যশোরে প্রথমা প্রকাশনের বইমেলা জমে উঠেছে। আজ শুক্রবার ছুটির দিনে বইমেলায় ব্যাপক ভিড় হয়। মেলার আর মাত্র দুই দিন বাকি আছে। বিশেষ ছাড়ে মেলা থেকে পছন্দের বই সংগ্রহ করতে পারছেন বইপ্রেমীরা। আগামীকাল রোববার মেলার সমাপনী দিন।
গত মঙ্গলবার বিকেলে যশোর ইনস্টিটিউট পাবলিক লাইব্রেরির পাঠকক্ষে ছয় দিনব্যাপী এই মেলার উদ্বোধন করা হয়। মেলার উদ্বোধন করেন যশোরের প্রবীণ শিক্ষাবিদ মোস্তাফিজুর রহমান। যশোরে অষ্টমবারের মতো এবার প্রথমা প্রকাশনের বইমেলা হচ্ছে। প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, কবি-লেখক, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষের পদভারে মেলাপ্রাঙ্গণ মুখর থাকছে।
অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বইয়ের প্রতি মানুষের যে ভালোবাসা বা চাহিদা রয়েছে, সেটা প্রথমার বইমেলা দেখলে বোঝা যায়। ফেসবুক-ইউটিউবে মানুষ আসক্ত হলেও বই ছাড়েনি। বই হলো জ্ঞানের ধারক ও বাহক।’
প্রতিদিন মেলায় যান এমন বইপ্রেমীদের একজন হলেন আবু শাহজামাল মোর্তজা। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রতিদিন সন্ধ্যায় বইমেলা আমাকে ভীষণ টানে। মেলায় ঘুরে ঘুরে বই দেখি এবং পছন্দের বই সংগ্রহ করি। গত চার দিনে চার হাজার টাকার বই কিনেছি। আরও দুই হাজার টাকার বই কেনার চিন্তা রয়েছে। ইতিহাস ও গবেষণাধর্মী বই বেশি কেনা হয়।’ শাহজামাল মোর্তজা জানান, এ বছর দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতির কারণে অর্থে টান পড়েছে। প্রতিবছর হাজার দশেক টাকার বই কেনা হয়। এ বছর সেখানে বই কেনার বাজেট কমাতে হচ্ছে।
প্রথমা প্রকাশনের ব্যবস্থাপক জাকির হোসেন বলেন, প্রথমা প্রকাশন ও দেশি-বিদেশি বইয়ের বিশাল সমাহার নিয়ে মেলা শুরু হয়েছে। মেলায় বিভিন্ন লেখকের আড়াই হাজার ধরনের সাত হাজারের বেশি বইয়ের সমাহার ঘটানো হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, দেশি-বিদেশি গবেষণাধর্মী বিভিন্ন লেখকের বই রয়েছে। রোববার মেলা শেষ হচ্ছে। যাঁরা এখনো তাঁদের পছন্দের বই সংগ্রহ করেননি, তাঁদের মেলা থেকে বিশেষ ছাড়ে বই কেনার আহ্বান জানান তিনি।
বইয়ের বিক্রি কেমন, তা জানতে চাইলে জাকির হোসেন বলেন, করোনা–পরবর্তী গত বছরের বইমেলায়ও দুই লাখ টাকার বই বিক্রি হয়েছে। এবারও বইয়ের বিক্রি ভালো হচ্ছে।
মেলায় প্রথমা প্রকাশনের বই ৩০ থেকে ৬০ শতাংশ এবং অন্যান্য প্রকাশনীর বই ২৫ শতাংশ ছাড়ে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া ভারতীয় বইয়ের ক্ষেত্রে এক রুপির বিপরীতে ১ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ১ টাকা ৮০ পয়সা দরে বই কেনা যাচ্ছে।
মেলায় বই কিনতে আসা কয়েকজন ক্রেতা বলেন, বই মানুষের মনোজগতে ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটায়। তাই এ প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের মনে বই পড়ার আগ্রহ সৃষ্টি করতে পরিবার থেকেও উদ্যোগ নিতে হবে। মানুষের ভেতর বই পড়ার আগ্রহ সৃষ্টির চ্যালেঞ্জ নিয়েছে প্রথমা প্রকাশন।