আবদুল্লাহপুরে বেড়েছে পুলিশ, চলছে তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদ

যানবাহন তল্লাশির পাশাপাশি সাধারণ পথচারীদের জিজ্ঞসাবাদ করছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। আজ শুক্রবার সকালে আবদুল্লাহপুর মোড়ে
ছবি: প্রথম আলো

বিএনপির ডাকা গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে ঢাকার প্রবেশমুখ আবদুল্লাহপুর মোড়ে গতকাল বৃহস্পতিবারের তুলনায় আজ শুক্রবার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য সংখ্যা বেড়েছে। মোড়ের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ও ঢাকা-আশুলিয়া সড়কের মাথায় অবস্থান করছেন পুলিশ সদস্যরা। যানবাহন তল্লাশির পাশাপাশি সাধারণ পথচারীদের জিজ্ঞসাবাদ করছেন তাঁরা।

ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-আশুলিয়া সড়ক এসে যুক্ত হয়েছে আবদুল্লাহপুর মোড়ে। এর মধ্যে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ধরে গাজীপুর, নরসিংদী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, বৃহত্তর ময়মনসিংহের বিভিন্ন জেলাসহ আশপাশের এলাকা থেকে ঢাকায় প্রবেশ করেন মানুষ। ঢাকা-আশুলিয়া সড়ক হয়ে টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, সিরাজগঞ্জসহ রাজশাহী বিভাগের একাধিক জেলার লোকজন রাজধানীতে প্রবেশ করেন। এখানে দুটি সড়ক ঘিরেই বসেছে তল্লাশি।

আজ বেলা ১১টার দিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গত দিনের তুলনায় বেড়েছে পুলিশের সংখ্যা। আবদুল্লাহপুর মোড়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ও ঢাকা-আশুলিয়া সড়কের মাথায় অবস্থান করছেন ২০ থেকে ২৫ জন পুলিশ সদস্য। কোনো দূরপাল্লার বাস, মোটরসাইকেল বা কোনো পথচারীকে সন্দেহ হলেই তাঁরা গতিরোধ করে তল্লাশি চালাচ্ছেন। এ সময় যাত্রীরা বিরক্ত হওয়ার পাশাপাশি কিছুটা আতঙ্ক অনুভব করার কথা জানান।

আরও পড়ুন

সাভারের আশুলিয়া থেকে ঢাকার মহাখালীর দিকে যাচ্ছিলেন আকরাম হোসেন (৪৫)। একটি বাস থেকে নেমে রাস্তা পার হওয়ার জন্য হাঁটছিলেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে থাকা একটি বড় ব্যাগ থেকে গতিরোধ করে পুলিশ। পরে পুরো ব্যাগ তল্লাশি করে তাঁকে ছাড়া হয়।

যানবাহনে তল্লাশির পর চালকদের নাম–ঠিকানা লিখে রাখতে দেখা যায় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের। আজ শুক্রবার সকালে আবদুল্লাহপুরে
ছবি: প্রথম আলো

আকরাম বলছিলেন, ‘আমার ব্যাগে সব কাপড়চোপড়। আমি অনেকবার বলছি, তাও বিশ্বাস করে নাই। পরে নিজেরাই পুরা খুইল্যা দেখছে। কিন্তু কিছুই পায় নাই। অযথাই একটা হয়রানি করল।’

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের মাথায় অস্ত্রসজ্জিত হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশের দীর্ঘ লাইনের সামনে দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সাহস করছিলেন না ষাটোর্ধ্ব জুলেখা বেগম। যাত্রাপথে হঠাৎ এত পুলিশ দেখে কিছুটা স্তম্বিত তিনি। একপর্যায়ে মূল রাস্তা ছেড়ে কোনোরকম এক পাশ ধরে হেঁটে রাস্তাটুকু পার হন জুলেখা।

আরও পড়ুন

মুল রাস্তা দিয়ে হাঁটলেন না কেন—এ প্রতিবেদকের এমন প্রশ্নে জুলেখার উত্তর, ‘এতগুলো পুলিশের সামনে দিয়া কি হাঁটা যায়। যদি তারা কিছু মনে করে, কোনো ভুল ধইর‍্যা বসে হেললাইগ্যা।’ ভয় পেয়েছেন কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পুলিশ দেইখ্যা তো একটু ভয় করেই। তাও এতগুলো একসঙ্গে।’

তল্লাশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে কোনো মোটরসাইকেল আসতে দেখলেই তাদের তল্লাশি শেষে নাম–ঠিকানা, এমনকি মুঠোফোন নম্বর খাতায় লিখে রাখতে দেখা যায়। পাশাপাশি বাসে প্রবেশ করে যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে চালকের নাম–ঠিকানা লিখে রাখতে দেখা যায়।

আরও পড়ুন

জানতে চাইলে তল্লাশির নেতৃত্বে থাকা ঢাকা মহানগর পুলিশের উত্তরা বিভাগের এডিসি (অপরাধ) বদরুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা আজ শুক্রবার ভোর থেকেই তল্লাশি কার্যক্রম চালাচ্ছি। আজ গত দিনের চেয়ে পুলিশের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। এখনো পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর কিছু পাওয়া যায়নি বা কাউকে আটকও করা হয়নি।’
মানুষের হয়রানির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখানে কাউকেই হয়রানি করা হচ্ছে না। জনগণের নিরাপত্তার জন্যই এ কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে।’