাইকে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর জন্য ঝাউদিয়া বাজার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে যান। সেখানে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি কেরামত আলী বিশ্বাস, বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান মুন্সি মেহেদী হাসান, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফারুকুজ্জামানসহ ১০-১২ জন নৌকার ক্যাডার তাঁর ওপর অতর্কিত হামলা চালান।

আরও পড়ুন

আহত বুলবুল আহম্মেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রথমে তাঁরা এসে অটোর চাবি কেড়ে নেন। এই সময় একটি মাইক্রোবাসে আমাকে জোর করে তুলে নেন। আমি গাড়ির ভেতরে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি কেরামত আলী বিশ্বাস, বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফারুকুজ্জামানকে দেখতে পাই। গাড়ির ভেতরে মারতে মারতে আমাকে পাশের গ্রামের বৈদ্যনাথপুর শ্মশানে নিয়ে যান। সেখানেও আমাকে বাটাম দিয়ে মারধর করেন। এ সময় চেয়ারম্যান মেহেদী আমাকে হুমকি দিয়ে বলেন, “এ কথা কাউকে বললে আমরা দিনদুপুরে মানুষ খুন করি, তোকেও মেরে ফেলব।”’

ঈগলের আরেক কর্মী রাশেদ বলেন, ‘ঘটনার পর স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িকে জানালেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। উল্টো ভাবটা এমন যে আমাদেরই ধরে নিয়ে যাবে।’

আরও পড়ুন

তবে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফারুকউজ্জামান অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন রহমান বলেন, কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি। দুই পক্ষের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়েছে। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্বতন্ত্র প্রার্থী পারভেজ আনোয়ার বলেন, ‘নৌকা প্রতীকের কর্মী-সমর্থকেরা কোনো প্রকার নির্বাচনী আচরণবিধি মানছে না। উল্টো আমাদের নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর করছে এবং আমাদের কর্মীর ওপর হামলা করছে। লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমরা এসব অনিয়মের প্রতিকার চাই।’

আরও পড়ুন